ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির দাবিতে প্রধান ফটকে তালা দিনমজুরদের

০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

চাকরির দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রধান ফটকে তালা দেন দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীরা। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে তিনটায় তারা তালা দিয়ে দুই ঘণ্টা ফটক আটকে রাখেন। ফলে দুপুর সাড়ে তিনিটার নির্ধারিত বাস ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে পারেনি। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় তারা উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে উপাচার্যের পিএসকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

 

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে ১০৬ জন কর্মচারী কাজ করেন। তাদের বেশিরভাগই সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। এসব কর্মচারীরা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ শুরু করলেও পরবর্তীতে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি করে আসছেন। পরে তারা অস্থায়ী চাকুরিজীবী পরিষদ গঠন করে এই ব্যানারে চাকরির দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দুপুরে তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন।

জানা যায়, গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫৪তম সিন্ডিকেট সভায় ২০১৮ সালে অনুমোদন হলেও পরবর্তীতে নিয়োগ বাতিল হওয়া এক শিক্ষককে চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিরোধী রাজনৈতিক দল সংশ্লিতার অভিযোগ তুলে তার নিয়োগের প্রতিবাদ জানাতে ক্যাম্পাসে জড়ো হন কর্মচারীরা। তারা সিন্ডিকেটে দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নিয়ে ২০১৮ সালের ওই শিক্ষকের নিয়োগ দেওয়ায় ক্ষোভ জানান ও তাদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি জানান।

প্রথমে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আতাউর রহমানের কার্যালয়ে গিয়ে তাকে দাপ্তরিক কাজ বন্ধ করতে চাপ দেন। পরে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে এসে অবস্থান নিয়ে হট্টগোল শুরু করেন ও বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকেন। উপাচার্য কার্যালয়ে না থাকায় তারা উপাচার্যের পিএস আইয়ুব আলীকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে দুই ঘণ্টা পর সহকারী প্রক্টররা এসে উপাচার্যের পিএসকে কার্যালয় থেকে উদ্ধার করেন। এরপর বেলা সাড়ে তিনটায় দিনমজুররা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে তালা দেন। এতে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের বাসগুলো আটকে পড়ায় তাঁরা চরম দূর্ভোগে পড়েন। পরবর্তীতে দুই ঘণ্টা পর কর্মসূচি স্থগিত করে ফটকের তালা খুলে দেওয়া হয়।

অস্থায়ী চাকুরিজীবী পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান টিটো বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দপ্তরে কাজ করে আসছি। কিন্তু আমাদের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত না নিয়ে ২০১৮ সালে বাতিল হওয়া নিয়োগ চূড়ান্ত করেছে।  আমরা এর প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমাদের দাবি বিভিন্ন অফিসে যারা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করছে তাদেরকে স্থায়ীভাবে চাকরির ব্যবস্থা কর‍তে হবে।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনে তাদেরকে দৈনিক ভিত্তিতে কাজ দেওয়া হয়েছিল। তাদেরকে সেভাবেই মজুরি দেওয়া হয়েছে। স্থায়ী চাকরির একটা নিয়ম-কানুন আছে। সার্কুলার হবে, সেখানে আবেদন করবে। তখন হয়তো আমরা কিছু বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে। কিন্তু এভাবে তো আইনের বাইরে গিয়ে নিয়োগ দেওয়া যায়না। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। নিয়ম অনুযায়ী যেটা হবে, সেটাই করবো।