অভ্যুত্থানের পর প্রথম প্রকাশ্যে দেখা গেল সু চিকে

অভ্যুত্থানের পর প্রথম প্রকাশ্যে দেখা গেল সু চিকে

অভ্যুত্থানের পর প্রথম প্রকাশ্যে দেখা গেল সু চিকে

মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চিকে রাজধানী নেপিদোতে এক সামরিক আদালতে হাজির করা হয়েছে। সোমবার ৩০ মিনিটের এই শুনানিতে উপস্থিতির মাধ্যমে ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুতির পর প্রথম প্রকাশ্যে এলেন মিয়ানমারের সাবেক স্টেট কাউন্সিলর।

আদালতে হাজির হওয়ার পর শুনানির আগে অং সান সু চি তার আইনজীবীদের সাথে ৩০ মিনিট পরামর্শ করেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তার আইনজীবী থাই মাউং মাউং জানান, ৭৫ বছর বয়সী এই নেত্রী সুস্থই আছেন।

এর আগে অভ্যুত্থানের এক মাস পর ১ মার্চ প্রথম অং সান সু চির বিরুদ্ধে মামলার শুনানি শুরু করে সামরিক আদালত। মিয়ানমারের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার আইন, আমদানি-রপ্তানি বিষয়ক আইন ও দুর্নীতিবিরোধী আইনের অধীনে ছয়টি অভিযোগ তার বিরুদ্ধে গঠন করে আদালত।

সু চিকে বর্তমানে নেপিদোতে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। সোমবারের শুনানির আগে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাকে আদালতে যুক্ত করা হতো।

এদিকে সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) দল বিলুপ্ত করতে সামরিক জান্তা সিদ্ধান্ত নিলেও সোমবার আদালতে আইনজীবীদের সাবেক স্টেট কাউন্সিলর বলেন, এনএলডির পথ চলা অব্যাহত থাকবে।

আইনজীবী মিন মিন শোয়ে বলেন, 'তিনি বলেছেন এই পার্টি জনগণের জন্য গড়া হয়েছে। সুতরাং যতদিন জনগণ থাকবে, ততদিন এই পার্টি থাকবে।'

এদিকে মিয়ানমারের অবস্থা পর্যব্ক্ষেণকারী থাইল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) তাদের রোববারের প্রতিবেদনে জানায়, ১ ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে রোববার পর্যন্ত দেশটিতে বিক্ষোভে সামরিক জান্তার দমন অভিযানে অন্তত আট শ' ১৮ জন নিহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বিক্ষোভ সংশ্লিষ্টতায় সামরিক জান্তার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন পাঁচ হাজার তিন শ' ৯২ জন। বর্তমানে বন্দী রয়েছেন চার হাজার দুই শ' ৯৬ জন। এছাড়া গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে আরো এক হাজার আট শ' ২২ জনের নামে।

১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তাতমাদাও দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্কের জেরে এই অভ্যুত্থান ঘটায় সামরিক বাহিনী।

সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন।

সূত্র : আলজাজিরা