২৪ ঘণ্টায় ভারতে ১২২ জনের মৃত্যু

১৩ মে, ২০২০

করোনা সংক্রমণের গতি রুখতে লাগাতার চেষ্টা করা হলেও কিছুতেই যেন বশে আনা যাচ্ছে না ওই ভয়ঙ্কর সংক্রামক রোগটিকে। ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রলালয়ের পরিসংখ্যান মতে, বুধবার সকাল পর্যন্ত দেশ জুড়ে মোট করোনা আক্রান্ত ৭৪,২৮১ জন। গত একদিনে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে করোনা সংক্রমণ ও তার জেরে মৃত্যু। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ১২২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৩,৫২৫ জন নতুন করে ওই মরণ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, দেশে সক্রিয় কোভিড -১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭,৪৮০ জন এবং এপর্যন্ত দেশে সুস্থ হয়েছেন ২৪,৩৮৬ জন। এদিকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার রাতেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানেই তিনি লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়ানোর ব্যাপারে ইঙ্গিত দেন।

তবে প্রধানমন্ত্রী মোদি করোনার জেরে হওয়া আর্থিক পরিস্থিতির দৈন্যদশা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে ২০ লক্ষ কোটি টাকার একটি আর্থিক প্যাকেজও ঘোষণা করেন। ১৭ মে তারিখের পর ফের “লকডাউন ৪” এর ঘোষণা হলেও এবারে এর বিধিনিষেধ একেবারে অন্যরকমের হবে বলেও ইঙ্গিত দেন প্রধানমন্ত্রী।

দেশের মধ্য়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে যে রাজ্যের তা হল মহারাষ্ট্র। সেখানে প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। মঙ্গলবার এক হাজারেরও বেশি নতুন করোনা রোগীর সন্ধান মিলেছে সেখানে। সব মিলিয়ে উদ্ধব ঠাকরের রাজত্বে মোট করোনা আক্রান্ত ২৪,৪২৭ জন। মহারাষ্ট্রের পরেই করোনা আক্রান্তের হিসাবে তালিকায় আছে গুজরাট, তামিলনাড়ু এবং দিল্লি।

মহারাষ্ট্রের মধ্যে আবার সবচেয়ে বেশি যে শহরটিতে কোভিড- ১৯ বাসা বেঁধেছে তা হল মুম্বাই। গোটা দেশের প্রায় ১৭ শতাংশ করোনা রোগী এখন বাণিজ্য নগরীতেই। মঙ্গলবারই এই শহরে প্রায় ৩০ জন মারা যাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। মহারাষ্ট্রে যত মানুষের করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে ৬০ শতাংশই হয়েছে মুম্বাইয়ে। মৃত্যুর শহর হয়ে উঠেছে এটি। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো মুম্বইয়ের নতুন নতুন এলাকায় করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে।

গত ২৫ মার্চ থেকে ভারতে টানা লকডাউন চলছে। আগামী ১৭ মে তার মেয়াদ শেষের কথা থাকলেও মঙ্গলবারই প্রধানমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই। তবে তিনি একথাও বলেছেন যে এবারের লকডাউনে বিধিনিষেধের নির্দেশিকায় বেশ কিছু অদলবদল আসবে। পাশাপাশি দেশের মানুষের আর্থিক সহায়তায় ২০ লক্ষ কোটি টাকার একটি প্যাকেজও ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা করে তিনি বলেন, ‘এই আর্থিক প্যাকেজ আত্মনির্ভর ভারতকে এগিয়ে দেবে। সমস্ত প্যাকেজ জুড়লে ২০ লক্ষ কোটি টাকার মতো হবে। যা দেশের জিডিপির প্রায় ১০ শতাংশ। ২০২০ সালে ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ আত্মনির্ভর ভারত অভিযানকে নতুন গতি দেবে।’ এই প্যাকেজে জমি-শ্রমিক সবকিছুর উপরই নজর দেওয়া হয়েছে। মধ্যবিত্তের জন্যেই এই প্যাকেজ।