১২ আগস্ট, ২০২১
এক মুসলিম ব্যক্তিকে তার মেয়ের সামনে শহরের রাস্তাজুড়ে নির্যাতন করা হয়েছে এবং তাকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করা হয়েছে। ছোট্ট মেয়েটির কান্নায়ও বাবাকে নির্যাতন থেকে দমেনি পাষণ্ডরা। এমনকি পরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার পরও নির্যাতন করা হয়েছে ৪৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিটিকে।
ঘটনাটি বুধবার ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের কানপুরে। স্থানীয়দের করা ভিডিওতে দেখা যায়, ছোট্ট শিশুটি তার বাবাকে আঁকড়ে ধরে আছে এবং বাবাকে আর না মারতে আক্রমণকারীদের কাছে অনুরোধ করছে।ভিডিওতে এটাও দেখা যায়, পুলিশ ওই ব্যক্তিকে হেফাজতে নেয়ার সময়ও আক্রমণকারীরা তাকে মারধর করতে থাকে।
বুধবার একটি মোড়ে সমাবেশ করছিল কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দল। তাদের অভিযোগ ছিল, মুসলমানরা একটি হিন্দু মেয়েকে ধর্মান্তরিত করে তাদের সম্প্রদায়ভুক্ত করার চেষ্টা করছে। বৈঠকটি শেষ হওয়ার পরপরই সমাবেশস্থলের ৫০ গজের মধ্যেই মারধরের ঘটনাটি ঘটায় তারা।এদিকে এক বিবৃতিতে কানপুর পুলিশ জানায়, এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মারধরের শিকার ওই ব্যক্তি বিয়ের ব্যান্ড পরিচালনা করা স্থানীয় এক ব্যক্তি, তার ছেলে ও নাম উল্লেখ না করে আরো ১০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তবে বজরং দলের কারো নাম মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে কিনা পুলিশ তা পরিষ্কার করেনি।
নির্যাতনের শিকার পেশায় রিকশা ড্রাইভার ওই ব্যক্তি মামলার অভিযোগে বলেন, ‘আমি বিকেল ৩টার দিকে আমার ব্যাটারিচালিত রিকশাটি চালাচ্ছিলাম। তখনই তারা আমাকে হেনস্থা ও নির্যাতন করা শুরু করে এবং পরিবারসহ আমাকে হত্যার হুমকি দেয়। পরে আমি পুলিশী হস্তক্ষেপে বাঁচতে পারি।’
জানা যায়, নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিটি একটি পরিবারের আত্মীয়, যাদের পার্শ্ববর্তী একটি হিন্দু পরিবারের সাথে আইনি দ্বন্দ্বে রয়েছে। বিবদমান পরিবার দুটি একে অপরের বিপক্ষে মামলা করেছে।
মুসলিম পরিবারটি প্রথমে নির্যাতন ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ এনে এফআইআর দায়ের করে। পরে হিন্দু পরিবারটি ‘এক নারীকে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা’র অভিযোগ করে একটি মামলা দায়ের করে।সম্প্রতি বজরং দল বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে এবং মুসলিম পরিবারটির বিরুদ্ধে জোর করে ধর্মান্তরকরণের অভিযোগ তুলে।
সূত্র : এনডিটিভি