এখনই লকডাউনের কথা ভাবছে না ভারত সরকার

এখনই লকডাউনের কথা ভাবছে না ভারত সরকার

এখনই লকডাউনের কথা ভাবছে না ভারত সরকার- সংগৃহীত ছবি

ভারতে করোনার ভয়াল ছোয়ায় ইতোমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৬৪ হাজার ১৪১ জনের। কোভিড-১৯ সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সঙ্গে সঙ্গেই ফের লকডাউনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আবার লকডাউন হলে সাধারণ মানুষের রুটিরুজি, শিল্প, ব্যবসা ও সামগ্রিক অর্থনীতির কী হাল হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

এই দোলাচলের মধ্যেই শনিবার (০৩ এপ্রিল) ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষস্তর থেকে আজ ইঙ্গিত মিলল, এখনই দেশ জুড়ে কোনও লকডাউনের পরিকল্পনা মোদী সরকারের নেই। বরং লকডাউনের বদলে গত বছরের তুলনায় উন্নত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ও কোভিডের টিকা দিয়েই সংক্রমণের মোকাবিলা করা যাবে বলে কেন্দ্রীয় সরকার মনে করছে।

সরকারি সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন। যে ১১টি রাজ্যের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, ক্যাবিনেট সচিব আজ সেই রাজ্যগুলির মুখ্যসচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের শীর্ষ সূত্রের বক্তব্য, অর্থনীতিতে ফের ধাক্কা এড়াতেই দেশ জুড়ে লকডাউনের কথা ভাবা হচ্ছে না।

অর্থ মন্ত্রকের আর্থিক বিষয়ক সচিব তরুণ বজাজ আজ বলেন, ‘‘ফের কোভিড সংক্রমণ সকলের কাছেই দুশ্চিন্তার। তবে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এখন আগের তুলনায় অনেক ভাল। কোভিডের টিকাও এসে গিয়েছে। তাই আমার মনে হয়, সরকার এ বার লকডাউন না করেই ভাইরাসের মোকাবিলা করবে।’’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ও স্বাস্থ্য মন্ত্রক রাজ্যগুলিতে প্রয়োজনে স্থানীয় স্তরে লকডাউন করতে বলেছে। সরকারের অন্দরমহলে দুশ্চিন্তার কারণ হল, দিল্লি ও মুম্বইয়ে লকডাউন করতে হলে তার প্রভাব গোটা দেশেই পড়বে। সামগ্রিক ভাবে নেতিবাচক বার্তা যাবে। অর্থনীতির হাল কবে আগের জায়গায় ফিরবে, তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হলে লগ্নিকারীরা পিছিয়ে যাবেন। কেন্দ্রকে স্বস্তি দিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালও আজ জানান, রাজধানীতে লকডাউন জারির পরিকল্পনা নেই।

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে জানিয়েছেন, রাজ্যের উদ্বেগজনক পরিস্থিতি বজায় থাকলেই লকডাউনের সিদ্ধান্ত হবে। আর্থিক বিষয়ক সচিব জানিয়েছেন, স্থানীয় স্তরে সাধারণ মানুষের যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণে বিধিনিষেধ তৈরি হলেও তেমন বড় ধাক্কা লাগবে না।

অর্থ বছরের শেষে মোদী সরকারের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে খবর এসেছে, ফেব্রুয়ারি মাসে পরিকাঠামো ক্ষেত্র প্রবল ভাবে সঙ্কুচিত গিয়েছে। গত ছয় মাসে এই সঙ্কোচনের হার সর্বোচ্চ। তবে সরকারকে স্বস্তি দিয়ে মার্চে জিএসটি থেকে রেকর্ড পরিমাণ আয় হয়েছে। যা থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে বাজারে যথেষ্ট কেনাবেচা হয়েছে বলে দাবি করছে অর্থ মন্ত্রক। বজাজের বক্তব্য, পরিকাঠামো ক্ষেত্রের পরিসংখ্যান চিন্তার হলেও দীর্ঘ মেয়াদে দেখা যাবে, অর্থনীতির উন্নতিই হচ্ছে। তাঁর দাবি, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ এলেও বিপদ অতিক্রম করা যাবে। -আনন্দবাজার