কুরবানির ইতিহাস ও শিক্ষা

২৪ জুলাই, ২০২১

সূচনাঃইসলামে কোরবানির ইতিহাস ইসলামে বেশ প্রাচীন।পৃথিবীর সৃষ্টি লগ্ন থেকে এ প্রথা চলে আসছে।আদি পিতা হযরত আদম (আঃ) এর পুত্র হাবিল ও কাবিল দের  থেকে শুরু হয় যা আজ পর্যন্ত বিদ্যমান।এটি একটি আল্লাহর বিধান যা অধিক গুরুত্ব পাই হযরত  ইব্রাহিম(আ) এর সময় থেকে।এছাড়াও ইসলামে কোরবানির না না দিক রয়েছে।ইসলামে পশুহত্যা কেই কেবলমাত্র কুরবানী হিসেবে গণ্য করা হয় না,বরং আল্লাহ তায়ালা দেখেন তার বান্দাগন তার জন্য কতখানি ত্যাগ স্বীকার করতে পারে।বর্তমানে  ইসলামী আইন অনুসারে কুরবানী হলো ঈদুল আযহার দিনে পশু জবেহ করা।

কুরবানী কিঃকুরবানী শব্দটি এসেছে হিব্রু ভাষার কোরবান শব্দ আর সিরিয়ার ভাষার কুরবানা শব্দ যোগে যার অর্থ দাঁড়ায় কারো নিকটবর্তী হওয়।কিন্তু আরবিতে কুরবানী  কোন শব্দ  নেই। তবে কুরবান শব্দ আছে।যার অর্থ নৈকট্য সান্নিধ্য পাওয়া।অর্থাৎ কুরবান এর রূপান্তরিত রূপ হল কুরবানী।ইসলামের পরিভাষায় কুরবানী হলো আল্লাহর নৈকট্যে যাওয়া বা আল্লাহ তায়ালার নিকটবর্তী হওয়া।আবার ইসলামের জন্য শহীদ হওয়াকেও কুরবানী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।এছাড়াও আল্লাহর রাস্তায় দান করে কেউ কোরবানি বলা হয়।কিন্তু বর্তমান সময়ে কুরবানী বলতে বোঝায় হিজরী বর্ষপঞ্জিকায় ১২ তম মাস জিলহজ্জ মাসের ১০-১২তারিখ বিকেল পর্যন্ত  এই সময়ের মধ্যে আল্লাহকে খুশি করার জন্য নিজের পছন্দের পশু কে জবেহ করা কে কুরবানী বলে।তবে কুরআন শরীফে কোরবানির কথা তিনটি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে একটি ব্যবহৃত হয়েছে পশু জবেহ করা বুঝাইতে বাকি দুই  বার আআল্লাহর নৈকট্য লাভের ক্ষেত্রে ব্যবহারিত হয়েছে।

কুরবানির ইতিহাসঃ কুরবানির প্রথা ইসলাম ধর্মে বেশ পুরাতন আদম(আঃ) এর দুই পুত্র হাবিল ও কাবিল দুই ভাই কুরবানী করে। তাদের মধ্যে হাবিল এর কুরবানি কবুল হয়।কারণ তার কুরবানির পশু আল্লাহ তাআলা আগুন দিয়ে পুরিয়ে দেয়, অন্যদিকে  কাবিলের কুরবানির শস্য যেমন ছিল তেমনি থাকে অর্থাৎ তার কুরবানি আল্লাহ তাআলা কবুল করেনি। এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন


وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ ابْنَيْ آدَمَ بِالْحَقِّ إِذْ قَرَّبَا قُرْبَاناً فَتُقُبِّلَ مِنْ أَحَدِهِمَا وَلَمْ يُتَقَبَّلْ مِنْ الآخَرِ قَالَ لأَقْتُلَنَّكَ قَالَ إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللهُ مِنْ الْمُتَّقِينَ
আদম (আলাইহিস সালাম)-এর দুই পুত্রের (হাবিল ও কাবিলের) বৃত্তান্ত তুমি তাদেরকে যথাযথভাবে শোনাও। যখন তারা উভয়ে কুরবানি করেছিল। তখন একজনের কুরবানী কবুল হল এবং অন্য জনের কুরবানি কবুল হল না। (তাদের একজন) বলল, আমি তোমাকে অবশ্যই হত্যা করব। (অপরজন) বলল, আল্লাহ তো সংযমীদের কুরবানিই কবুল করে থাকেন।’ (সুরা মায়েদা : আয়াত ২৭)

 এরপর কুরবানি নিয়ে ইসলাম এ সবথেকে বড় ঘটনা হল ইব্রাহিম (আ) এর জীবনের ঘটনা। তিনি আল্লাহ কে খুশি করতে নিজের ছেলে কে কুরবানি করতে গিয়েছিলেন। তাঁর পুত্র যখন হাঁটা চলার উপযোগী হল তখন  মহান আল্লাহ তা’আলা ইসলামের রাসুল হযরত ইব্রাহিম (আঃ)) কে স্বপ্নযোগে তাঁর সবচেয়ে প্রিয় বস্তুটি কুরবানি করার নির্দেশ দেনঃ “তুমি তোমার প্রিয় বস্তু আল্লাহর নামে কোরবানি কর”।হযরত ইব্রাহীম (আঃ) স্বপ্নে এ আদেশ পেয়ে ১০টি উট কোরবানি করলেন। পুনরায় তিনি একই স্বপ্ন দেখলেন। ইব্রাহীম আবার ১০০টি উট কোরবানি করেন। এরপরেও তিনি একই স্বপ্ন দেখে ভাবলেন, আমার কাছে তো এ মুহূর্তে প্রিয় পুত্র হযরত ঈসমাইল (আ.) ছাড়া আর কোনো প্রিয় বস্তু নেই। তখন তিনি পুত্রকে কোরবানির উদ্দেশ্যে আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। যখন ইব্রাহীম আরাফাত পর্বতের উপর তাঁর পুত্রকে কোরবানি দেয়ার জন্য গলদেশে ছুরি চালানোর চেষ্টা করেন, তখন তিনি বিস্মিত হয়ে দেখেন যে তাঁর পুত্রের পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়েছে এবং তাঁর পুত্রের কোন ক্ষতি হয়নি। এই ঘটনাকে স্মরণ করে সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কুরবানি  করে

এ বিষয়ে কুরআনে উল্লেখ আছে


فَلَمَّا بَلَغَ مَعَهُ السَّعۡیَ قَالَ یٰبُنَیَّ اِنِّیۡۤ اَرٰی فِی الۡمَنَامِ اَنِّیۡۤ اَذۡبَحُکَ فَانۡظُرۡ مَاذَا تَرٰی ؕ قَالَ یٰۤاَبَتِ افۡعَلۡ مَا تُؤۡمَرُ ۫ سَتَجِدُنِیۡۤ اِنۡ شَآءَ اللّٰهُ مِنَ الصّٰبِرِیۡنَ
‘অতঃপর যখন সে তার সাথে চলাফেরা করার বয়সে পৌঁছল, তখন সে বলল, ‘হে প্রিয় বৎস, আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি তোমাকে যবেহ করছি, অতএব দেখ তোমার কী অভিমত?; সে বলল, ‘হে আমার পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, আপনি তাই করুন। আমাকে ইনশাআল্লাহ আপনি অবশ্যই ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন।’ (সুরা সাফফাত : আয়াত ১০২)

এই ঘটনার পর থেকেই মূলত ১০ই জিলহজ্জ কুরবানি করা হয়। তবে কুরবানি প্রত্যেক জাতির উপর কুরবানি ছিল এটি কোনো নতুন করে কোনো জাতির ওপর চাপানো হয়নি এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে স্পষ্ট করে বলেন  যে


وَلِكُلِّ أُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنْسَكاً لِيَذْكُرُوا اسْمَ اللهِ عَلَى مَا رَزَقَهُمْ مِنْ بَهِيمَةِ الأَنْعَامِ فَإِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ فَلَهُ أَسْلِمُوا وَبَشِّرْ الْمُخْبِتِينَ
‘আমি প্রতিটি সম্প্রদায়ের জন্য (কুরবানির) নিয়ম করে দিয়েছি। তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু হতে যে রিজিক দেওয়া হয়েছে সেগুলোর উপর তারা যেন আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে (এই বিভিন্ন নিয়ম-পদ্ধতির মূল লক্ষ্য কিন্তু এক- আল্লাহর নির্দেশ পালন)। কারণ তোমাদের মাবুদই একমাত্র উপাস্য। কাজেই তাঁর কাছেই আত্মসমর্পণ কর আর সুসংবাদ দাও সেই বিনীতদেরকে।’ (সুরা হজ : আয়াত ৩৪)

