রাশিয়ার বিরুদ্ধে বড় সামরিক সাফল্যের দাবি ইউক্রেনের

২০ নভেম্বর, ২০২৩

রাশিয়ার হামলার প্রায় ২০ মাস পর আরও কিছু অধিকৃত এলাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। এমন সাফল্যের স্বার্থে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সামরিক বাহিনীতে দ্রুত পরিবর্তনের উপর জোর দিচ্ছেন। এদিকে, ইউক্রেনের সামরিক সাফল্যের দাবির বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি রাশিয়া।

 

রোববার (১৯ নভেম্বর) ইউক্রেনের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এক ধাক্কায় প্রায় তিন থেকে আট কিলোমিটার এলাকা দখলমুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। সেই অভিযানে দনিপ্রো নদীর তীরে রুশ সৈন্যরা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।

অবশ্য ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, রাশিয়া ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গত বছরের নভেম্বর মাসে দনিপ্রোর পশ্চিম তীর থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল রাশিয়া।

জার্মান বার্তা সংস্থা ডয়েচে ভেলে বলছে, এমন সাফল্য ধরে রাখতে পারলে ইউক্রেন দক্ষিণ দিকেও অগ্রসর হতে পারে। তবে তার জন্য আরও সৈন্য ও সামরিক সরঞ্জামের প্রয়োজন হবে বলে মনে করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা। আসন্ন শীতকালে এমন প্রচেষ্টা আদৌ সম্ভব কি না, সে বিষয়েও সংশয় রয়েছে।

 

এদিকে, গত সপ্তাহের শেষে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় হামলার চেষ্টা চালিয়েছে উভয় দেশেই। তবে দুই পক্ষই বেশিরভাগ হামলা বানচাল করার দাবি করছে।

মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবইয়ানিন বলেন, রোববার (১৯ নভেম্বর) ভোরে শহরের উপকণ্ঠে একটি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে। ইউক্রেন জানিয়েছে, ১৫ থেকে ২০টি রুশ ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে। অন্যদিকে, ৩১টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করার দাবি করছে রাশিয়া।

 

এদিকে কিয়েভের আশঙ্কা, গত বছরের শীতকালের মতো এবারও রাশিয়া ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর উপর জোরালো হামলা চালাবে। শনিবার রাতে প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া বিদ্যুৎ ও উত্তাপ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটাতে হামলা বাড়াতে পারে। তিনি যাবতীয় সমস্যা ও অবসাদ সত্ত্বেও ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে শতভাগ সক্রিয় থাকার ডাক দেন।

রোববার জেলেনস্কি সেনাবাহিনীর কাঠামোয় দ্রুত পরিবর্তন আনার দাবি জানিয়েছেন। এরই মধ্যে তিনি সেনাবাহিনীর মেডিকেল ইউনিটের কমান্ডারকে বরখাস্ত করেছেন।

 

প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভের সঙ্গে বৈঠকের পর এই ঘোষণা দেন জেলেনস্কি। রাতের ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, যুদ্ধের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করার সময় আমাদের হাতে নেই, তাই খুব দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে।

রাশিয়ার হাত থেকে অধিকৃত এলাকা উদ্ধার করার লক্ষ্যে ইউক্রেন এখনো তেমন সাফল্য পায় নি। অন্যদিকে, রাশিয়াও নতুন করে কোনো এলাকা দখল করতে পারে নি। ফলে দেশে-বিদেশে ইউক্রেনের ‘পাল্টা সামরিক অভিযান’ নিয়ে অনেক তর্কবিতর্ক চলছে। অনেকে আবার বলছেন, অধিকৃত অঞ্চলগুলো উদ্ধারে সাফল্য না আসায় ইউক্রেনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন ও সহায়তা কমে যাচ্ছে।