দুই বোনকে হত্যার দায়ে যুবকের ফাঁসির আদেশ

০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

রংপুর নগরীর গণেশপুর এলাকা দুই বোনকে হত্যার দায়ে এক যুবকের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড এবং একলাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালতের বিচারক। এসময় অপর এক আসামিকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোস্তফা কামাল এ রায় ঘোষণা করেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত হলেন নগরীর বাবুখা এলাকার এমদাদুল হকের ছেলে মাহফুজার রহমান রিফাত (২২)। সাত বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আরিফুল ইসলাম রংপুর সদর উপজেলার শাহাবাজপুর এলাকার মহবুল ইসলামের পুত্র। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিল। 

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে বাড়িতে কেউ না থাকায় গণেশপুর এলাকার মমিনুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার মীম (১৭) তার চাচাতো বোন জান্নাতুল মাওয়াাকে (১৪) নিজের কাছে থাকার জন্য নিয়ে আসেন। প্রেমের সম্পর্কের জেরে ওই রাতে সুমাইয়া আক্তার মীমের বাড়িতে যান নগরীর মুলাটোল মদিনাতুল উলুম কামিল (এমএ) মাদ্রাসার আলিম প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রিফাত। এসময় মীমের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে রিফাত। পরে দুজনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হলে মীমকে হত্যা করেন রিফাত। ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ঘরের সিলিং ফ্যানে ওড়না দিয়ে মরদেহ ঝুঁলিয়ে রেখে আত্মহত্যার  নাটক সাজানোর চেষ্টা করে রিফাত। এসময় মীমের চাচাত বোন জান্নাতুল মাওয়া ঘটনা টের পেয়ে গেলে তাকেও শ্বাসরোধে হত্যার পর আয়নার ভাঙা কাচ দিয়ে গলায় আঘাত করে মেঝেতে ফেলে পালিয়ে যান রিফাত। পরদিন ১৮ সেপ্টেম্বর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুই বোনের লাশ উদ্ধার করে। পরদিন  কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন মীমের বাবা মমিনুল ইসলাম। ২০ সেপ্টেম্বর রিফাতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রিফাত আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করেন। তদন্ত শেষে রিফাত ও আরিফের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মজনু মিয়াা ও আল-আমিন। ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করা হয়।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি খন্দকার রফিক হাসনাইন বলেন, এ মামলার আসামি মাহফুজার রহমান রিফাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর আসামি আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ মামলার আলামত নিজ দখলে রেখে এবং প্রধান আসামিকে আলামত গোপনে সহযোগীতার করার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় সাত বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।