ইবি ছাত্র ইউনিয়ন সম্পাদককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার

ইবি ছাত্র ইউনিয়ন সম্পাদককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার

ছবি : সংবাদাতা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে ছাত্র ইউনিয়ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদকে জি কে সাদিককে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম আব্দুল লতিফ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। একইসাথে আগামী সাত দিনের মধ্যে তাকে উপযুক্ত কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। এছাড়াও ঘটনা তদন্তে ছাত্র-উপদেষ্টাকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, 'ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র সাদিকুল ইসলাম তার ফেসবুক আইডিতে বিভিন্ন বর্ষিয়ান, জাতীয়, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিক দল সম্পর্কে অশ্লীল, ব্যঙ্গাত্মক আপত্তিকর, প্রতিহিংসামূলক ও নৈতিক মূল্যবোধ পরিপন্থী বক্তব্য ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন করে চলেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দৃঢ়হস্তে করোনা সংকট মোকাবেলা করে চলেছেন এবং মৃত ব্যক্তির জন্য দলমত নির্বিশেষে সকলে গভীরভাবে শোকাহত। এমতাবস্থায় ওই ছাত্রের স্ট্যাটাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করেছে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির কারণ হতে পারে। তার এমন ধারাবাহিক কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো।'

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বিধি মোতাবেক তাকে কেন চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা হবে না তার ব্যাখ্যা পত্র প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইমেইলে প্রেরণের জন্য বলা হয়েছে।

জানা যায়, গত শনিবার সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ
নাসিমের মৃত্যুর আগে ও পরে জি কে সাদিক তার ব্যাক্তিগত ফেসবুক একাউন্ট থেকে কয়েকটি স্ট্যাটাস দেন। এতে তিনি মোহাম্মদ নাসিম ও সরকারের সমালোচনায় আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করেন। এছাড়াও তিনি দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার সমালোচনা করে বিভিন্ন পোস্ট দেন।

তার এসব পোস্টের পর থেকেই শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ জানিয়ে সাদিকের শাস্তি দাবি করে আসছেন। ছাত্রলীগের দাবির প্রেক্ষিতে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ বিষয়ে জিকে সাদিক বলেন, ‘আমার কিছু ফেইসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর প্রতিবাদের প্রক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসানের সিদ্ধান্তের বিষয়ে অবগত হয়েছি। এটা সাময়িক বহিষ্কারাদেশ। আমাকে কারণ দর্শানোর জন্য সাত দিন সময় দেয়া হয়েছে। আমি প্রশাসনের কাছে আমার যৌক্তিক অবস্থান তুলে ধরে কারণ দর্শাবো।’

এবিষয়ে ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সভাপতি নুরুন্নবী সবুজ বলেন, সরকারে গঠনমূলক সমালোচনা করা প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার রয়েছে। তবে রাষ্ট্রবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিরোধী কথা বলার অধিকার ছাত্র ইউনিয়নের গঠনতন্ত্রে নেই। প্রত্যেক ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার আছে। আশা করি প্রশাসন তাকে এটার সুযোগ দিবে।'

উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, 'জাতীর এ ক্রান্তিলগ্নে আমার শিক্ষার্থীর এমন কুরুচিপূর্ণ ও প্রতিহিংসামূলক বক্তব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। সে এগুলো কেন বলেছে কিজন্য বলেছে তার জবাব দিবে। আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটি রিপোর্ট জমা দিলে তার প্রেক্ষিতে চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।'