বদনাই আসাদুলের জীবিকার হাতিয়ার

বদনাই আসাদুলের জীবিকার হাতিয়ার

গান শুনে মুগ্ধ হয়ে কেউ ২ টাকা, কেউ ৫ টাকা কেউবা ১০ টাকা দেন- ছবি: ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রতিদিন এক হাতে বদনা ও অন্য হাতে রড ও মাইক নিয়ে জীবিকার সন্ধানে যায় অন্ধ আসাদুল। বাজারে গিয়ে বিভিন্ন ছন্দের সাথে তাল মিলিয়ে গান শোনান। চারপাশে বেশ ভিড় জমিয়ে বাজারে তার গান শোনেন শ্রোতারা। মনযোগ ভরে, গান শুনে মুগ্ধ হয়ে কেউ ২ টাকা, কেউ ৫ টাকা কেউবা ১০ টাকা দেন তার পাতানো গামছায়। এক বাজারে ঘন্টা খানেক গান শোনাবার পর আবার ত্যাগ করে অন্যস্থানে একই ভাবে গান শোনানোই এখন তার পেশা। 

জন্মের পর থেকে অন্ধ হলেও ভিক্ষাবৃত্তি পেশাকে বেছে নেননি আসাদুল। সম্প্রতি রাণীশংকৈল উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে গান শোনানোর সময় তার সাথে কথা হয়। তিনি জানান, তার বাড়ী ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নের বগলাডাঙ্গী বাজারে। জন্মের পর থেকে অন্ধ আসাদুল। কোন আয় রোজকার না থাকায় বদনা বাজিয়ে তিনি জীবিকা নির্বাহ করেন। আসাদুল জানান, তার বাড়ীতে দুটো কন্যা সন্তান ও আনোয়ারা নামে স্ত্রী রয়েছে। অভাবের সংসারের ভার তার ঘাড়ে। দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়ের বিভিন্ন হাট-বাজারে বদনা বাজিয়ে গান শুনিয়ে চলে তার সংসার। আসাদুলের ইচ্ছা তার দু’মেয়েকে পড়ালেখা শিখিয়ে মানুষ বানাবে। পাত্রস্থ করবে সুপাত্রের হাতে। এছাড়াও নিজের স্ত্রী’র বেশ কিছু স্বপ্ন পুরণ করতে পারেননি অভাবের তাড়নায়। সেগুলো বাস্তবায়ন করার ইচ্ছাও রয়েছে তার। 

আসাদুল জানান, তার প্রতিদিন ৫-৬’শ টাকা আয় হয় গান শুনিয়ে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও করোনাকালীন সময়ে খুব খারাপ সময় কেটেছে তার।গান শোনার রাণীশংকৈল পৌর বাজারের অনেকেই তার প্রশংসা করেছেন। তারা জানান, মানুষ এমনিতেই ভিক্ষাবৃত্তির আশ্রয় নেয়। যাদের শরীর ভালো আছে, কাজ করতে পারবে তারাও এখন ভিক্ষা করছে। অথচ আসাদুল অন্ধ হওয়া স্বত্ত্বেও ভিক্ষা করেননি। এতে বোঝা যায় ভাল মনের মানুষ সে। তার মধ্যে অনেক প্রতিভা রয়েছে। 

রাণীশংকৈল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আকাশ জানান, আমরা আসাদুলের খোঁজ খবর নিচ্ছি। যদি প্রতিবন্ধী ভাতা না হয়। তাহলে উপজেলা সমাজসেবা অফিসারকে বলে তার প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করে দিবো।