যক্ষ্মা এখনো স্বাস্থ্যঝুঁকি হিসেবে দেশে রয়ে গেছে : আইসিডিডিআর, বি

যক্ষ্মা এখনো স্বাস্থ্যঝুঁকি হিসেবে দেশে রয়ে গেছে : আইসিডিডিআর, বি

ফাইল ছবি

যক্ষ্মা অত্যন্ত সংক্রামক রোগ হিসেবে দেশে বড় ধরনের জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি হিসেবে রয়ে গেছে। বছরের প্রথম ছয় মাসে ৯৯ হাজার যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হয়েছে।

রোগটি উপসর্গবিহীন অবস্থায় থাকার কারণে অথবা রোগনির্ণয়ের সুযোগ না পাওয়ার কারণে প্রতিদিন প্রায় ২৪৭ জন রোগী শনাক্তের বাইরে থেকে গছে বলে জানিয়েছে আইসিডিডিআর,বি।

চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির (এনটিপি) সহযোগিতায় ইউএসএআইডির অ্যালায়ান্স ফর কমব্যাটিং টিউবারকিউলোসিস ইন বাংলাদেশ (এসিটিবি) প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে সংস্থাটি।

সিলেট বিভাগের চা বাগানসমূহে যক্ষ্মা রোগনির্ণয় ও ব্যস্থাপনা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আইসিডিডিআর,বি সম্প্রতি অন্যতম বৃহত্তম স্থানীয় উন্নয়ন সহযোগী হিড বাংলাদেশের সাথে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক স্থাপন করেছে।

মাইকোব্যাকটেরিয়াল ডিজিজ কন্ট্রোলের (এমবিডিসি) ডিরেক্টর ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের লাইন ডিরেক্টর, টিবিএল ও এএসপি, এনটিপি, অধ্যাপক মো: সামিউল ইসলাম এবং ইউএসএইডের মিশন ডিরেক্টর ডেরিক ব্রাউনের উপস্থিতিতে সোমবার মৌলভীবাজারের কামালগঞ্জে এ বিষয়ে একটি উদ্বোধনী সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এসিটিবি প্রকল্পের আওতায় চা বাগানের স্বাস্থ্যকর্মী ও স্থানীয় বেসরকারি স্বাস্থ্যকর্মীদেরকে নিয়োজিত করে সক্রিয় যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত করার জন্য চা, রাবার এবং পুঞ্জিতে (জাতিগত গোষ্ঠি) কমিউনিটিভিত্তিক উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

চা বাগানের স্বাস্থ্যকর্মীদেরকে যক্ষ্মা পরীক্ষা, রোগনির্ণয় ও ব্যবস্থাপনার ওপর প্রশিক্ষণ দিবে। যক্ষ্মা-সংক্রান্ত পট সঙ্গীতসহ বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হবে।

এছাড়াও, এই সহযোগিতামূলক সম্পর্কের মধ্য দিয়ে প্রারম্ভিক পর্যায়ের যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণের উদ্দেশ্যে সক্রিয় রোগী চিহ্নিতকরণ, সংক্রমণ অনুসন্ধান এবং যক্ষ্মা প্রতিরোধে থেরাপি দেয়া হবে।

দুর্গম এলাকায় এসিটিবি কর্মকাণ্ডের ব্যাপ্তি বাড়ানোর জন্য ইউএসএইড, আইসিডিডিআর,বি এবং হিড বাংলাদেশকে ধন্যাবাদ জানান অধ্যাপক ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারির এ সময়ে যক্ষ্মা শনাক্তকরণের কাজটি চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, আমি বিশ্বাস করি এ সহযোগিতামূলক সম্পর্কের মাধ্যমে কেবলমাত্র এ রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিই নয়, বরং আরো রোগী শনাক্ত করতে এবং চা বাগানের কর্মী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে রোগের ব্যাপকতা লাঘবে সহায়তা করবে।’

প্রকল্পের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেন ডেরিক ব্রাউন এবং রোগী শনাক্তকরণ ও সব ধরনের যক্ষ্মার চিকিৎসার প্রসার বৃদ্ধির মাধ্যমে ২০২২ সালের মধ্যে যক্ষ্মা হ্রাস করার বিষয়ে ইউএসএইডের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

বংলাদেশে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে এনটিপির নেতৃত্বের প্রশংসাও করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইউএসএইডের পিএইচএনই পরিচালক জার্সিস সিদ্ধওয়া, ক্লিনিক্যাল সার্ভিসেস প্রধান ডা. পুষ্পিতা সামিনা, এসিটিবি, আইসিডিডিআর,বি’র চিফ অব পার্টি ডা. পল দারু, এবং এসিটিবি, আইসিডিডিআর,বির প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর ডা. শাহরিয়ার আহমেদ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হিড বাংলাদেশের উপস্থাপনা, যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের ওপর পট সঙ্গীত, প্রকল্পের কর্মকাণ্ড পরিদর্শন, ফুসকুরি টি এস্টেটে জাতিগত গোষ্ঠীর নেতাদের সাথে সাক্ষাত এবং ডিনস্টন টি এস্টেটে চা বাগানের স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিচিতিমূলক পর্বে অংশগ্রহণ।

মৌভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. তউহীদ আহমেদ এবং এনটিপি, ইউএসএইড, আইসিডিডিআর,বি ও হিড বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা এবং স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা উদ্বোধনী সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র : ইউএনবি