কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ৭২,৭৫০ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী

কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ৭২,৭৫০ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী

ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অর্থনীতিতে করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবেলায় বেশ কিছু উদ্দীপনা প্যাকেজ সহ তাঁর সরকারের তরফ থেকে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার সার্বিক একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর আগে আমি রফতানিমুখী শিল্পকর্মী ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা (জরুরী) প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি এবং আজ আমি নতুন করে ৬৭,৭৫০ কোটি টাকার চারটি নতুন আর্থিক উদ্দীপনা প্যাকেজ ঘোষণা করছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে তার সরকারী বাসভবন গণভবন থেকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় অনুষ্ঠিত প্রেস কনফারেন্সে প্রদত্ত লিখিত ভাষণে আরো বলেন, ‘নতুন বরাদ্দসহ মোট আর্থিক বরাদ্দ দাঁড়াবে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা, যা জিডিপির প্রায় ২ দশমিক ২২ শতাংশ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি, পূর্বে এবং আজকে ঘোষিত আর্থিক সহায়তার প্যাকেজসমূহ দ্রুত বাস্তবায়িত হলে আমাদের অর্থনীতি পুনরায় ঘুরে দাঁড়াবে এবং আমরা কাঙ্খিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কাছাকাছি পৌঁছতে পারবো, ইনশাআল্লাহ।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব উত্তরণে তাঁর সরকার তাৎক্ষণিক, স্বল্প এবং দীর্ঘ-মেয়াদী- এ তিন পর্যায়ে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি কর্ম-পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব উত্তরণে আমি এখন ৪টি কার্যক্রমের বিষয়ে তুলে ধরছি। চারটি প্রোগ্রাম হ’ল: জনসাধারণের ব্যয় বৃদ্ধি, একটি উদ্দীপনা প্যাকেজ প্রণয়ন, সামাজিক সুরক্ষা নেট কভারেজ প্রশস্ত করা এবং আর্থিক সরবরাহ বৃদ্ধি করা।’
চারটি প্যাকেছের মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্পসুদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল প্রদানের লক্ষ্যে ৩০ হাজার কোটি টাকার একটি ঋণ সুবিধা প্রণয়ন করা হবে।
তিনি বলেন, ব্যাংক-ক্লায়েন্ট রিলেশনসের ভিত্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ সংশ্লি শিল্প/ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে তাদের নিজস্ব তহবিল হতে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ ঋণ প্রদান করবে।
এ ঋণ সুবিধার সুদের হার হবে ৯ শতাংশ। প্রদত্ত ঋণের সুদের অর্ধেক অর্থাৎ ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ ঋণ গ্রহিতা শিল্প/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিশোধ করবে এবং অবশিষ্ট ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে প্রদান করবে।
শেখ হাসিনা তাঁর দ্বিতীয় প্যাকেজে বলেন, ক্ষুদ্র (কুটির শিল্পসহ) ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্পসুদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল প্রদানের লক্ষ্যে ২০ হাজার কোটি টাকার একটি ঋণ সুবিধা প্রণয়ন করা হবে।
তিনি বলেন, ব্যাংক-ক্লায়েন্ট রিলেশনসের ভিত্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে তাদের নিজস্ব তহবিল হতে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ ঋণ প্রদান করবে।
এ ঋণ সুবিধার সুদের হার হবে ৯ শতাংশ। প্রদত্ত ঋণের ৪ শতাংশ সুদ ঋণ গ্রহিতা শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিশোধ করবে এবং অবশিষ্ট ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসাবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে প্রদান করবে, বলেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবর্তিত ইডিএফ (এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড) এর সুবিধা বাড়ানো:ব্যাক টু ব্যাক এলসি- এর আওতায় কাঁচামাল আমদানি সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইডিএফ-এর বর্তমান আকার ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হবে। ফলে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমান অতিরিক্ত ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা ইডিএফ তহবিলে যুক্ত হবে।
তিনি বলেন, ইডিএফ-এর বর্তমান সুদের হার এলআইবিওআর-লন্ডন ইন্টারব্যাংক অফার্ড রেট + ১ দশমিক ৫ শতাংশ (যা প্রকৃত পক্ষে ২ দশমিক ৭৩%) হতে কমিয়ে ২ শতাংশ নির্ধারণ করা হবে।
