পঞ্চগড়ে পুলিশ-মুসল্লি সংঘর্ষে ২ জন নিহত

০৪ মার্চ, ২০২৩

আহমদিয়া মুসলিম জামাতের বার্ষিক সম্মেলন বন্ধের দাবিতে পঞ্চগড় শহরে গতকাল বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষে আরিফুর রহমান (২৮) ও জাহিদ হাসান (২৩) নামের দুই তরুণ নিহত হন। সংঘর্ষে পুলিশের ৯ সদস্য ও ২ সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। 

জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধক্রমে সালানা জলসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরে মাইকিং করে বিক্ষোভকারীদের শান্তিবজায় রেখে ঘরে ফেরার আহ্বান করা হয়।

বার্ষিক সম্মেলনকে আহমদিয়ারা সালানা জলসা বলে থাকেন। তিন দিনের এ সম্মেলন গতকাল শুরু হয়েছে। সম্মেলন বন্ধ ঘোষণার দাবিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটে। দুপুরে পঞ্চগড় শহরের শেরেবাংলা পার্কসংলগ্ন মহাসড়কে সংঘর্ষ শুরু হয়। বিক্ষোভ থামাতে পুলিশ কয়েকবার রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। বিক্ষুব্ধ মুসল্লিরাও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। এসএ টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি কামরুজ্জামান টুটুল ও দৈনিক করতোয়ার জেলা প্রতিনিধি সামসুদ্দিন কামাল ছবি তুলতে গেলে বিক্ষোভকারীরা তাদের ওপর চড়াও হন। তাদের বেধড়ক মারধর করেন। তারা পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আহমদিয়াবিরোধীরা জুমার নামাজের পর পার্কসংলগ্ন মহাসড়কে জড়ো হন। পরে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ বাধা দেয়। 

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, শেষ নবীকে অস্বীকার করে অন্য কাউকে যে নবী মানবে তাকে মুসলিম বলা যেতে পারে না। আহমদিয়ারা গোলাম আহমদকে নবী মনে করে, তারা কাফের। ইসলামের নামে তাদের কোনো জলসা আয়োজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম মেনে নিতে পারে না। তাদের জলসা বন্ধ ঘোষণা করতে হবে। এর আগে বৃহস্পতিবার একই দাবিতে পঞ্চগড়-তেঁতুলিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিল আহমদিয়া-বিরোধীরা। প্রায় ৫ ঘণ্টা অবরোধ চলে। পরে বিকাল ৩টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সফিকুল ইসলাম এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সমঝোতার আশ্বাস দেন। পরে মুসল্লিরা বিক্ষোভ থেকে সরে যান। 

উল্লেখ্য, প্রতি বছরের মতো এবারও পঞ্চগড়ের আহমদনগরে সালানা জলসার আয়োজন করেছে আহমদিয়া মুসলিম জামাত। পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব ও বিজিবি তৎপর রয়েছে। কোনো প্রাণহানি যাতে না ঘটে সেদিকে সতর্ক রয়েছে প্রশাসন।