২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হওয়ায় টানা ১১ দিন ধরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। ফলে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় বিভিন্ন বেসরকারি পার্কিং আর সড়কে বেশ কিছু পেঁয়াজবোঝাই ট্রাক এখনো দাঁড়িয়ে আছে বলে জানা গেছে।
দীর্ঘদিন আবদ্ধ থাকার ফলে এসব পেঁয়াজের বেশির ভাগ পচে-গলে নষ্ট হয়ে গেছে। দ্রুত এসব ট্রাক ছাড় করাতে না পারলে আরও ক্ষতির শিকার হবেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে বাংলাদেশি আমদানিকারকরা তাদের ভারতীয় রফতানিকারক প্রতিনিধিদের মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পুরনো এলসির আটকে পড়া পেঁয়াজ ছাড় করার ব্যবস্থা করতে বার বার আবেদন জানালেও এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া মেলেনি। ফলে দেশে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
পেঁয়াজ আমদানিকারক শেখ ট্রেডার্সের শেখ মাহাবুব বলেন, প্রতিবছর পেঁয়াজ নিয়ে লংঙ্কাকাণ্ড হয়। ভারত কখনো উৎপাদন সংকট, আবার কখনো রফতানি মূল্য তিন গুণ বাড়িয়ে আমদানি বন্ধ করতে বাধ্য করে। এক্ষেত্রে সংকট মোকাবেলায় ভারত ছাড়াও বাইরের কিছু দেশের সঙ্গে এই পণ্যের বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করা দরকার।
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক আনু বলেন, তারা ভারতীয় ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পেঁয়াজ রফতানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু এখনো কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে বেনাপোল হয়ে আমদানি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
পেঁয়াজ আমদানিকারক রফিকুল ইসলাম রয়েল বলেন, বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের ওপারের বিভিন্ন পার্কিংয়ে তাদের বেশ কিছু ট্রাক পেঁয়াজ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক ট্রাকের পেঁয়াজে পচন ধরেছে। নিষেধাজ্ঞার আগেই এসব ট্রাক বন্দর এলাকায় পৌঁছেছিল। দ্রুত এসব ট্রাক না ছাড়লে আবারো নতুন করে তারা লোকসানে পড়বেন।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সংকট দেখিয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এপর্যন্ত পেঁয়াজের কোনো ট্রাক ঢুকতে দেয়নি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। দেবে কিনা তা-ও নিশ্চিত করতে পারেনি।
তবে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে অন্যান্য পণ্যের বাণিজ্য স্বাভাবিক রয়েছে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দশদিনে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে বিভিন্ন ধরনের দুই হাজার ৫৪৪ ট্রাক পণ্য। একই সময়ে ভারতে বাংলাদেশি পণ্য রফতানি হয়েছে এক হাজার ২৭ ট্রাক। এসব পণ্যের মধ্যে ৬৭ ট্রাক ছিল ইলিশ। দুর্গাপূজা উপলক্ষে শুভেচ্ছার নিদর্শনস্বরূপ বাংলাদেশ স্বল্পদামে ইলিশ দিলেও পেঁয়াজ আটকে দিয়েছে ভারত।