আর্মেনিয়ার পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা

আর্মেনিয়ার পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা

আর্মেনিয়ার পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা

আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনইয়ানের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভরত বিরোধীরা রাজধানী ইয়েরেভানের পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করে তাণ্ডব চালিয়েছে। সোমবার বিক্ষোভকারী ওই ভবনে জোর করে প্রবেশ করে তাণ্ডব চালায় বলে জানায় রাশিয়ার বার্তা সংস্থা আরআইএ নোভস্টি।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা যায়, ওই ভবনে কিছু বিক্ষোভকারী প্রবেশ করছেন, যাদের একজন মেগাফোন হাতে অন্যদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। অপরদিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকলেও তাদের ভূমিকা ছিল নিরব।

গত বছরের শেষে আজারবাইজানের সাথে নাগরনো কারাবাখকে কেন্দ্র করে যুদ্ধে শান্তিচুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনইয়ানের পদত্যাগের দাবি দেশটিতে জোরদার হয়।বৃহস্পতিবার আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনইয়ানকে এক বিবৃতিতে দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল অনিক গাসপারিয়ান পদত্যাগের আহ্বান জানানোর পর ‘অভ্যুত্থান চেষ্টার’ অভিযোগে তাকে পদচ্যুত করেন প্রধানমন্ত্রী।তবে শনিবার পদচ্যুতির ওই আদেশে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেন আর্মেনিয়ার প্রেসিডেন্ট আরমেন সারকসিয়ান।

নাগরনো-কারাবাখ শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করায় দেশে বিপুল সমালোচনার শিকার হয়েছেন পাশিনইয়ান। চুক্তিটিকে আর্মেনিয়ার অনেকেই তাদের জাতীয় লজ্জা হিসেবে বিবেচনা করছেন।

পাশিনইয়ান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার সামনে এই ‘অবর্ণনীয় বেদনাদায়ক’ চুক্তি স্বাক্ষর অথবা তার দেশের সামরিক বাহিনীকে ধ্বংস হতে দেয়া ছাড়া আর কোনো পথ ছিলো না।

১৯৯১ সালের পর থেকেই সাবেক দুই সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে উত্তেজনাকর সম্পর্ক চলে আসছে। ১৯৯৪ সালে আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের ভূমি হিসেবে স্বীকৃত নাগরনো-কারাবাখ ও এর সাথে সংযুক্ত সাতটি অঞ্চল আর্মেনিয়া দখল করলে উত্তেজনা আরো বাড়ে।

২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ আর্মেনিয়ান সেনাবাহিনী বেসামরিক জনগণ ও আজারবাইজানি বাহিনীর ওপর হামলা করলে দুই দেশের মধ্যে পূর্ণমাত্রায় নতুন করে যুদ্ধ শুরু হয়।প্রায় ছয় সপ্তাহ ধরে চলা এই যুদ্ধে আর্মেনিয়ার কাছ থেকে বেশ কয়েকটি কৌশলগত শহর ও অন্তত তিন শ’ জনবসতি ও গ্রাম দখলমুক্ত করে আজারবাইজান।

যুদ্ধ বন্ধ করতে ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের উদ্দেশে দেশ দু’টি রাশিয়ার মধ্যস্থতায় ১০ নভেম্বর একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।রাশিয়ার মধ্যস্থতায় সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিটিকে আজারবাইজানের জয় ও আর্মেনিয়ার পরাজয় হিসেবে মনে করা হয়। চুক্তিটির ফলে আর্মেনিয়াকে নাগরনো-কারাবাখ থেকে তাদের সশস্ত্র বাহিনীকে সরিয়ে ফেলতে হচ্ছে।

সূত্র : আলজাজিরা ও ডেইলি সাবাহ