সুদানে তিন দিনে দেড় হাজার মানুষকে হত্যা

সুদানে তিন দিনে দেড় হাজার মানুষকে হত্যা

সংগৃহীত ছবি

সুদানের দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশার শহরে ভয়াবহ গণহত্যার চিত্র উঠে এসেছে। আবুবকর আহমেদ নামের সরকারি বাহিনীর এক সদস্য আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) বেসামরিক মানুষদের নির্বিচারে হত্যা করেছে।

তিনি বলেন, দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধে সেনাবাহিনীর সহযোগী “পপুলার রেজিস্ট্যান্স” নামে স্থানীয় প্রতিরক্ষা গোষ্ঠীর হয়ে ৫৫০ দিন ধরে শহর রক্ষায় লড়েছেন। কিন্তু ২৬ অক্টোবর এল-ফাশার পতনের পর সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং শহর থেকে সেনাদের সরিয়ে নেওয়ার চুক্তি হয়। এতে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার সাধারণ মানুষ আরএসএফের সামনে অসহায় হয়ে পড়ে।

আহমেদ বলেন, আরএসএফ নির্মমভাবে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে, তাদের মরদেহ রাস্তায় ফেলে রেখেছে। তারা কারও প্রতি দয়া দেখায়নি। তিনি নিজেও পেটে রকেট হামলার শার্পনেলে আহত হয়ে প্রাণে বেঁচে যান।

তিন দিনে নিহত দেড় হাজার
স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা ডক্টরস নেটওয়ার্ক জানায়, শহর দখলের পর প্রথম তিন দিনে অন্তত দেড় হাজার মানুষকে হত্যা করেছে আরএসএফ, যার মধ্যে স্থানীয় আল-সৌদ হাসপাতালের ৪৬০ রোগী ও তাদের স্বজনও রয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। আল জাজিরার নিজস্ব যাচাই ইউনিট সানাদ বেশ কয়েকটি ভিডিও যাচাই করেছে, যেখানে দেখা যায় আরএসএফ সেনারা মৃতদেহের স্তূপের পাশে দাঁড়িয়ে আছে এবং তারা নিরস্ত্র যুবকদের সারিবদ্ধভাবে গুলি করে হত্যা করছে।

এই গণহত্যার পর ৩৩ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে শহরটি ছেড়ে। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছে পাশের তাওইলা ও টাইনের মতো শহরে, যা প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে। তবে অধিকাংশ মানুষ এখনও শহরের ভেতরে আটকা, ঘরে লুকিয়ে রয়েছে বা মরুভূমি পেরিয়ে পালানোর চেষ্টা করছে।

জাতিগত নিধনের অভিযোগ
আরএসএফ নেতা মোহাম্মদ হামদান হেমেদতি দাগালো বুধবার এক বক্তৃতায় জানিয়েছেন, তিনি সহিংসতার অভিযোগ তদন্ত করবেন। তবে প্রত্যক্ষদর্শী ও বেঁচে ফেরা মানুষদের মতে, এটি অ-আরব জনগোষ্ঠীকে জাতিগতভাবে নিধন করার পরিকল্পিত প্রচেষ্টা।

ইয়েল হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব (এইচআরএল) তাদের ২৮ অক্টোবরের প্রতিবেদনে বলেছে, পালিয়ে যাওয়া মানুষদেরও গণহারে হত্যা করছে আরএসএফ। তবে, স্যাটেলাইট ছবিতে হত্যার প্রকৃত পরিমাণ পুরোপুরি বোঝানো সম্ভব নয়।