পাবনা পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এগিয়ে

পাবনা পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এগিয়ে

স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ উদ্দিন প্রধান

শনিবার তৃতীয় দফায় পাবনা পৌরসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহণের শেষে ৩৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৫টি কেন্দ্রের ফলাফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী ( আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী) এগিয়ে রয়েছেন। ২৫ কেন্দ্রে ফলাফলে দেখা যায়, স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ উদ্দিন প্রধান পেয়েছেন ১৮,৭৪৫ ভোট এবং আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী অঅলী মর্তুজা বিশ্বাস সনি পান ১২,১৭৬ ভোট।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ভোট গণনা চলছিল। যাতে কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশের টহল দিতে দেখা যায়।

এর আগে আলোচিত পাবনা পৌরসভার নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে প্রশাসনের কড়াকড়ি ও তৎপরতা চোখে পড়ার মতো ছিল। সকল কেন্দ্রের সামনেই পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যদের গুরুত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। প্রতিটি কেন্দ্রের সামনে অন্ত ৫০ জন আইনশৃঙ্লা বাহিনীর সদস্য দায়িত্বে ছিলেন। কেন্দ্রে সামনে বা আশপাশে ভোটার ছাড়া কাউকে দেখলেও সরিয়ে  দেয়া হয়েছে। 
এছাড়াও দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও সারাক্ষণ কেন্দ্রের সামনে দায়িত্ব পালন করেছেন। শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও অলিগলিতে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছিল। বিপুল পরিমাণ পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যরা পুরো শহর টহল  দেয়।  প্রশাসনের এমন উদ্যোগ ও ব্যবস্থাকে সাধারণ মানুষ সাধুবাদ দিচ্ছেন।

ভোটাররা বলেন, আসলে বর্তমান সময়ে আমরা এমন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট আশা করিনি। বিশেষ করে বৃহস্পতিবারসহ গত কয়েকদিনে পাবনায় যে পরিমাণে আতঙ্ক বিরাজ করছিল, তাতে ভোট দেয়ার আগ্রহই হারিয়ে ফেলেছিলাম, কিন্তু সকালের দিকে পরিবেশ সুন্দর দেখায় ভোট দিতে এসেছি। কোন বাধা ছাড়াই যেকোনো প্রতীকে ভোট দেয় সম্ভব হয়েছে। এতে প্রশাসনও বেশ সহযোগিতা করছেন।

শহরের বিশিষ্ট নাগরিক ও প্রবীণ ভোটার মাহবুব-উল আলম বলেন, আমার দেখা স্বাধীনতার পর এই প্রথম সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট অনুষ্ঠিত হলো। এমন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।

এদিকে নির্বাচন নিয়ে সব প্রার্থী ও তাদের পোলিং এজেন্টরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। সাধারণ ভোটাররাও সন্তষ্টি প্রকাশ করেছেন। ভোটাররা বলছেন, পাবনায় গত ১২ বছরে এমন নজিরবিহীন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ হয়নি। এজন্য প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান তারা।

আলোচিত এই নির্বাচনে ৫ মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেণ। তারা হলেন- ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা যুবলীগের আহবায়ক আলী মুতর্জা সনি বিশ্বাস ( নৌকা) এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি শরিফ উদ্দিন প্রধান (নারিকেল গাছ), বিএনপির মনোনীত জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক এডওয়ার্ড কলেজের ভিপি নূর মোহম্মদ মাসুম বগা (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি মনোনীত চৌধুরী মোহম্মদ মাহাবুবুল হক (লাঙ্গল) , ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত আবু বক্কর সিদ্দীক (হাতপাখা)।
উল্লেখ্য, পৌরসভার ৩৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হয়। মোট ভোটার ১ লাখ ১২ হাজার ২৪৪ জন। মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৬৬ জন, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।