হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৩ আসামি খালাস

হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৩ আসামি খালাস

ফাইল ফটো

আজ মাননীয় বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ এবং মাননীয় বিচারপতি এ, এস, এম আব্দুল মোবিন-এর দ্বৈত বেঞ্চ ডেথ রেফারেন্স নামঞ্জুর এবং আপীল মঞ্জুর করে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত তিন আাসামি আব্দুল খালেক, আব্দুশ শুকুর এবং বাহাদূরের মৃত্যুদণ্ডের সাজা বাতিল করে রায় প্রদান করেন।

মাননীয় আদালতে আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। সাথে ছিলেন আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন ও মোহাম্মদ নোয়াব আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানীতে অংশ নেন।

রায় ঘোষণার পর আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদেরকে জানান, ২০১৪ সালের ৪ জুলাই কক্সবাজার সদর থানায় অবস্থিত হাজী হাসান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নার্সারি শ্রেণীর ছাত্র ৬ বছরের শিশু মো. হৃদয় স্কুল ছুটি শেষে বাসায় ফেরার পথে তার স্কুলের সামনে রাস্তার উপর থেকে অপহরণের শিকার হয়। অপহরণকারীরা হৃদয়ের বাবার কাছে ফোনের মাধ্যমে তিন লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপনের টাকা নিতে আসা জসীম হৃদয়ের বাবা ও তার সাথে থাকা লোকজনের কাছে ধরা পড়ে। সে জানায় তাকে বার্মাইয়া ইয়াছিন, মো. আলম, মো. আলী মুন্না ও মোঃ মাসুম মুক্তিপণের টাকা গ্রহণ করতে পাঠিয়েছে।

পরদিন সকাল ৭ টার সময় হোটেল ওশান প্যারাডাইসের পিছনে সাগর সৈকতে হৃদয়ের লাশ পাওয়া যায়। ৬ জুলাই ২০১৪ সালে হৃদয়ের বাবা মো. নুরুল আলম বাদী হয়ে ধৃত আসামি জসিমসহ আরো চারজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করেন। আসামি তালিকায় হৃদয়ের আপন চাচার নামও ছিল। তদন্ত কর্মকর্তা চার্জশিটে জসীম ছাড়া এজাহারে উল্লেখিত অন্য আসামিদের নাম বাদ দিয়ে ট্রলার চালক আব্দুল খালেক, রিকশাচালক বাহাদুর ও শুকুর মিয়ার নাম উল্লেখ করেন। আব্দুল খালেক ও শুকুর মিয়া মিয়ানমারের নাগরিক। আসামি আব্দুল খালেক ও বাহাদুর মিয়া বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহানারা ফেরদৌসের নিকট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ২০১৫ সালের ৭ জুন কক্সবাজারের বিজ্ঞ দায়রা জজ মো. সাদিকুল ইসলাম তালুকদার রিকশাচালক জসীমকে মুক্তি দেন এবং বাকি তিনজন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। আসামি আব্দুল খালেক জেলখানা হতে জেল আপীল এবং পরবর্তীতে নিয়মিত আপীল দায়ের করেন।

মাননীয় আদালতে শুনানির সময় আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির আব্দুল খালেকের পক্ষে উপস্থিত হয়ে নিবেদন করে বলেন, মামলাটি সম্পূর্ণ সাক্ষ্য-প্রমাণহীন। তিনি আদালতের নজরে প্রসিকিউশনের অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রমাণাদির বিষয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। মামলার একমাত্র প্রমাণ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি উল্লেখ করে শিশির মনির বলেন, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি জোর করে আদায় করা হয়েছে এবং স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের সময় ম্যাজিস্ট্রেট কক্ষে আসামি আব্দুল খালেক ও বাহাদুর উভয়ই একই সময়ে উপস্থিত ছিলেন। তাই এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আইনের চোখে কোন জবানবন্দিই নয়। দীর্ঘ শুনানি শেষে মাননীয় আদালত আজ রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন।