এক ম্যাচ হাতে রেখেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজ জয়

২৬ মে, ২০২৪

বিস্ফোরক ও আগ্রাসী এক দল ব্যাটসম্যানে ঠাসা, পেশির জোরে যারা তাণ্ডব চালান। সেই দলেই একটু ব্যতিক্রম রোস্টন চেইস। উত্তাল সমুদ্রে মিশে যাওয়া নিস্তরঙ্গ এক নদী যেন তিনি। তবে চেইসও যে নিজের মতো করে ঝড় তুলতে জানেন, সেটিই দেখালেন এবার। ব্যাট হাতে তিনি উপহার দিলেন দারুণ এক ইনিংস, বল হাতেও কার্যকর। সঙ্গে অন্যদের পারফরম্যান্স মিলিয়ে টানা দ্বিতীয় জয়ে সিরিজ জয় নিশ্চিত করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৬ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ বাকি রেখে সিরিজ জিতে নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জ্যামাইকায় শনিবার (২৫ মে) ক্যারিবিয়ানদের ২০৭ রান তাড়ায় প্রোটিয়ারা থমকে যায় ১৯১ রানে। এই ম্যাচের আগে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে চেইসের স্ট্রাইক রেট ছিল ১১০। এ দিন তিনি অপরাজিত থাকেন ৩৮ বলে ৬৭ রান করে। পরে বোলিংয়ে চার ওভারে ২৬ রান দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি উইকেট নিয়ে তিনিই ম্যাচের সেরা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টি দলে নিয়মিত হতে পারেননি তিনি কখনোই। তার পরও তাকে এবার বিশ্বকাপের দলে রাখা হয়েছে। বিশ্বকাপের আগে নিজের উপযোগীতা দেখালেন ৩২ বছর বয়সী অলরাউন্ডার। আগের ম্যাচে নবম ওভারেই একশ ছোঁয়ার পর শেষটায় গিয়ে খাবি খেয়েছিল ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং। এই ম্যাচে শুরুটা ভালো করার পর শেষটা হয় আরও ভালো।

স্যাবাইনা পার্কের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে ক্যারিবিয়ানরা। লুঙ্গি এনগিডির প্রথম ওভারে ছক্কা মেরে শুরু করলেও জনসন চার্লস ফিরে যান ৭ রানেই। তবে আগের ম্যাচে ভালো জুটি গড়া ব্র্যান্ডন কিং ও কাইল মেয়ার্স সচল রাখেন রানের গতি। দুইজনের কেউই অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি। তিন ছক্কায় ২২ বলে ৩৬ করে বিদায় নেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক কিং। তিন ছক্কায় ১৬ বলে ৩২ করেন মেয়ার্স।

এরপর দলকে এগিয়ে নেন চেইস। আন্দ্রে ফ্লেচারের (১৮ বলে ২৯) সঙ্গে ৩৬ বলে ৫৬ রানের জুটি গড়েন তিনি। পরে রোমারিও শেফার্ডের সঙ্গে বিধ্বংসী জুটিতে আসে ২৫ বলে ৬৩ রান। তিন ছক্কায় ১৩ বলে ২৬ করেন শেফার্ড। ৩০ বলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ফিফটি ছুঁয়ে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত রয়ে যান চেইস। শেষ ৬ ওভারে ৮০ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

রান তাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা হয় দুর্দান্ত। ৫ ওভারেই ৮১ রান তুলে ফেলেন কুইন্টন ডি কক ও রিজা হেনড্রিকস। তবে এই জুটি ভাঙার পর আস্তে আস্তে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে তারা। চারটি করে চার ও ছক্কায় ১৭ বলে ৪১ রান করা ডি কককে ফেরান আকিল হোসেন। পরের ওভারে চেইস বোল্ড করে দেন ১৮ বলে ৩৪ করা হেনড্রিকসকে। এরপর বাঁহাতি স্পিনার গুডাকেশি মোটির দারুণ বোলিংয়ের জবাব দিতে পারেনি প্রোটিয়ারা। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক রাসি ফন ডার ডাসেন কিছুটা চেষ্টা করলেও আউট হয়ে যান ২২ বলে ৩০ করে। এরপর আর লড়াই জমেনি সেভাবে। নিজের টানা তিন ওভারে উইকেট নিয়ে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন মোটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ২০৭/৭ (কিং ৩৬, চার্লস ৭ মেয়ার্স ৩২, চেইস ৬৭*, ফ্লেচার ২৯, শেফার্ড ২৬, অ্যালেন ০, আকিল ০, মোটি ২*; এনগিডি ৪-০-৪১-২, ফোরটান ২-০-২১-১, নরকিয়া ৪-০-৪৭-০, পিটার ৪-০-৩২-২, ফেলুকোয়াইয়ো ৩-০-৫১-২, মুল্ডার ১-০-১৪-০)।

দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৯১/৭ (হেনড্রিকস ৩৪, ডি কক ৪১, রিকলটন ১৯, ব্রিটস্কে ১২, ফন ডাসেন ৩০, ফেলুককোয়াইয়ো ৩, মুল্ডার ৯, ফোরটান ৯*, পিটার ১০*; মেয়ার্স ১-০-৯-০, চেইস ৪-০-২৬-১, ম্যাককয় ২-০-৩২-০, শামার ১-০-২১-০, আকিল ৩-০-৪৫-১, মোটি ৪-০-২২-৩, শেফার্ড ৪-০-২৩-১, অ্যালেন ১-০-৫-০)।

ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৬ রানে জয়ী।

সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২-০তে এগিয়ে।

ম্যান অব দা ম্যাচ: রোস্টন চেইস।