নাটোর থেকে পাবনায় প্রবেশে বিধিনিষেধ, সীমানায় চেকপোস্ট

০৪ জুন, ২০২১

উত্তরাঞ্চলের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর জেলাসমূহে কোভিড-১৯ সংক্রমণ অস্বভাবিকভাবে বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে পাবনা জেলা সংলগ্ন নাটোর জেলায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় পাবনা প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে। কারণ নাটোর জেলাসহ উত্তরাঞ্চলের জেলাসমূহ থেকে বিপুল সংখ্যা লোক ঈশ্বরদী পাওয়ার প্লান্টে কর্মরত আছেন। তাদেরকে নাটোর হয়ে এই প্রকল্পে আসতে হয়। এজন্য নাটোর থেকে পাবনায় প্রবেশে বিধিনিষেধসহ সীমানায় চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে।

পার্শ্ববর্তী নাটোর জেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় পাবনার ঈশ্বরদী ও চাটমোহর উপজেলায় দুই জেলার সীমানা লাগোয়া রাস্তাগুলোতে চেকপোস্ট বসানোর সিদ্ধান্ত হয়। বৃহস্পতিবার দুই উপজেলা প্রশাসন পৃথক বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নেয়ার তা শুক্রবার থেকে কার্যকর শুরু হয়েছে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত দুই জেলায় চলাচলে বিধিনিষেধ থাকবে। নাটোর থেকে ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আসা শ্রমিকদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে আসতে হবে বলেও ঘোষণা করা হয়েছে।

চাটমোহর উপজেলা প্রশাসনের সভাকক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মোঃ সৈকত ইসলামের সভাপতিত্বে জরুরি সভা হয়। সভায় চাটমোহরের সঙ্গে নাটোর জেলার সীমানা লাগোয়া ছাইকোলা, হরিপুর ও ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের প্রবেশপথ এবং সিরাজগঞ্জ জেলার সীমানা লাগোয়া হান্ডিয়াল ইউনিয়নের প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।

সভায় ইউএনও মোঃ সৈকত ইসলাম বলেন, উপজেলায় আপাতত লকডাউনের কোনো প্রয়োজন নেই। তবে নাটোর জেলায় করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় চাটমোহরের বাসিন্দাদের নিরাপদ রাখতে দুই জেলার বাসিন্দাদের অবাধ চলাচল বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হলো। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত দুই জেলায় চলাচলে বিধিনিষেধ থাকবে।

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পাবনার সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) সজীব শাহরীন, চাটমোহর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মুতালিবসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগণ।

এদিকে এর আগেই নাটোরের সীমানা লাগোয়া পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা প্রশাসনও দুই জেলার অবাধ চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সই সঙ্গে উপজেলার সারা, পাবনা-লালপুর সড়ক, পাবনা-নাটোর সড়ক ও রেলজংশন সড়কে চেকপোস্ট বসানো হয়।

ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পি এম ইমরুল কায়েস বলেন, পার্শ্ববর্তী জেলায় করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পেলেও ঈশ্বরদীতে এখনো করোনার তেমন বিস্তার দেখা যায়নি। তাই সতর্কতামূলক কিছু সড়কে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রল্পসংশ্লিষ্ট লোকজনকে করোনামুক্ত রাখতে প্রকল্পে কাজ করা নাটোরের শ্রমিকদের ঈশ্বরদীতে প্রবেশের ক্ষেত্রে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। করোনার প্রকোপ না কমা পর্যন্ত বিধিনিষেধসহ চেকপোস্ট থাকবে।

এদিকে পাবনা সিভিল সার্জন ডা: মনিসর চৌধুরী বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সাথে এক ওরিয়েন্টেশনে বলেছেন,‘করোনার অবস্থা খুবই ভয়াবহ। তাই পাবনাবাসীকে অত্যন্ত সতর্ক হতে হবে। তা না হলে দুঃখের শেষ থাকবে না।’