‘কাস্ত্রোযুগ’-এর অবসান, কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ পদে পরের প্রজন্ম

‘কাস্ত্রোযুগ’-এর অবসান, কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ পদে পরের প্রজন্ম

রাউল কাস্ত্রো- ফাইল ছবি

বিপ্লবের ভাষা দেশবাসীকে শিখিয়েছিলেন তাঁরাই। সেই কিউবায় এ বার ‘কাস্ত্রোযুগ’-এর অবসান হতে চলেছে। বছর তিনেক আগে চলে গিয়েছেন বিপ্লবের নায়ক ফিদেল কাস্ত্রো। এ বার রাজনীতি থেকে অবসর ঘোষণা করলেন তাঁর ভাই রাউল কাস্ত্রোও। কমিউনিস্ট পার্টি অব কিউবার যাবতীয় দায়দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।

২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর থেকে দেশের প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন মিগুয়েলই। এবার তাঁর হাতেই দলের নিয়ন্ত্রণ। কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ পদ ফার্স্ট সেক্রেটারির দায়িত্ব তার হাতে তুলে দেবেন রাউল। আগামী ২৯ এপ্রিল আনুষ্ঠানিক ভাবে দলের নেতৃত্ব ছাড়ছেন তিনি।

শুক্রবার থেকে কিউবায় শুরু হয়েছে পার্টি কংগ্রেস। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর এই কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। দলের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে পরবর্তী পাঁচ বছরের নীতি ও নেতৃত্বের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গতকাল এবার পার্টি কংগ্রেসের প্রথম দিনেই ৮৯ বছরের রাউল কাস্ত্রো ঘোষণা করেন, তিনি সরে দাঁড়াচ্ছেন দলের শীর্ষ পদ থেকে। এমনিতে গত বারের পার্টি কংগ্রেসেই তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন কংগ্রেসের নেতৃত্বে শেষবার দেখা যাচ্ছে সেই ‘ঐতিহাসিক প্রজন্ম’কে, যাঁরা ১৯৫৯ সালে আমেরিকা নিয়ন্ত্রিত একনায়কতন্ত্রের সমাপ্তি ঘটিয়ে বাম বিপ্লব এনেছিলেন। সেই কথা রেখে এবারের কংগ্রেসের শুরুতেই দলের শাসনভার ছেড়ে দিলেন তিনি।

তবে রাউল অবসর নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যে কিউবায় ‘কাস্ত্রোযুগ’-এর অবসান হচ্ছে, ১৯৫৯ সালে ফিদেলের হাত ধরে যার সূত্রপাত ঘটে। তবে পরবর্তী পরিস্থিতি কী হতে চলেছে, তা নিয়ে আশঙ্কায়ও রয়েছেন অনেকে। তাঁদের মতে, অতিমারি গোটা পৃথিবীকে পাল্টে দিয়েছে। ‘কাস্ত্রোযুগ’-এর অবসানে কিউবার জন্য কী অপেক্ষা করছে, তা-ই এখন দেখার।

১৯৫৯ সালে ফুলগেনশিও বাতিস্তাকে ক্ষমতাচ্যূত করে দেশে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর ১৯৬৫ সালে কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান নিযুক্ত হন ফিদেল। ২০১১ সাল পর্যন্ত সেই দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। তার পর ওই দায়িত্ব যায় রাউলের হাতে। ১৯৭৬ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দেশের প্রেসিডেন্টও ছিলেন ফিদেল। শারীরিক অসুস্থতার জেরে ভাই রাউলকে জায়গা ছেড়ে দেন তিনি। বিপ্লবের দিনেও দাদার ছায়াসঙ্গী হিসেবে সংগ্রাম চালিয়ে যান রাউল।