দাম ভালো পাওয়ায় স্বপ্ন দেখছেন ঈশ্বরদীর লিচু চাষিরা

দাম ভাল পাওয়ায় লিচু বিখ্যাত পাবনার ঈশ্বরদীর লিচু চাষিরা আশায় বুক বাধলেও আকাশে ঘনঘটা মেঘের আনাগোনা ও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পূর্বাভাসে শঙ্কিত তারা। অনেক শঙ্কার পরও ঈশ্বরদীর মোকামে লিচু উঠতে শুরু করেছে। গত ৪ দিন ধরে মোজাফফর ( দেশী আঁটি) জাতের বিপুল পরিমাণ লিচুর বিক্রি শুরু হয়েছে। পাশাপশি বোম্বাই লিচু কেবল অল্প সংখ্যক বাগান আসতে শুরু করেছে। ঈশ্বরদীর সাহাপুর, আওতাপাড়া ও জয়নগর লিচু মোকাম ছাড়াও বাগান থেকেও লিচু বিক্রি হচ্ছে এমনটি দেখা গেল।

বোম্বাই লিচুর গুটি এবার কম এসেছে। তবে দাম বেশি পাওয়ায় আশার আলো দেখছেন লিচু চাষিরা। কারণ দেশি লিচুই আকার ভেদে মোকামে ও বাগানে ২ হাজার ৫শ’  থেকে ২ হাজার ৮শ’ টাকা প্রতি হাজার বিক্রি হচ্ছে। গত বছর বোম্বাই লিচু ১,৩০০ থেকে ১,৫০০ টাকা হাজার দামে বিক্রি হয়েছিল। বোম্বাই লিচু পুরোপুরি বাজারে আসতে এখনও ৬-৭ দিন সময় লাগবে। এই সময়ের মধ্যে ঝড়-ঝঞ্ঝা এবং বিশেষ করে বৃষ্টি হলে লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশংকা রয়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পূর্বাভোসে লিচু চাষিরা আরও বেশি আতংকিত হয়ে পড়েছেন। 

সলিমপুরের লিচু চাষি শাহমত জানান, আমরা সম্ভাব্য বৃষ্টি ও ঝড়ের শঙ্কায় রয়েছি। বৃষ্টি হলে লিচুর গোড়া পচে যাবে এবং পোকার জন্ম হবে। আর লিচুতে পোকা হলে ঝরে পড়বে এবং দামও আর ভালো পাওয়া যাবে না। আর ঝড় হলে তো সর্বনাশ হয়ে যাবে।

গত বছর ঈশ্বরদীতে ৫ শ’ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হয়েছিল। তবে কৃষক ও কৃষি অফিস বলছৈ, এবারে বোম্বাই লিচুর ফলন কম হওয়ায় তা অর্ধেকেরও নীচে নেমে আসবে। গত বছরের তুলনায় এবার লিচুর ফলন হয়েছে অর্ধেকেরও কম। কৃষকরা বলেন, এ অ লের বেশিরভাগ লিচু চাষি সারাবছর অপেক্ষা করে থাকেন লিচুর মৌসুমের জন্য।

সাহাপুর ইউপি’র চেয়ারম্যান মিনহাজ ফকির বলেন, এমন অনেক কৃষক আছেন, যারা শুধু লিচু আবাদের ওপরই নির্ভরশীল। বহু পরিবার লিচু বিক্রির টাকা দিয়ে সারা বছর চালিয়ে থাকেন। কিন্তু এবারে লিচুর জন্য বৈরী সময়। এরপর বোম্বাই লিচুর ফলন কম হওয়ায় দাম আরো বেশি অর্থাৎ প্রতি হাজার ৩,০০০ টাকারও বেশি দামে বিক্রি হওয়ার আশা করছেন কৃষকরা।

এই কম লিচু নিয়েই এখন লিচু বাজার বেশ জমজমাট। শনিবার সকালে জয়নগরের শিমুলতলা লিচুহাটে আঁটির লিচু উঠলেও বোম্বাই লিচুর আমদানি কম দেখা যায়। ভালো দাম পেলে ফলন কম হওয়ার তি কিছুটা হলেও কাটিয়ে ওঠার আশা করছেন লিচু চাষিরা। বোম্বাই লিচু বাজারে আসতে এখনও সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে বলে এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান জানান।

উল্লেখ্য, এ বছর ঈশ্বরদীতে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ করা হয়েছে। কিন্তু হত বছরের তুলনায় এবার ফলন অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে কৃষিকর্মকর্তারা জানান।