পাবনায় মাস্ক ব্যবহার মানুষের সংখ্যা কম

২৫ অক্টোবর, ২০২০

মাস্কবিহীন অবস্থায় অবাধে চলাফেরা করছেন পাবনার মানুষ। মাস্ক ব্যবহার কারীরা যেন মাস্কবিহীন পাবনাবাসীর কাছে একরকম অপরাধী। করোনা যেন একটা তুচ্ছ ব্যাপার তাদের কাছে। রাস্তা-ঘাটে, অফিস আদালত, হাসপাতাল, দোকানপাট, হোটেল রেস্টুরেন্স, খোলা স্থান, কাঁচাবাজার, ক্লিনিক সব স্থানেই মাস্কবিহীন মানুষের ভীড়। স্বাস্থ্য প্রশাসনের নেয়া নানা উদ্যোগ কোন কাজেই আসছে না। মাস্ক না পরায় দিনদিন এ জেলায় করোনা পরিস্থিতি মারাত্বক আকার ধারণ করতে পারে এমন ধারণা সচেতন মহলে।

রোববার(২৫ অক্টোবর) ডিসি অফিস এলাকা, জজ কোর্ট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট এলাকা, পাবনা পৌরসভা চত্বর, হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ অধিকাংশ জায়গায় দেখা যায় ১০/১৫ শতাংশ লোকের মুখে মাস্ক। অফিস আদালতের লোকজনরসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছে মাস্ক ব্যাবহার যেন একটা তুচ্ছ ব্যাপার। 

পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ গেট থেকে আলিয়া মাদরাসা, শহর টু বাসটার্মিনাল, অনন্ত মোড়, বড় বাজার, সদর হাসপাতাল রোড, পৈলানপুর টু চাঁদমারিসহ বেশ কয়েকটি স্থান ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ রিক্সা, অটোরিক্সা, ব্যাটারী চালিতযান, সবুজ সিএনজি, মোটর সাইকেল যাত্রী ও আরোহীদের মুখে মাস্ক নেই। অনেক পথচারী হাঁটছেন, অথচ তাদের মুখে কোন মাস্ক নেই।

কর্তব্যরত কয়েকজন নার্সের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাস্ক পরে না থাকলে কোন সেবা নেই। যখন রোগীর কাছে যান; তখন তারা মাস্ক পরেন। অথচ আমরা সরে আসলেই তারা মাস্ক খুলে ফেলেন। 

চায়ের দোকানগুলোতে কোন ধরণের মাস্ক ব্যবহার করছেন না দোকানে বসা লোকজন। তাদের অভিমত, করোনা চলে গেছে। আর করোনা আমাদের কিছু করতে পারবে না। মাস্ক না পরলেও আমরা সচেতন এমন দাবী তাদের।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলাপকালে পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবাল বলেন,‘প্রত্যেক মানুষকে তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়ার জন্য নানা ভাবে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে প্রচারপ্রচারণার পাশাপাশি অনুরোধ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, মাস্ক পড়া, হাত ধোয়া আর শারীরিক দুরত্ব বজায় রেখে চললে করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিনের মতো কাজ করবে। তিনি আরও বলেন, আপনারা আমরা সবাই দেখছি, মানুষ তাদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনছেন। তার দাবী, এতো প্রচার প্রচারণার মাস্ক পড়ার হার শতকরা একেবারেই নিন্ম পর্যায়ে রয়েছে।’  

তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দাবী, যানবাহনে চলাচলে স্টাফসহ যাত্রীদের,‘ক্রেতা-বিক্রেতা এবং পথচারী আর অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী আর সেবাগ্রহিতা প্রত্যেকের মাস্ক পরাটা বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন করোনাকালীন সময়ে। তাহলেই আমরা নিরাপদ থাকতে পারি।’

মাস্ক ব্যবহারের অনীহা সম্পর্কে আর কোন নতুন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মাসুদ আলম মোবাইল কোর্ট ঘন ঘন পরিচালনা হওয়া দরকার উল্লেখ করে বলেন, “পুলিশ সুপারের সাথে এব্যাপারে আলাপ আলোচনা করা হবে। সচেতনতার জন্য আরো উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।”  জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বললেন,“ মানুষ যদি নিজেদের নিয়ে না ভাবেন; তাহলে বার বার বলেও কাজ হয় না। সব ধরণের ব্যবস্থায় তো ব্যবহার করা হয়েছে। এখন আবার নতুন করে ভাবতে হবে।”