১০ অক্টোবর, ২০২৩
তথ্যপ্রযুক্তি আইনে সাজাপ্রাপ্ত মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান শুভ্র ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলান হাইকোর্টে জামিন পেয়েছেন। একইসঙ্গে তাদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন উচ্চ আদালত।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) তাদের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি করে বিচারপতি এমদাদুল হক আজাদের একক বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
মামলার রায় ঘোষণার পর থেকে এই দুই আসামি কারাগারে আছেন। তাদের সাজা বৃদ্ধি চেয়ে ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করেছে।
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারার এই মামলায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর এই দুই মানবাধিকার কর্মীকে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে রায় দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত। সেই সঙ্গে আসামিদের ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। ওইদিন রায় ঘোষণার পর আদিলুর রহমান খান ও এ এস এম নাসির উদ্দিনকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান নিয়ে ২০১৩ সালের ১০ জুন মানবাধিকার সংস্থা অধিকার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে শাপলা চত্বরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে ৬১ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান নিয়ে অসত্য ও বিকৃত তথ্য প্রচারের অভিযোগে আদিলুর রহমান খান ও নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
মামলায় পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়, আদিলুর ও নাসির উদ্দিন ৬১ জনের মৃত্যুর ‘বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা’ তথ্যসংবলিত প্রতিবেদন তৈরি ও প্রচার করে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেন, আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অপচেষ্টা চালান এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি দেশে-বিদেশে চরমভাবে ক্ষুণ্ণ করেন। পাশাপাশি তাঁরা মুসলমানদের মনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি করেন, যা তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭(১) ও (২) ধারায় অপরাধ।
পরবর্তী সময়ে ২০১৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর আদিলুর রহমান খান ও এ এস এম নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। তবে উচ্চ আদালতে আসামিদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তিন বছরের জন্য পরবর্তীতে স্থগিত থাকে বিচারকাজ। পরে ফের ২০১৭ সাল থেকে আলোচিত এই মামলার শুনানি শুরু হয়।