সহকর্মীদের সাথে 'অনৈতিক সম্পর্ক' না করতে সোনালী ব্যাংক কর্মীদের চিঠি

সহকর্মীদের সাথে 'অনৈতিক সম্পর্ক' না করতে সোনালী ব্যাংক কর্মীদের চিঠি

সহকর্মীদের সাথে 'অনৈতিক সম্পর্ক' না করতে সোনালী ব্যাংক কর্মীদের চিঠি

বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাংক সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের কর্মীদের একটি চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছে, যেখানে নারী-পুরুষ সব সহকর্মীর সঙ্গে পেশাদারি সম্পর্কের বাইরে ব্যক্তিগত 'অনৈতিক সম্পর্ক' না স্থাপন করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।রাষ্ট্রায়ত্ব কোন প্রতিষ্ঠানে এর আগে এ ধরণের কোন আনুষ্ঠানিক চিঠি দেয়া হয়েছে বলে শোনা যায়নি।গত ১৬ মার্চ সোনালী ব্যাংক তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে এই চিঠিটা দিয়েছে।

বেশ কয়েকটি শাখার একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে বিবিসির কথা হয়েছে। তারা তাদের শাখায় পাঠানো এরকম একটি চিঠি পড়ার পর প্রাপ্তি স্বীকারের স্বাক্ষর করেছেন বলে জানিয়েছেন।

চিঠিটির একটি কপি বিবিসির হাতে আছে, যেখানে বিষয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, "নারী সহকর্মীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্ত অবহিতকরণ"।এমন একটি চিঠি পাঠানোর কথা স্বীকার করেছেন সোনালী ব্যাংকের একজন জনসংযোগ কর্মকর্তা শামীমা নূর।

'অনৈতিক সম্পর্ক' বলতে ঠিক কী বোঝানো হয়েছে সেটা তিনি স্পষ্ট করেননি। তবে তিনি বিবিসিকে বলেন, "ব্যাংকে সম্প্রতি এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে যার ফলে অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য এই চিঠি দেয়া হয়েছে"।

তবে চিঠির ভেতরে লেখা রয়েছে, অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (সহকারী মহাব্যবস্থাপক) পদমর্যাদার একজন নির্বাহীর বিরুদ্ধে নারী সহকর্মীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনসংক্রান্ত অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হলে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সংশ্লিষ্ট নির্বাহীকে সাময়িক বরখাস্ত করাসহ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী দায়ের করার সিদ্ধান্ত প্রদান করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যাংকের একটা শাখার একজন কর্মকর্তা বলেছেন, গত সপ্তাহে তাদের শাখায় দুইদিন সময় নিয়ে সব কর্মীর কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে।

১৬ মার্চ সোনালী ব্যাংক তাদের সব শাখার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর উদ্দেশে যে চিঠি দিয়েছে সেখানে ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক সরদার মুজিবুর রহমান ও উপমহাব্যবস্থাপক মো. খায়রুল আলম স্বাক্ষর করা রয়েছে।

এ অবস্থায়, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব সহকর্মীর সঙ্গে পেশাদারি সম্পর্কের বাইরে ব্যক্তিগত অনৈতিক সম্পর্ক এড়িয়ে চলার জন্য ব্যাংকের সব পর্যায়ের নির্বাহী/কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনে চলতে সতর্ক করা হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ থেকেই রাষ্ট্রায়ত্ব খাতের একটি ব্যাংক সোনালী। ২০০৭ সালে এটিকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত করা হলেও এর শতভাগ মালিকানাই সরকারেরই হাতে।ব্যাংকটির বারোশরও বেশি শাখায় প্রায় কুড়ি হাজার কর্মী কাজ করেন।বাংলাদেশের কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানে এমন আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা দেয়ার কথা এর আগে শোনা যায়নি। কোন ব্যাংকে এ ধরণের একটি নির্দেশনা দেবার ঘটনাও নজিরবিহীন।

সূত্র : বিবিসি