প্রতি বছর মাদকের ৬০ হাজার কোটি টাকা নষ্ট

প্রতি বছর মাদকের ৬০ হাজার কোটি টাকা নষ্ট

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শামসুল হক টুকু বক্তব্য রাখছেন।

দেশে প্রতি বছর মাদকের পেছনে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে। মাদকাসক্ত রয়েছে প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ লাখ। দিন দিন নারী ও শিশুদের মধ্যে মাদকাসক্তের সংখ্যা উল্লেখ জনক হারে বাড়ছে। বর্তমানে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও খুব সহজে ইয়াবা গ্রহণ করছে। মেধাবী শিক্ষার্থীরা ঝড়ে পড়ছে। এই মাদকাসক্তের কারণে গদ ১০ বছরে ২০০ মা-বাবা খুনের ঘটনা ঘটেছে।

রবিবার (১ নভেম্বর) সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত ‘মাদক নিয়ন্ত্রণে ডোপ টেস্ট- এই মুহূর্তে করণীয়’ শীর্ষক মিট দ্য প্রেসে এ তথ্য জানানো হয়। শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাস এবং সমাজকল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস) এর আয়োজন করে। একাত্তর টিভির বার্তা সম্পাদক পলাশ আহসান ও পার্লামেন্টনিউজবিডি.কমের সম্পাদক সাকিলা পারভীন প্রবন্ধটি তৈরি করেন। এটি সঞ্চালনা করেন সিনিয়র সাংবাদিক নিখিল ভদ্র।

প্রবন্ধে আরও উল্লেখ করা হয়, মাদকের ভয়াবহতার চিত্রটা বেশ পরিষ্কার। গণমাধ্যমগুলোই বলছে দু-একটি বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া, আজ দেশে যত অপরাধ হচ্ছে প্রতিটির গোড়া মাদকের ঘরে। এই যে গ্যাঙ নামের অপসংস্কৃতি- এই গ্যাঙ তৈরির পেছনেও রয়েছে মাদক। মাদকের কারণে উচ্ছনে যাচ্ছে বহু মেধাবী শিক্ষার্থী। ভাঙছে সমাজ, সংসার ও পরিবার। মাদকের টাকা জোগাড় করতে মা কিংবা বাবার গলায় ছুরি ধরছে সন্তান। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছুরি বসিয়ে দেয়ার ঘটনাও উঠে এসেছে গণমাধ্যমগুলোতে। ভয়াবহ সব উদাহরণ প্রকাশ হচ্ছে প্রতিদিনের খবরে। খোদ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের হিসাবে দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ। এর তিনভাগের দুই ভাগই তরুণ। একসময় ফেনসিডিল, হেরোইনের মতো মাদক বেশি থাকলেও, এখন তার জায়গা দখল করেছে ইয়াবা। কারণ এটি সহজেই বহন করা যায়।

প্রবন্ধে আরও বলা হয় বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ২৪ ধরনের মাদক উদ্ধার হয়েছে। এসব মাদক ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকা থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

পাঁচ শতাধিক মাদকাসক্তের ওপর জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিন গড়ে তাদের ১৫০ টাকার মাদক লাগে। এ হিসাবে একজন মাদকাসক্ত বছরে ৫৪ হাজার ৭৫০ টাকার মাদকের জন্য ব্যয় করে। ২৫ লাখ মাদকাসক্ত বছরে ১৩ হাজার কোটি টাকার মাদক সেবন করে। এসব মাদকের পুরোটাই অবৈধভাবে দেশে আসছে। পাচার হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শামসুল হক টুকু বলেন, শুধু চাকরি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, গাড়ির ড্রাইভার ও পুলিশদের ডোপ টেস্ট নয়, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ডোপ টেস্টের আওতায় আনতে হবে। এটি করতে হবে একটি অধিদফতর গঠনের মাধ্যমে। যে প্রতিষ্ঠান এই ডোপ টেস্টের মান বজায় রাখার ক্ষেত্রে কঠোর ভূমিকা পালন করবে।