যশোরে সৌদি আরবের খজুরের পরীক্ষামূলক চাষ শুরু

যশোরে সৌদি আরবের খজুরের পরীক্ষামূলক চাষ শুরু

বর্তমানে দু’টি গাছে খেজুরের ফুল এসেছে- ছবি: যশোর প্রতিনিধি

যশোরে সৌদি আরবের খেজুরের পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করেছে হর্টিকালচার সেন্টার। বর্তমানে ২ টি গাছে ফুল এসেছে। ফলে এ খেজুর চাষে সাফল্যের আশা করছেন হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বিনয় কুমার সাহা। 

তিনি বলেন, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের ‘বছর ব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায়’ ২০১৭ সালের ৩০ মে সৌদি আরব থেকে  টিস্যু কালচারের ১৭টি খেজুরের চারা এনে জেলার খয়েরতলার হর্টিকালচার সেন্টারে পরীক্ষামুলকভাবে  চাষ শুরু করা হয়। তিন বছরে ফল আসার কথা থাকলেও ফল এসেছে প্রায় ৪ বছরের মাথায়। তিনি আরও বলেন,এ বছর মাত্র ২ টি গাছে ফুল এসেছে। আগামীতে আরও গাছে ফুল আসবে এবং খেজুর জন্মাবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

সৌদি আরবের মাটি হচ্ছে বালু মাটি। চারা রোপনের আগে আমাদের দেশে সৌদি আরবের মাটির মতো মাটি তৈরী করতে হয়। প্রথমে মাটি খুঁড়ে ৩ হাত লম্বা, ৩ হাত চওড়া ও ৩ হাত গর্ত করতে হয়। ঐ গর্তের মধ্যে বালু, ছাই, কোকো ডাস্ট, খৈল, ভার্মি কম্পোষ্ট সার, এছাড়া রাসায়নিক সার ইউরিয়া ও জিএসপি সার দেয়া হয়। এগুলি দেয়ার ১৫ দিন পর চারা রোপন করা হয়। চারা রোপনের ৩ বছর পর ফল আসে। এক একটি গাছে বছরে ৪০ কেজি খেজুর হয়। ৩০ থেকে ৪০ বছর এই গাছ ফল দেয়। প্রতি বছর গাছের গোড়ায় সার দিতে হয়। এই খেজুর বিভিন্ন প্রজাতির হয়। তবে যশোরে শিশি, এন, বি, এল, কেডি এই ৫ টি প্রজাতির খেজুেরর চাষ হচ্ছে।

এই গাছে ইভেল উইভিল পোকা লাগে। এ কারনে বিভিন্ন ধরনের কিটনাশক ব্যবহার করতে হয়। পোকা আক্রমন করলে গাছ মারা যায়। এজন্য গাছ গুলিকে অধিক পরিচর্যা করতে হয়। এ গাছ মোটা তাজা ও রসালো হওয়ার কারণেই পোকার আক্রমন হয়। গাছের উচ্চতা হয় ৪০ থেকে ৫০ ফিট। খেজুর চাষের জমিতে ফাঁকা জায়গা গুলিতে বিভিন্ন ধরনের শাক সব্জির চাষ করা যায়। ফলে কৃষকের বাড়তি আয় হয়।

বর্তমানে এক একটি খেজুর গাছের মূল্য ৬ হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে ৮০ টি খেজুর গাছ রোপন করা যায়। প্রতিবছর ঐ গাছগুলি থেকে ৪ টন ফল উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য হবে ৪ লক্ষ টাকা।

এই গাছ লাগিয়ে যদি সফল হওয়া যায় তাহলে  বিদেশ থেকে খেজুর আনা লাগবেনা। এখানে চারা উৎপাদনের পর চাষীদের মাঝে অল্প দামে বিতরন করা  যাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বিনয় কুমার সাহা।