ইহকাল-পরকালের মুক্তির একমাত্র পথ রসুলের আদর্শ বাস্তবায়ন

০৫ মে, ২০২৪

আমাদের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পুরো জীবনই উম্মতের মুক্তির পথ। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, সম্প্রদায়, দেশ-কাল নির্বিশেষে সবার জন্যই প্রেরিত সর্বশ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ। রসুল (সা.) বিশ্বমানবতার জন্য সর্বোত্তম আদর্শের মূর্ত প্রতীক। 

তাঁর মধ্যে মানবকল্যাণের সব আদর্শ বিদ্যমান ছিল। আদর্শ পরোপকারী, আদর্শ শিক্ষক, আদর্শ প্রচারক, আদর্শ সৈনিক, আদর্শ সেনাপতি, আদর্শ বিপ্লবী, আদর্শ নেতা ও আদর্শ রাষ্ট্রনায়ক। তিনি শ্রমিকের আদর্শ, তিনি ব্যবসায়ীর আদর্শ, অতিথিপরায়ণতার আদর্শ, বিচারকের আদর্শসহ দরিদ্র, শিশু, নারী, ক্রীতদাস, অনাথ, স্বজন, শত্রু, পশু-পাখির প্রতি প্রেম, করুণা ও উদারতা দেখিয়ে একজন মুমিন কীভাবে জীবন সাজাবে তার পদ্ধতি শিখিয়েছেন। 

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘লাকদ কানা লাকুম ফি রাসুলিল্লাহি উসওয়াতুন হাসানাহ’। অর্থাৎ তোমাদের জন্য রসুলের জীবনে রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ। (সুরা আল আজহাব, আয়াত ২১)

তৌহিদের বাণী ও আল্লাহর পরিচয় তুলে ধরা ছিল নবীজির প্রধান দায়িত্ব। কোরআন ও সুন্নাহ দিয়ে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক তথা সামগ্রিক জীবন এঁকেছেন। রসুল (সা.) বিশ্বজগতের রহমত হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন। তিনি রহমতের গুণে গুণান্বিত। যিনি রহমতের নবী তাঁর চরিত্র ছিল অবশ্যই সুন্দর। তাঁর চরিত্রের সঙ্গে পৃথিবীর কারও চরিত্রের মিল নেই। তাঁর চরিত্র সর্বোৎকৃষ্ট। 

ইরশাদ হচ্ছে, ‘ওয়া ইন্নাকা লাআলা খুলুকুল আজিম’। অর্থ, হে রসুল! আপনি সর্বোন্নত চারিত্রিক মাধুর্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত আছেন। অসভ্য, অন্ধকার সময়ে কৈশোর ও যুবক বয়সেই সততা ও বিশ্বস্ততায় উপাধি পেয়েছিলেন ‘আল আমিন’। রসুল (সা.)-এর সর্বদা সাদাসিধা জীবন ছিল। তিনি সবার সঙ্গে মিলেমিশে কথা বলতেন। 

হজরত আবু মাসউদ (রা.) বলেন, ‘রসুল (সা.)-এর কাছে এক লোক এসে কথা বলছিলেন, তখন লোকটি ভয়ে কাঁপছিল। রসুল (সা.) এ দৃশ্য দেখে বলতে লাগলেন, তুমি স্থির হও! আমি কোনো সম্রাট নই, আমি কুরাইশি এক মহিলার সন্তান যে শুকনা গোশত খেত।’ তাঁর পুরো জীবনটাই শিক্ষা। তিনি উম্মতের জন্য শিক্ষা। তাঁর কর্ম শিক্ষা, শিক্ষক হিসেবেই প্রেরিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ইন্নামা বুইসতু মুআল্লিমান’। অর্থ আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে মানবতার শিক্ষক হিসেবে। 

রসুল (সা.)-এর মধ্যে বিকশিত হয়েছে আরও উন্নত ও মহত্তম গুণাবলি। আমরা দেখতে পাই যারা রসুলের জীবন থেকে শিক্ষা নিয়েছেন তারা শ্রেষ্ঠ মানুষে পরিণত হয়েছেন। সাহাবিরা রসুলের পাশে থেকে সম্মানিত হয়েছেন। রসুলের জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে অলি হয়েছেন। এ রকম হাজারো ব্যক্তি রয়েছে। আজও যারা রসুলের জীবন থেকে শিক্ষা অর্জন করে আমল করতে পারবে তারা অলি হবে। তারাই দুনিয়া ও আখিরাতে শান্তি পাবে।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।