মায়ানমারে সেনার গুলিতে নিহত আরও ৯

মায়ানমারে সেনার গুলিতে নিহত আরও ৯

গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে রয়েছেন এক বিক্ষোভকারী- ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের মায়াং প্রদেশে একটি প্রতিবাদ মিছিলে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রের খবর, ৯ জন নিহত হয়েছেন। অনেকে আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দেশটিতে প্রতিবাদ মিছিলে গণতন্ত্রকামী জনতার উপর গুলি চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

সেনা অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি মায়ানমারের দখল নিয়েছিল সামরিক বাহিনী। তারই প্রতিবাদে দফায় দফায় বিভিন্ন শহরে রাস্তায় নেমেছেন গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকারীরা। এখন কড়া হাতে সেই বিক্ষোভ দমন করতে চাইছে সেনা। বুধবার পর্যন্ত মায়ানমার জুড়ে ৬০ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছিল। ধৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছিল ২ হাজার। ফের ন’জন নিহত হওয়ায় মৃতের তালিকা দীর্ঘ হল।

এ দিন মায়াংয়ের মিছিলে থাকা এক যুবক বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলাম। পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাস আর রবার বুলেট ছুঁড়ল। তার পর ছুটে এল গুলি! চোখের সামনে মরে গেল আমার এক বন্ধু।’’

গত বছর নভেম্বরে সাধারণ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতে ফের মায়ানমারের ক্ষমতায় এসেছিল অন্যতম রাজনৈতিক দল এনএলডি। কিন্তু সেই ভোটে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ১ ফেব্রুয়ারি ক্ষমতার দখল নেয় সেনা তথা জুন্টা সরকার। বৃহস্পতিবার জুন্টা সরকার এনএলডি-এর নজরবন্দি নেত্রী আউং সান সু চি এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে। তাদের দাবি, সরকারে থাকাকালীন ৬ লক্ষ ডলার এবং বিপুল সোনার বেআইনি লেনদেন করেছেন সু চি। তা ছাড়া, নিবার্চন প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি নিয়ে সেনার অভিযোগ অগ্রাহ্য করতে নির্বাচন কমিশনকে চাপ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট। একইসঙ্গে এ দিন জঙ্গি সংগঠনের তালিকা থেকে রাখাইনের বিক্ষুব্ধ ‘আরাকান আর্মি’কে (এএ) বাদ দেওয়ার কথা জানিয়েছে জুন্টা সরকার। সু চি-র জমানায় এএ-কে জঙ্গি সংগঠনের তকমা দিয়েছিল এনএলডি। অনেকের মতে, বিক্ষুব্ধ রাখাইনদের পাশে পেতেই জুন্টা সরকারের এই ঘোষণা।

 বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে নিহত এক এনএলডি কর্মীর মৃতদেহের সামনে পরিজন। বৃহস্পতিবার ইয়াঙ্গনে। 
বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে নিহত এক এনএলডি কর্মীর মৃতদেহের সামনে পরিজন। বৃহস্পতিবার ইয়াঙ্গনে।
ছবি রয়টার্স।

তবে তাতে আন্তর্জাতিক স্তরে চর্চা থামছে না। গত কাল সেনার দমননীতির নিন্দা করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। অবিলম্বে এই পরিস্থিতির বদল চেয়ে এবং সু চি-সহ অন্যান্য এনএলডি নেতাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে তারা।

মায়ানমারের বন্ধুরাষ্ট্র চিনেরও সমর্থন রয়েছে তাতে। জুন্টা সরকারের শীর্ষ সামরিক নেতার দুই ছেলে এবং তাদের পরিচালিত ৬টি সংস্থারউপরে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আমেরিকা। -আনন্দবাজর