শান্তর সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহে বাংলাদেশ

শান্তর সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহে বাংলাদেশ

শান্তর সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহে বাংলাদেশ- সংগৃহীত ছবি

ব্যাটিং দাপটে পাল্লেকেলে টেস্টের প্রথম দিনটা বাংলাদেশেরই। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। অল্পের জন্য দশম টেস্ট সেঞ্চুরি মিস করেছেন তামিম ইকবাল। অধিনায়ক মুমিনুল হক পেয়েছেন দারুণ ফিফটি। সব মিলিয়ে ব্যাট হাতে প্রথম দিনটা শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সোনায় সোহাগা বাংলাদেশের। প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৩০২ রান।

টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শুরুটা ভালো ছিল না। দ্বিতীয় ওভারের ষষ্ঠ বলে আউট হন সাইফ হাসান। ফার্নান্দোর বলে এলবির শিকার তিনি। আম্পায়ার্স কল নট আউট ছিল। তবে লঙ্কানদের সফল রিভিউয়েতে সাজঘরে ফেরেন সাইফ, ৬ বলে শূন্য করে।
এরপরের গল্পটা শুধুই বাংলাদেশের। নাজমুল হোসেন শান্তর সাথে তামিমের দারুণ জুটি। শান্ত শান্ত মেজাজে থাকলেও তামিমের রানের গতি ছিল ওয়ানডে স্টাইলে। ৫৩ বলে তিনি তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৯তম ফিফটি।

দশম সেঞ্চুরিটা তখন অনেকদূর। কিন্তু তামিম এগুতে থাকলেন বাহারি সব শটে। কিন্তু বিধিবাম। হলো না সর্বোচ্চ টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুলকে ছুঁয়া। ব্যক্তিগত ৯০ রানে সাজঘরে ফেরেন তামিম ইকবাল। বাঁহাতি পেসার বিশ্ব ফার্নান্দোর অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্টিয়ার করার চেষ্টা করেন তামিম। বল একটু বেশি লাফিয়ে ব্যাটের কানা ছুঁয়ে আশ্রয় নেয় একমাত্র স্লিপ ফিল্ডারের হাতে। ১০১ বলে ৯০ রান করে সাজঘরে ফেরেন তামিম। তার ইনিংসে ছিল ১৫টি চারের মার।

শান্তর সাথে তামিমের জুটি থামে ১৪৪ রানে। দেশের বাইরে প্রায় ১২ বছর পর যেটি দ্বিতীয় উইকেটে বাংলাদেশের শতরানের জুটি।

তামিমের বিদায়ের পর অধিনায়ক মুমিনুলের সাথে রসায়ন জমে যায় নাজমুল হোসেন শান্তর। অবিচ্ছন্ন থেকে দুজনে রানের গতি বাড়াতে থাকেন বাংলাদেশের। একটা সময় টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটির দেখা পান নাজমুল হোসেন, ১২০ বলে। মাটি আকড়ে পড়ে থেকে সেই ফিফটিকে শতরানে রূপ দেন শান্ত চরম ধৈর্য নিয়ে। ব্যক্তিগত ৯৮ রানে শান্ত ছিলেন অনেকক্ষণ। রান আসছিল না। এরই মাঝে একটু খোচা দিতে গিয়ে বিপদ বাড়িয়েছিলেন। ভাগ্য ভালো ব্যাটে লাগেনি বল। পরেরও ওভারে আসেন ধনাঞ্জয়া। প্রথম চারটি বল রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে ঠেকালেন শান্ত। পঞ্চম বলে এক্সট্রা কাভারে দারুণ শট, বল সীমানার বাইরে। টেস্ট ক্যারিয়ারের পরম আরাধ্যের প্রথম কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরি পান শান্ত। ২৩২ বলে তিনি পার করেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার।

টেস্ট ক্যারিয়ারে শান্তর আগের সেরা ইনিংস ছিল ৭১ রানের। দারুণ সেঞ্চুরি করেও শান্তর উদযাপন ছিল খুবই সাদামাটা। এক হাতে হেলমেট, আরেক হাতে ব্যাট, তারপুর শরীরটা ঝুকিয়ে কুর্ণিশ জানালেন। ব্যস এতটুকুই।

শান্তর সেঞ্চুরির পর ফিফটির দেখা পান অধিনায়ক মুমিনুল হকও। ১১৭ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৪তম ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। ফিফটির পথে মুমিনুল হক হাকান পাঁচটি চার। ছিল না কোনো ছক্কা।

প্রথম দিনের শেষ পর্যন্ত এই জুটি ব্যাট করেছে। রান চূড়ায় বাংলাদেশ। ২৮৮ বলে ১২৬ রানে অপরাজিত আছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, ১৪টি চার ও একটি ছক্কা। ১৫০ বলে ৬৪ রানে অপরাজিত অধিনায়ক মুমিনুল হক, ৬টি চার। তৃতীয় উইকেটে জুটিতে শান্ত ও মুমিনুল যোগ করেন ১৫০ রান, ৩১১ বলে। বড় স্কোরের পথে বাংলাদেশ, তা বলাই বাহুল্য।