চতুর্থ প্যাকেজে শেখ হাসিনা বলেন, প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট রিফিন্যান্স স্কীম নামে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫ হাজার কোটি টাকার একটি নতুন ঋণ সুবিধা চালু করবে। তিনি বলেন, এ ঋণ সুবিধার সুদের হার হবে ৭ শতাংশ।
প্রধানমন্ত্রী এই বৈশ্বিক ও দেশীয় অর্থনৈতিক সংকট হতে উত্তরণের জন্য রপ্তানি খাতের পাশাপাশি দেশীয় পণ্যের প্রতি বিশেষ নজর প্রদানের আহবান জানান।
তিনি বলেন, ‘ এক্ষেত্রে আমি সকলকে দেশীয় পণ্যের উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের রয়েছে আশ্চর্য এক সহনশীল ক্ষমতা এবং ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা। ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বান সাড়া দিয়ে যে জাতি মাত্র ৯ মাসে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে – সে জাতিকে কোন কিছুই দাবিয়ে রাখতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘মহান আল্লাহ বিশ্ববাসীকে এই মহামারী থেকে রক্ষা করুন।’ তিনি আ্ল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে দেশের জনগণসহ বিশ্বের সকল মানুষের সুরক্ষাও কামনা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশবাসীর যাতে কষ্ট লাঘব হয় এবং তাঁরা ব্যবসা-বাণিজ্য যথাযথভাবে চালিয়ে যেতে পারেন সে জন্যই তাঁর সরকারের এসব প্যাকেজ।
প্রধানমন্ত্রী, দেশবাসীকে ধৈর্য এবং সাহসিকতার সঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবেলার এবং ভীড় এড়িয়ে চলার আহবান জানান।
সবাইকে সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহবান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এইটুকু চাই সবাই যেন সততার সঙ্গে কাজ করেন। এই অবস্থার সুযোগ নিয়ে কেউ যেন কোনরকম দুর্নীতি, অনিয়ম বা অপব্যবহার না করেন।’
‘কেউ করবেন না, সেটাই আমার অনুরোধ। আমরা যদি সঠিকভাবে কাজ করতে পারি তাহলে সমাজের কোন স্তÍরের মানুষই কোন অসুবিধায় পড়বে না,’যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের ৪ দফা কার্যক্রম তুলে ধরেন। যার মধ্যে রয়েছে-
প্রথমত, সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি করা: সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে ‘কর্মসৃজনকে’ মূলত প্রাধান্য দেওয়া হবে। বিদেশ ভ্রমণ এবং বিলাসী ব্যয় নিরুৎসাহিত করা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের ঋণের স্থিতি-জিডিপি’র অনুপাত অত্যন্ত কম (৩৪ শতাংশ ) বিধায় অধিকতর সরকারি ব্যয় সামষ্টিক অর্থনীতির উপর কোনও চাপ সৃষ্টি করবে না।
দ্বিতীয়ত, আর্থিক সহায়তার প্যাকেজ প্রণয়ন: ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্প সুদে কতিপয় ঋণ সুবিধা প্রবর্তন করা হবে।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পুনরুজ্জীবিত করা, শ্রমিক-কর্মচারীদের কাজে বহাল রাখা এবং উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অক্ষুন্ন রাখাই হলো আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের মূল উদ্দেশ্য।
তৃতীয়ত, সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি: দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী জনগণ, দিনমজুর এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত জনসাধারণের মৌলিক চাহিদা পূরণে বিদ্যমান সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি করা হবে।
এর মধ্যে উলেøখযোগ্য কার্যক্রমসমূহ হলো-
(১) বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ;
(২) ১০ টাকা কেজি দরে চাউল বিক্রয়;
(৩) লক্ষ্যভিত্তিক জনগোষ্ঠির মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ;
(৪) ‘বয়স্ক ভাতা’ এবং ‘বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলাদের জন্য ভাতা’ কর্মসূচির আওতা সর্বাধিক দারিদ্র্যপ্রবণ ১০০টি উপজেলায় শতভাগে উন্নীত করা; এবং
(৫) জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গৃহীত অন্যতম কার্যক্রম গৃহহীন মানুষদের জন্য গৃহ নির্মাণ কর্মসূচি দ্রæত বা¯Íবায়ন করা; ইত্যাদি।
চতুর্থত, মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করা: অর্থনীতির বিরূপ প্রভাব উত্তরণে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে সিআরআর এবং রেপোর হার কমিয়ে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধির ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যা আগামীতেও প্রয়োজন অনুযায়ী অব্যাহত থাকবে।
