নির্যাতনের ছবি পাঠিয়ে মুক্তিপণ আদায়

২৪ জুন, ২০২২

প্রবাসী বাংলাদেশিদের অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে আটক রেখে পরিবারের কাছ মুক্তিপণ আদায় করে আসছে একটি চক্র। ইরাকে অবস্থানরত কিছু প্রবাসী বাংলাদেশি, পাকিস্তানি ও ইরাকি এই চক্রের সদস্য। মুক্তিপণ আদায়ে চক্রটি প্রবাসীদের অমানবিক নির্যাতন করে। তাদের নির্যাতনে অনেক প্রবাসীর জীবনাবসান হয়েছে। ইমু, ফোনকল, হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদির মাধ্যমে দেশে থাকা পরিবারের সদস্যদের কাছে নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে।

টাকা না দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এরপর নগদ, বিকাশ, রকেটসহ বিভিন্ন মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় মোটা অঙ্কের টাকা। এই চক্রের দুই সদস্যকে রাজধানীর মতিঝিল ও নারায়ণগঞ্জের জালকুড়ি বাজার থেকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)।

সিটিটিসি সূত্র জানায়, ১৪ জুন ইরাকের বাগদাদের আবু জাফর আল মনসুর শহর থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রবাসী আপেল আলী ও গাইবান্ধার শের আলী নামের দুই প্রবাসীকে অপহরণ করা হয়। তাদের অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে নির্যাতন করতে থাকে চক্রটি। মুক্তিপণ আদায়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সাত লাখ টাকা করে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। না হলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরিবার তাদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে এক লাখ টাকা করে পাঠায়। কিন্তু আটকদের মুক্তি না দিয়ে নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। আরও পাঁচ লাখ টাকা করে অথবা পাঁচ হাজার ডলার দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। এ বিষয়টি জানিয়ে পরিবারটি শিবগঞ্জ থানায় সাধারণ ডাইরি করে। সহযোগিতা চায় ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনালক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের।

তখন সিটিটিসির ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ অভিযান চালিয়ে চক্রের বাংলাদেশে টাকা সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা সদস্য ইমরান হোসেনকে (২৭) ঢাকার মতিঝিল এবং ইমরানের টাকা সংগ্রহের বিকাশ এজেন্ট সহযোগী আলমগীর হোসনকে (৩০) নারায়ণগঞ্জের জালকুড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার ইমরান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, অপহরণকারী চক্রের হোতা ইরাকে অবস্থান করা জনৈক শফিকুলের হয়ে সে কাজ করে। বাংলাদেশ থেকে অপহরণের টাকা সংগ্রহের জন্য শফিকুলকে বিকাশ-নগদের নম্বর সরবরাহ করে সে। সিটিটিসি সূত্র জানায়, ইরাকের এই অপহরণ চক্রে রয়েছে চাঁদপুরের শফিক, ব্রাক্ষাণবাড়িয়ার নাহিদ, রাজবাড়ীর শিহাবসহ মাহফুজ, জাহাঙ্গীরসহ বেশ কয়েকজন।