দুই মাসে সীমান্ত দিয়ে দেশে প্রবেশ করেছে ৪৪৫ জন

০২ জানুয়ারী, ২০২০

বিদায়ী বছরে (২০১৯) ভারত থেকে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে আসা হাজারখানেক নাগরিককে আটক করা হয়েছে; এর মধ্যে দেশটির নাগরিকত্ব আইন সংশোধন হওয়ার পর নভেম্বর-ডিসেম্বর দুই মাসে এসেছেন ৪৪৫ জন বাংলাদেশী নাগরিক।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পিলখানায় বিজিবি সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বর্ডার গার্ডার বাংলাদেশের(বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম। ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) ও আসামের এনআরসি নিয়ে বিজিবি উদ্বিগ্ন নয় বলেও জানান তিনি।

গত ২৫-৩০ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-বিএসএফ’র মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকের বিষয় নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন বিজিবির ডিজি।

তিনি বলেন, সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে আমাদের দায়িত্ব, অবৈধভাবে কেউ সীমান্ত যাতে অতিক্রম করতে না পারে তা নিশ্চিত করা। এটি আমাদের রুটিন দায়িত্ব। এনআরসি (ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেনস) বা সিএএ (সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট) ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সেটা নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কোনো কারণ নেই।

বিজিবি প্রধানের দাবি, ফেরত আসা সবাই বাংলাদেশী নাগরিক, যারা বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছিলেন; এদের ফেরত আসার সঙ্গে ভারতের নাগরিকপঞ্জি বা নাগরিকত্ব আইনের কোনো সম্পর্ক নেই।

গত অগাস্টে ভারতের আসামের চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি প্রকাশ হলে দেখা যায়, রাজ্যটির বাসিন্দা ১৯ লাখ মানুষের নাম সেখানে স্থান পায়নি। বাদ পড়াদের ‘অবৈধ বাংলাদেশী’হিসেবে চিহ্নিত করে ভারত থেকে বের করে দেয়া হবে বলে আলোচনা ছিল ভারতীয় গণমাধ্যমে। এই পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের ঘটনায় মানুষজনের আটক হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

আসামে নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি নিয়ে বিতর্কের পর ভারত সরকার ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন (সিএএ) করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সি শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ সুগম করে।

এরপর থেকেই সহিংস বিক্ষোভ চলছে দেশটির বিভিন্ন অংশে। ওই অস্থিরতার মধ্যে ডিসেম্বরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফর বাতিল করা হয়।

তবে এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে ভারতের পক্ষ থেকে বরাবরই আশ্বস্ত করে বলা হয়েছে, এগুলো একান্তই তাদের নিজস্ব বিষয়, এ নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই।

বিদায়ী বছরে মোট কতজন অনুপ্রেবশকারী আটক হয়েছে জানতে চাইলে বিজিবিপ্রধান বলেন, ‘কোনো অনুপ্রবেশকারীকে ঢুকতে দেয়া হয় না, আমরা দিই না।’

তিনি বলেন, গত এক বছরে তিনজন পাচারকারীসহ প্রায় এক হাজার জনকে আটক করা হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে খোঁজ-খবর নিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিশ্চিত হওয়ার পর তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তারা সবাই বাংলাদেশী এবং অধিকাংশই ভারতে কাজের সন্ধানে গিয়েছিলেন বলে জানান বিজিবি প্রধান।মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে এনআরসি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানান তিনি।