যেসব কারণে কমে যেতে পারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

যেসব কারণে কমে যেতে পারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে কার্যকর পন্থা হবে নিজেকে সেই পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করা।

করোনাভাইরাস পুরো পৃথিবীজুড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে, যে কারণে বিশ্বব্যাপী আক্রান্ত দেশগুলোতে নেয়া হচ্ছে শক্ত পদক্ষেপ। ‘লকডাউন’, ‘কোয়ারেন্টিন’ ইত্যাদি শব্দ এখন প্রতিদিন শুনতে হচ্ছে। এই অবস্থায় ভেঙে পড়া যাবে না। মনোবল দৃঢ় করতে হবে। সেই সাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও শক্তিশালী রাখতে হবে। আর এ কারণেই স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের আলোকে জানানো হলো কোন অভ্যাসগুলো আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দিচ্ছে।

মানসিক চাপ : করোনাভাইরাসই বর্তমানে সবচেয়ে বড় মানসিক চাপের কারণ। তাই যারা প্রতিদিনের খবরে বিচলিত হয়ে পড়ছেন, তাদেরকে শক্ত হতে হবে। মানসিক চাপগ্রস্ত অবস্থায় কিংবা ভয় পেলে শরীরে নিঃসৃত হয় ‘কর্টিসল’ হরমোন, যা পক্ষান্তরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দমিয়ে দেয়।
তাই মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে কার্যকর পন্থা হবে নিজেকে সেই পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করা। তা সম্ভব না হলে ওই পরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তা করা বন্ধ করতে হবে, অন্য কাজে মনোযোগ দিতে হবে।

অলস জীবন : করোনাভাইরাসের কারণে ঘরে আটকে গেছেন এই অজুহাতে হয়তো অনেকেই শরীর চর্চাকে জলাঞ্জলি দিয়েছেন। ইন্টারনেটে ঘরে বসে করার মতো অসংখ্য ব্যায়ামের ব্যাপারে জানা সম্ভব। আর তা করতে না পারলেও মৃদু যোগ ব্যায়াম কিংবা ‘স্ট্রেচিং’ তো করতেই পারেন।
অলস বসে থাকা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও অলস ও দুর্বল করে তুলবে। আবার অতিরিক্ত ব্যায়ামও একই ফল বয়ে আনবে। তাই ভারসাম্য বজায় রেখে শরীর চর্চা চালিয়ে যেতে হবে।

ঘুমের ঘাটতি : সারা দিন ব্যস্ত সময় পার করেন যারা তাদের অনেকেই অফুরন্ত অবসর সময়ের দিনগুলোকে মনে করে হয়তো আফসোস করেন। ভাইরাস আতঙ্কে ঘরে বসে সেই সুযোগ পেয়ে হয়তো সেই আফসোস মেটানোর চেষ্টা করছেন। দিনভর সিনেমা দেখে পার করছেন, রাত জাগছেন। এতেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। প্রতিদিন ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। কারণ ওই সময়টাতেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তার শক্তি সঞ্চয় করে।
ঘুমের সময়টা মানুষভেদে ভিন্ন হলেও ঘুমের মান ভালো হওয়া আরো জরুরি। ঘুম হতে হবে নির্ভেজাল। আর তার জন্য ঘুমের অন্তত এক ঘণ্টা আগ থেকে সকল বৈদ্যুতিক পর্দা থেকে দূরে থাকতে হবে।

ধূমপান : ফুসফুসের ক্ষতি করার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও দুর্বল করছে এই বদ অভ্যাস, যা সাধারণ রোগে অল্পতেই আক্রান্ত হওয়া সম্ভাবনা বাড়াচ্ছে। ‘কর্টিসল’ হরমোনের পরিমাণ বাড়ায় ‘নিকোটিন’ যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য ক্ষতিকর। আবার ধূমপানের কারণে রক্তে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রাও কমে। তাই ধূপমান ত্যাগ করার চেষ্টা করতে হবে। আর বিশেষজ্ঞদের মতে, ধীরে ধীরে কমানোর চেয়ে একবারে বন্ধ করে দেয়া বেশি কার্যকর পন্থা।

অ্যালকোহল : কালেভদ্রেও যদি অ্যালকোহল বা মদ্যপান করা হয় তবে সেটাও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য ক্ষতিকর। পাশাপাশি অন্ত্রের ‘ফ্লোরা’ ও যকৃতের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায় মদ্যপান। যেকোনো মাত্রার অ্যালকোহল পান করা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।