বিদেশ যাওয়ার অনুমতি পাননি খালেদা জিয়া: বিএনপি নেতাদের ক্ষোভ

১০ মে, ২০২১

সাজাপ্রাপ্ত আসামির বিদেশ যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ মতামত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

রোববার বিকেলে খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেয়ার বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর সচিবালয়ে তার নিজ দফতরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ তথ্য জানান।

এদিকে খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি না দেওয়া ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপির নেতারা।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেন,  উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে তার (খালেদা জিয়া) পরিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। কিন্তু সরকার সেই আবেদনে সাড়া না দিয়ে ভিত্তিহীন অজুহাত দাঁড় করিয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিষয়ে সরকারের এই সিদ্ধান্তের কোনো ভিত্তি নেই। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সাজা মওকুফ করে দেয়ার নজির আছে। সরকার নজির সৃষ্টি করেছে অসংখ্য। রাজনৈতিক কারণে তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর অবদান অস্বীকার করা যায় না। তিনি একজন রাজনৈতিক নেতা। তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। এদেশে তার অবদান অস্বীকার করার নয়। কিন্তু তার চিকিৎসার জন্য আইনের দোয়াই দিয়ে বিদেশে যেতে দেয়া হচ্ছে না। তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে বন্দী জীবনযাপন করছেন।

এদিকে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি প্রবীণ আইনবিদ খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার কোথাও লেখা নেই যে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে পারবে না। বরং সরকার ইচ্ছা করলে নির্বাহী আদেশে এমন ক্ষমতা দেয়া হয়েছে যে সরকার নির্বাহী আদেশে যেকোনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সাজা মওকুফ করতে পারে। শর্তহীনভাবে বা শর্ত দিয়ে যেকোনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে মুক্তি দিতে পারে। এক্ষেত্রে সরকার যদি শর্ত দিত যে তিনি বিদেশে যাবেন এবং চিকিৎসা শেষে দেশে চলে আসতে হবে। এছাড়া আইনে এমন কোনো বিধান নেই যে কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি চিকিসার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন না।

খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, এক্ষেত্রে সুপ্রিমকোর্টে ডিসিশন আছে। দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিদেশে যেতে পারেন। অতীতে সাত বছরের সাজা মামলায় রহমত সাহেবকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে।

খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অত্যন্ত অমানবিক। এবং সরকারকে এই দায়ভার নেয়া উচিৎ হবে না। কেন না যদি কোনো অঘটন ঘটে তা হলে তার সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব সরকারকে বহন করতে হবে।

খন্দকার মাহবুব হোসেন আরো বলেন, সরকারকে মনে রাখতে হবে, আইনকে শুধু কঠোর না মানবিকভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে। ফৌজদারি কার্যবিধি বা দণ্ডবিধিতে বিশেষ কোনো কারণ নেই যে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দেয়াটা সম্পূর্ণ অমানবিক। আমি আবারো বলছি, এর দায় দায়িত্ব সরকারের গ্রহণ করা ঠিক হবে না। যদি চিকিৎসার অভাবে কোনো অঘটন ঘটে তার সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব সরকারকে বহন করতে হবে। জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।