দাপুটে জয়ে প্রোটিয়াদের হোয়াইটওয়াশ করল উইন্ডিজ

২৭ মে, ২০২৪

সিরিজ জয় নিশ্চিত হয়েছিল আগেই। শেষ ম্যাচ থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চাওয়া ছিল কিছু। জয়ের ধারা ধরে রাখা তো বটেই, বিশ্বকাপের আগে জনসন চার্লস ও শামার জোসেফদের ছন্দে ফেরার অপেক্ষাতেও ছিল তারা। জোসেফ দারুণ বোলিং করলেন, চার্লসের ব্যাটে দেখা গেল তাণ্ডব। ক্যারিবিয়ানদের সিরিজ জয় পূর্ণতা পেল দক্ষিণ আফ্রিকাকে হোয়াইটওয়াশ করে। তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৮ উইকেটে বিধ্বস্ত করে তিন ম্যাচের সিরিজের সবকটি ম্যাচ জিতে নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

জ্যামাইকায় রবিবার (২৬ মে) প্রোটিয়াদের ১৬৩ রানে আটকে রাখেন ক্যারিবিয়ান বোলাররা। আগের ম্যাচে এক ওভারেই ২১ রান হজম করা পেসার শামার জোসেফ এবার চার ওভারে ২৬ রান দিয়ে নেন দুই উইকেট। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা গুডাকেশ মোটিরও প্রাপ্তি দুই উইকেট। জেসন হোল্ডারের চোটে শেষ মুহূর্তে বিশ্বকাপ দলে ঢুকে যাওয়া পেসার ওবেড ম্যাককয় একটু খরুচে হলেও উইকেট শিকার করেন তিনটি।

রান তাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে জিতে যায় ৩৭ বল বাকি রেখেই। ৯ চার ও ৫ ছক্কায় মাত্র ২৬ বলে ৬৯ রানের ইনিংস খেলেছেন চার্লস। বিশ্বকাপের আগে তার ফর্মে ফেরা দারুণ জরুরি ছিল দলের জন্য। ১০ ম্যাচ পর ফিফটি করে দলের দুর্ভাবনা কমিয়েছেন এই ওপেনার।

স্যাবাইনা পার্কে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা শুরুটাই ভালো করতে পারেনি। আগের ম্যাচে ৫ ওভারে ৮২ রান তোলা দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক (১৮ বলে ১৯) ও রিজা হেনড্রিকস (৬ বলে ৬) এই ম্যাচে ব্যর্থ। ভালো করতে পারেননি পরের দুই ব্যাটসম্যানও। ৫০ রান তুলতেই দল হারায় চার উইকেট। সেখান থেকে দলকে কিছুটা উদ্ধার করে রাসি ফন ডার ডাসেন ও ভিয়ান মুল্ডারের ৪৯ বলে ৭৭ রানের জুটি। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ফন ডার ডাসেন করেন ৩১ বলে ৫০, ২৮ বলে ৩৬ মুল্ডার। পরে অভিষিক্ত প্যাট্রিক ক্রুগার অপরাজিত ১৬ রান করে কোনোরকমে দলকে ১৬০ পার করান।

তবে সেই পুঁজি নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার লড়াইয়ের সম্ভাবনা শুরুতেই ধ্বংস করে দেন ব্র্যান্ডন কিং ও চার্লস। পাওয়ার প্লেতে ৮৩ রান তুলে ফেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার। প্রথম ওভারেই আনরিক নরকিয়াকে টানা তিন বাউন্ডারিতে শুরু করেন চার্লস। পরের ওভারে দুই ওপেনারের ব্যাট থেকে আসে ছক্কা। এরপর ঝড় চলতেই থাকে। ৪০ বলে ৯২ রানের উদ্বোধনী জুটি থামে কিংয়ের বিদায়ে। ক্যারিবিয়ানদের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক করেন চার ছক্কায় ২৮ বল ৪৪। ২০ বলে ফিফটি করা চার্লস থামেন ৬৯ রানে।

এরপর আলিক আথানেজকে নিয়ে অনায়াসেই বাকি পথটুকু পাড়ি দেন কাইল মেয়াস (২৩ বলে ৩৬*)। ম্যাচের সেরা হন চার্লস, আট উইকেট নিয়ে সিরিজের সেরা বাঁহাতি স্পিনার মোটি। বিশ্বকাপ প্রস্তুতির জন্য সিরিজটি হলেও আইপিএলের কারণে দুই দলের বিশ্বকাপ স্কোয়াডের অনেকেই খেলতে পারেননি। বিশ্বকাপের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। দক্ষিণ আফ্রিকা দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে নিজেদের মধ্যেই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৬৩/৭ (ডি কক ১৯, হেনড্রিকস ৬, রিকলটন ১৮, ব্রিটস্কে ৫, ফন ডাসেন ৫১, মুল্ডার ৩৬, ক্রুগার ১৬, কুটসিয়া ০, ফোরটান ২; আকিল ৪-০-৩১-০, শামার ৪-০-২৬-২, অ্যালেন ৩-০-২৫-০, ম্যাককয় ৪-০-৩৯-৩, মোটি ৩-০-২১-২, ওয়ালশ ২-০-১৮-০)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৩.৫ ওভারে ১৬৫/২ (কিং ৪৪, চার্লস ৬৯, মেয়ার্স ৩৬*, আথানেজ ৬*; নরকিয়া ২-০-২৬-০, ফোরটান ২-০-২৫-০, কুটসিয়া ৩-০-৩৭-১, মুল্ডার ১-০-৯-০, পিটার ২-০-২৭-১, ক্রুগার ১-০-৮-০, হেনড্রিকস ২.৫-০-২৯-০)।

ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ উইকেটে জয়ী।

সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩-০তে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: জনসন চার্লস।

ম্যান অব দা সিরিজ: গুডাকেশ মোটি।