‘তবে এ ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য থাকবে যেন মুদ্রা সরবরাহজনিত কারণে মুদ্রাস্ফীতি না ঘটে, ’যোগ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের দ্রুত বিস্তার, স্বাস্থ্য পরিষেবার উপর সৃষ্ট বিপুল চাপ এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে নজিরবিহীন লকডাউন ও যোগাযোগ স্থবিরতা বিশ্ব অর্থনীতির উপর ইতোমধ্যেই ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, শিল্প উৎপাদন, রপ্তানি বাণিজ্য, সেবাখাত বিশেষত: পর্যটন, এভিয়েশন ও হসপিটালিটি খাত, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ, কর্মসংস্থান ইত্যাদি ক্ষেত্রে ধ্বস নেমেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু সরবরাহ ক্ষেত্রেই নয়, চাহিদার ক্ষেত্রেও ভোগ ও বিনিয়োগ চাহিদা হ্রাস পেতে শুরু করেছে। আইএমএফ ইতোমধ্যে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা শুরু হয়েছে মর্মে ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি পুঁজি বাজারে বিশ্বব্যাপী বিগত কয়েক সপ্তাহে ২৮-৩৪ শতাংশ দরপতন ঘটেছে।
সরকার প্রধান বলেন, ওইসিডি (অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট- এর হিসাব মতে মন্দা প্রলম্বিত হলে বিশ্ব¦ প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসবে। যাতে বিশ্বব্যাপী বিপুল জনগোষ্ঠী কর্মহীন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর মন্দা দীর্ঘস্থায়ী হলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব এই প্রথম এমন মহামন্দা পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে মর্মে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক প্রাক্কলন করেছে। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে মনে হচ্ছে এ ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন,‘সামষ্টিক চলকসমূহের নেতিবাচক প্রভাবের ফলে জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেতে পারে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের রাজস্ব সংগ্রহের পরিমাণ বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম হবে। এরফলে অর্থবছর শেষে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।’
দীর্ঘ ছুটি বা কার্যত লক-ডাউনের ফলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের উৎপাদন বন্ধ এবং পরিবহন সেবা ব্যাহত হওয়ায় স্বল্পআয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস এবং সরবরাহ চেইনে সমস্যা হতে পারে বলেও তিনি আশংকা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নভেল করোনাভাইরাস-এর প্রাদুর্ভাব বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে এটিকে বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ যাবৎ ২০২টি দেশ ও অঞ্চলে এর সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। বিশ্বে এখন প্রতিদিন ৭০ হাজারের বেশি মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে এবং ৪ হাজারের বেশি মারা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা ও আইইডিসিআর যৌথভাবে কাজ শুরু করে। আইইডিসিআর-এ কন্ট্রোল রুম খোলা হয় এবং রোগটি মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু করা হয়। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পৃথক পৃথক কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাইরাসসহ সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ করে ‘ন্যাশনাল প্রিপেয়ার্ডনেস এন্ড রেসপন্স প্ল্যান ফর কোভিড-১৯, বাংলাদেশ’ প্রণয়ন করে তিন স্তর বিশিষ্ট কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছ- বিদেশে গমন এবং বিদেশ থেকে আগমন নিরুৎসাহিত করা, সংক্রমিত ব্যক্তির আগমন ঘটলে দ্রুত সনাক্তকরণ এবং এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে ভাইরাসের বিস্তার রোধ এবং চিহ্নিত আক্রান্ত ও অসুস্থ ব্যক্তিদের দ্রুত পৃথক করে (কোয়ারেন্টাইন) যথাযথ চিকিৎসা প্রদান।
দেশব্যাপী ছুটি ঘোষণা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে তাঁর সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী সংক্রমণ বিস্তার রোধে বিভিন্ন দেশে লক-ডাউন অথবা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশেও গত ২৬ মার্চ থেকে ১৭ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, শিল্প কারখানায় আংশিক ছুটি, পর্যটন কেন্দ্র, বিপণীবিতান এবং সড়ক, নৌ, রেলসহ সকল গণপরিবহণ বন্ধ করা হয়েছে এবং জনসাধারণকে ঘরে থাকার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।বাসস