তাই শেষ নবির উম্মত হিসেবে আমাদেরকেও আল্লাহর নামে কুরবানি করার হুকুম দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা  আমাদের তা অব্যশই মানতে হবে।

কুরবানির নিয়মঃ  কুরবানির করার সময় হল ১০-১২ই জিলহজ্জ বিকেল পর্যন্ত। চতুস্পদ কোন জন্তু জবেহ করার মধ্যে দিয়ে কুরবানি করা হয় তবে  ১০ই জিলহজ্জ ঈদুল আজহার নামাজ এর পর কুরবানির করা ভালো। ফিকাহ শাস্ত্র মেনে নেয় যে কুরবানি করতে হবে জবেহর নিয়ম মেনে চতুস্পদ গৃহপালিত কোনো হালাল পশু দিয়ে কুরবানি করতে হবে।

কোন ব্যাক্তির কাছে যদি নিসাব (এক বছর থাকতে হবে না) পরিমান সম্পদ থাকে তার সকল পারিবারিক খরচ মিটানোর পর তার জন্য কুরবানি ফরজ। এমন কি কেউ যদি ১২ ই জিলহজ্জ পর্যন্ত নিসাব পরিমান সম্পদ এর মালিক হয় তার জন্যেও কুরবানি ফরজ। নিসাব পরিমান সম্পদ হল সাড়ে সাত ভরি সোনা বা বায়ান্ন তোলা রুপা মূল্যের সমান সম্পদ থাকে তবে তাকে কুরবানি করতে হবে।তবে কুরবানি করার অর্থ ইসলামি আইনে  বৈধ হতে হবে। কুরবানির পশু হবে গরু,ছাগল,দুম্বা,উট,ভেড়া হতে হবে। শারীরিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ সবল প্রানী কুরবানি করতে হবে।গরু বা মহিষ হলে ২বছর পূর্ন হতে হবে বা দুই দাঁত উঠছে এমন হতে হবে।উট হলে ৫বছর। আর ছাগল এক বছর তবে যদি ছয় মাসের  ছাগলকে দেখে মনে হয় এক বছরের তবে সেই ছাগল দ্বারা কুরবানী করা যাবে। গরু মহিষ ও উটের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৭ জন মিলে শরিক হয়ে কুরবানী করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন সাতজনের উপার্জিত অর্থ হালাল হালাল হতে হবে। আর ছাগল দুম্বার ক্ষেত্রে একা একটি কুরবানী করতে হবে।

কুরবানীর শিক্ষাঃ     কুরবানীর প্রধান শিক্ষা হলো তাকওয়া অর্জন করা। আল্লাহতালা কোরবানির মাধ্যমে দেখতে চান যে তার কোন  বান্দা তার প্রতি অধিক তাকওয়াবান ।

আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন

কিন্তু মনে রেখো কোরবানির মাংস বা রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, আল্লাহর কাছে পৌঁছায় শুধু তোমাদের নিষ্ঠাপূর্ণ আল্লাহ-সচেতনতা। এই লক্ষ্যেই কোরবানির পশুগুলোকে তোমাদের অধীন করে দেয়া হয়েছে। অতএব আল্লাহ তোমাদের সৎপথ প্রদর্শনের মাধ্যমে যে কল্যাণ দিয়েছেন, সেজন্যে তোমরা আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করো। হে নবী! আপনি সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ দিন যে, আল্লাহ বিশ্বাসীদের রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোন বিশ্বাসঘাতক, অকৃতজ্ঞকে পছন্দ করেন না। (সূরা হজ, আয়াত ৩৭-৩৮)

 আমরা গরীব মানুষের সাথে খাবার ভাগ করে নিতে পারি শিক্ষা আমাদের কোরবানি দেয়। এ ছাড়া একটা দিন ভালো খাবে  সে ব্যবস্থাও আল্লাহতালা এটির মাধ্যমে করেছেন। আল্লাহ তাআলা কুরআনে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে

