সেশনজট নিরসনের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ইবি শিক্ষার্থীদের

০৯ মার্চ, ২০২২

শিক্ষক সংকট ও সেশনজট নিরসনের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে বিভাগে তালা দিয়ে এবং বিভাগের ফটকে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধের নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করেন তারা। এ ছাড়াও সমস্যা সমাধানের দাবিতে প্রশাসনের কাছে গণস্বাক্ষকর সংবলিত স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার সকাল থেকে তাঁরা ক্যাম্পাসে এসব কর্মসূচি পালন করেন। গত সোমবার থেকে শিক্ষার্থীরা এ দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। ফলে ভর্তি কার্যক্রম ছাড়া বিভাগের সবধরনের একাডেমিক ও দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, সকালে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে আগে থেকে তালাবদ্ধ বিভাগের  ফটকে অবস্থান নেন। এসময় কোন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে ভেতরে ঢুকতে দেননি তাঁরা। পরে বেলা ১১টায় সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে আবারো বিভাগে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষক সংকট ও সেশনজট নিরসনের দাবি সংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন ও স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুরে একই দাবিতে শিক্ষার্থীদের গণস্বাক্ষর সংবলিত একটি স্মারকলিপি প্রশাসনের কাছে প্রদান করা হয়। কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়ার কাছে স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিভাগের ১১জন শিক্ষক থাকলেও বর্তমানে পাঁচজন শিক্ষাছূটিতে দেশের বাইরে আছেন এবং একজন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। ফলে বাকী পাঁচজন শিক্ষক চলমান সাতটি ব্যাচের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করেন।   এতে বিভিন্ন সংকটের কারণে সেশনজটের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা সেশনজট নিরসনে পর্যাপ্ত শিক্ষকের দাবিতে আন্দোলন করছেন। 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা বিভাগের সকল কার্যক্রম বয়কট করেছি। তবে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে বিভাগের ভর্তি কার্যক্রম চালু রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহ আমাদের এ বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। এর মধ্যে যদি সন্তোষজনক কেন সিদ্ধান্ত না আসে তাহলে আরো কঠোর আন্দোলনে যাব।’

এ দিকে, সেশনজট নিরসনের দাবিতে পৃথকভাবে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।  তাঁরা একই শিক্ষাবর্ষের অন্য বিভাগগুলোর চেয়ে পিছিয়ে পড়ায় মানসিক বিপর্যস্ততার কথা উল্লেখ করে বিদ্যমান সেশনজট নিরসনের দাবি জানান। 

পরিসংখ্যান বিভাগের সভাপতি ড. মাহবুবুর রহমান বলেন , ‘আমরা প্রতিদিনই প্রশাসনকে সকল বিষয় অবহিত করছি। শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে শিক্ষকরাও সহমত আছেন। গত দুইদিন আমরা বিভাগে কার্যক্রম চালাতে পারিনি। আশা করছি শনিবার ক্যাম্পাস খুললে তিন-চার কার্যদিবসের মধ্যেই দৃশ্যমান সমাধান শুরু হবে।'

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, পরিসংখ্যান ও বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি হাতে পেয়েছি। পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের ফাইল প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আগামী সপ্তাহেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।'