নৌকার পক্ষে বৈঠক করায় ৩৫ শিক্ষককে নির্বাচনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি

২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩

মাদারীপুর-৩ (কালকিনি-ডাসার ও সদরের একাংশ) আসনে ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পাওয়া শিক্ষকদের নিয়ে নৌকার পক্ষে বৈঠক করায় ৩৫ জন শিক্ষককে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সোমবার সকাল ৯টার দিকে মাদারীপুর-২ (রাজৈর ও সদরের একাংশ) আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সংসদ সদস্য শাজাহান খানের নিজ বাসভবনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় সদর উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যানরাও উপস্থিত ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই সভার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ৩ মিনিট ৩ সেকেন্ডের ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, মাদারীপুর-৩ (কালকিনি-ডাসার ও সদরের একাংশ) আসনে ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পাওয়া শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের ছোট ভাই ওবায়দুর রহমান খান বক্তব্য দিচ্ছেন। পাশে বসা ছিলেন শাজাহান খান নিজেই। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন শিক্ষক বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে সভার কথা বলে উপজেলা চেয়ারম্যান হঠাৎ আমাদেরকে তাদের বাসায় ডেকেছে। তিনি আমাদের মাদারীপুর সদর উপজেলা শিক্ষক সমাজের সভাপতি। সভাটি হওয়ার কথা ছিল উপজেলা পরিষদে। কিন্তু সেটা না হয়ে এমপি (শাজাহান খান) মহোদয়ের বাসায় মিটিং হয়েছে। 
এই বিষয়ে মাদারীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের সমর্থক ও কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান শাহিন বলেন, মাদারীপুর-২ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাজাহান খান তার নির্বাচনি এলাকার পছন্দের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রিজাইডিং ও পোলিং এজেন্ট করার অপচেষ্টা করছে। যেহেতু সদর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন আমাদের মাদারীপুর-৩ আসনের মধ্যে পড়েছে। তাই সে সেখানে নিজের প্রভাব বিস্তার করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। আমরা ইতোমধ্যে শাজাহান খানের নির্বাচনি এলাকার কোন লোককে প্রিসাইডিং ও পোলিং এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ করা যাতে না হয়, সেই জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আর ২৬ ডিসেম্বর শাজাহান খানের বাসায় যে সকল শিক্ষকদের নিয়ে মিটিং করেছে, তারা সবাই শাজাহান খানের কর্মী। তারা নির্বাচনে কোন দায়িত্ব পালন করলে সেখানে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করবে। তাই তাদেরসহ আরো যারা আছে, সবাইকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে অন্য কোথাও থেকে পোলিং ও প্রিজাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হলে আশা করি নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে।

জেলা নির্বাচন অফিসার আহমদ আলী জানান, বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তার নজরে আসার সাথেই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অবগত করা হয়েছে এবং আগামী ২ দিনের মধ্যে তদন্ত করে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একই সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।