“কোরবানির পশুকে আল্লাহ তাঁর মহিমার প্রতীক করেছেন। তোমাদের জন্যে এতে রয়েছে বিপুল কল্যাণ। অতএব এগুলোকে সারিবদ্ধভাবে বাঁধা অবস্থায় এদের জবাই করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করো। এরপর এরা যখন জমিনে লুটিয়ে পড়ে, তখন তা থেকে মাংস সংগ্রহ করে তোমরা খাও এবং কেউ চাক না চাক সবাইকে খাওয়াও। এভাবেই আমি গবাদি পশুগুলোকে তোমাদের প্রয়োজনের অধীন করে দিয়েছি, যাতে তোমরা শুকরিয়া আদায় করো।” (সূরা হজ, আয়াত ৩৬)

 সুতরাং কুরবানীর মাধ্যমে আল্লাহতালা আমাদের আমাদের শিক্ষা দেয়  তোমরা একে অন্যের প্রতি সহনশীল হও এবং পরস্পর ভাই ভাই। সকল রাগ হিংসা ভুলে গিয়ে একজন ভালো মানুষ হওয়া এবং নিজের পশুত্বকে বিসর্জন দেওয়া কুরবানীর শিক্ষা। সর্বোপরি আল্লাহর তাকওয়াবান বান্দা হয়ে ওঠা

বর্তমান সময়ে কোরবানিঃ    বর্তমানে লোক দেখানো হয়ে যাচ্ছে। কারণ  ফেসবুক অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ক্রয় করা কুরবানীর পশুর দাম সহ আপলোড করা হয় যার মাধ্যমে তার ক্ষমতা দেখানো হয়। এছাড়াও গরুর পায়ে পরিয়ে ঘুঙুর পরিয়ে পুরো এলাকাজুড়ে  জানানো হয় যে তারা বড় গরু কিনেছে। কিন্তু এসব কাজের ফলে যে ব্যক্তি কম সামর্থ্যবান তাকে হেয় করা হয়। ইসলাম কখনো কোন ব্যক্তি কে সমর্থন করেনা তাই তাদের কোরবানি কবুল  হওয়ার সম্ভাবনা কম। এছাড়াও শহরের মতো দেখা যায় যে সবচেয়ে বড়  গরু কেনার প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আমাদেরকে প্রতিযোগিতা  করতে হবে যে আপনাকে কতটা তাকওয়াবান। আল্লাহ তাআলা কুরবানীর মাধ্যমে তাঁর বান্দার তাকওয়া দেখতে চান।নিজের কুরবানীর পশু  নিজে জবেহ  করা উত্তম এটা এখন আর প্রায় হয়ই না, সামর্থ থাকা সত্ত্বেও অনেকেই নিজে করবো নিজে করেন না।

উপসংহারঃ  আমাদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে কুরবানী করতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।কুরবানীর বিধান আল্লাহ তাআলার। আমাদের কুরবানী যেন লোক দেখা না হয়  সে দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।

আল্লাহ তাআলা আমাদের কুরআন সতর্ক করে বলেছেন যে,

অতএব হে মানুষ! আল্লাহ-সচেতন হও। আল্লাহর ধর্মবিধান লঙ্ঘন হতে দূরে থাকো। জেনে রাখো, আল্লাহ মন্দ কাজের শাস্তিদানে কঠোর। (সূরা বাকারা, আয়াত ১৯৬)

তাই আমরা যেন সওয়াব এর আশায় গুনাহের  ভাগিদার না হই। আমরা৷ যা করব তা আল্লাহর জন্য করব। তা না হলে আল্লাহর কঠিন বিচারের সম্মুখীন হতে হবে আল্লাহ তাআলা আমাদের হুশিয়ার করে কুরআনে বলেন,

হে নবী! ওদের বলুন, আমার সালাত, আমার কোরবানি, আমার জীবন, আমার মরণ-আমার সবকিছুই বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহরই জন্যে। তিনি একক ও অদ্বিতীয়। এ আদেশই আমি পেয়েছি। আমি সমর্পিতদের মধ্যে প্রথম।’ (সূরা আনআম, আয়াত ১৬২-১৬৩

রচনা প্রতিযোগিতায় খ-গ্রুপে তৃতীয় স্থান অধিকারী

মোঃ সানজিদুল ইসলাম (জুন্নুন)

একাদশ শ্রেনী,

আইডিয়াল কলেজ(বিজ্ঞান বিভাগ)

ধানমন্ডি ঢাকা