তালবিয়া পাঠের ফজিলত

২৭ মে, ২০২৪

তালবিয়াকে হজ-ওমরার শ্লোগান বলা হয়। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘জিব্রাইল আমার কাছে আসলেন অতঃপর বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন, যেন আপনি আপনার সাথীদের নির্দেশ প্রদান করেন যে, তারা যেন উঁচু স্বরে তালবিয়া পাঠ করে। কারণ এটি হজের শ্লোগানভুক্ত।’(তাবরানি: ৫১৭২)

তালবিয়ার বাক্য
তালবিয়ার বাক্যটি হলো- لَبَّيْكَ ا للّهُمَّ لَبَّيْكَ - لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ - اِنَّ الْحَمدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ - لاَ شَرِيْكَ لَكَ উচ্চারণ : ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক। লাব্বাইকা লা-শারিকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক। লা শারিকা লাক।’ অর্থ : আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি (আমি হাজির), হে আল্লাহ, আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি (আমি হাজির)। আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি, আপনার কোনো শরিক নেই। আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি। নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা, নিয়ামত ও রাজত্ব আপনারই। আপনার কোনো শরিক নেই। (বুখারি: ১৫৪৯; মুসলিম: ২৮১১)

তালবিয়া পড়ার ফজিলত
সাহল ইবনে সাদ আসসায়েদি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, কোনো ব্যক্তি যখন তালবিয়া পাঠ করে তখন তার ডানে ও বামে পৃথিবীর শেষপ্রান্ত পর্যন্ত যা কিছু আছে যেমন, গাছপালা, মাটি, পাথর সকল কিছু তালবিয়া পাঠ করতে থাকে। (জামে তিরমিজি: ৮২৮; ইবনে মাজাহ: ২৯২১)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, কোনো মুমিন যখন ইহরামের হালতে দিন কাটাবে তখন সূর্য তার সকল গুনাহ নিয়ে অস্ত যাবে। আর কোনো মুসলিম যখন আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হজের তালবিয়া পাঠ করবে তখন তার ডানে-বামে পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত সবকিছু তার পক্ষে সাক্ষ্য দিবে। (জমে তিরমিজি: ৮১০; তারগিব: ১৭০৩

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, যে কেউ তালবিয়া পাঠ করবে তাকে সুসংবাদ দেওয়া হবে এবং যে কেউ তাকবির বলবে তাকে সুসংবাদ দেওয়া হবে। জিজ্ঞাসা করা হলো- ইয়া রাসুলাল্লাহ! জান্নাতের সুসংবাদ? উত্তরে নবীজি বললেন, হ্যাঁ। (আলমুজামুল আওসাত, তাবারানি: ৭৭৭৫; তারগিব: ১৭০৭)

হজের তালবিয়া পাঠ না করা অভিশপ্ত হওয়ার কারণ। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘অমুকের ওপর আল্লাহর অভিশাপ! তারা ইচ্ছা করে হজের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ দিনের শোভা মিটিয়ে দিল। আর নিশ্চয় হজের শোভা হল তালবিয়া।’ (মুসনাদ আহমদ: ১/২১৭)

তালবিয়া পাঠের নিয়ম
হজ ও ওমরা পালনকারীদের জন্য ইহরামের সঙ্গে প্রথমবার তালবিয়া পাঠ করা জরুরি। এরপর থেকে হজের সবগুলো রোকন আদায়ের সময় অর্থাৎ আরাফাতের ময়দান, মিনা-মুজদালিফায় অবস্থানের সময় তালবিয়া পাঠ করা সুন্নত।

ওমরা পালনকারীরা ইহরামের শুরু থেকে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ শুরুর আগ পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করবেন। তাওয়াফের আগ মুহূর্তে তালবিয়া বন্ধ করে দেবেন। আর হজ পালনকারীরা ইহরাম বাঁধা থেকে শুরু করে ১০ জিলহজ কোরবানির দিন ‘জামরাতুল আকাবা’য় কঙ্কর নিক্ষেপের আগ পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করবেন। জামরাতুল আকাবা বা বড় জামরার কাছে পৌঁছে প্রথম পাথর নিক্ষেপের পূর্বমুহূর্তে তালবিয়া পড়া বন্ধ করতে হবে। এখন থেকে হজের শেষ পর্যন্ত আর তালবিয়া পড়া জায়েজ নেই। (মানাসিক পৃ: ২২৫)