কিউবার বিরুদ্ধে বাইডেনের নতুন নিষেধাজ্ঞা

কিউবার বিরুদ্ধে বাইডেনের নতুন নিষেধাজ্ঞা

কিউবার বিরুদ্ধে বাইডেনের নতুন নিষেধাজ্ঞা - ছবি - সংগৃহীত

কিউবার বিরুদ্ধে এবার নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সপ্তাহখানেক ধরে দেশটির কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে দমন-পীড়নের অভিযোগে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বাইডেন প্রশাসন। একইসাথে আন্দোলনকারীদের প্রতি সমবেদনাও জানিয়েছে দেশটি।

সপ্তাহখানেক ধরে কিউবায় কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন দেশটির সাধারণ মানুষ। তবে কিউবার প্রশাসন বলপ্রয়োগ করে আন্দোলন বন্ধ করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর তাই আন্দোলন দমনের সঙ্গে জড়িত কিউবার সরকারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেই এবার নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

২২ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলনরত মানুষের ওপর যেভাবে কিউবার প্রশাসন আক্রমণ চালাচ্ছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। ৬২ বছর ধরে এই ভাবেই কণ্ঠরোধ করা হয়েছে কিউবার মানুষের। যুক্তরাষ্ট্র আন্দোলনকারীদের সমর্থন করছে।

বাইডেন আরো জানিয়েছেন, এক ব্যক্তি এবং একটি সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণের ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির হাত আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, প্রয়োজনে কিউবার বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।

উল্লেখ্য, করোনা মহামারি মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগে দেশটির কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে এসেছেন কিউবার একাংশের মানুষ। তাদের দাবি, সরকার করোনার মোকাবিলা করতে পারেনি। অন্যদিকে অর্থনীতির বেহাল অবস্থা। চাকরি নেই। খাদ্য সংকট। এই পরিস্থিতিতে সরকার কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না।

আন্দোলন শুরু হলে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নামার পরে পাল্টা পদক্ষেপ নেয় প্রশাসন। সেনাবাহিনী নামিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করার চেষ্টা করা হয়। কমিউনিস্ট পার্টির কর্মীদেরও রাস্তায় নেমে সরাসরি সংঘাতে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। গত এক সপ্তাহে বহু মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বহু বিক্ষোভকারী নিখোঁজ রয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, সেনাবাহিনীর প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতা আলভারো লোপেজের নির্দেশেই এই সব কিছু হচ্ছে। সে কারণেই তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কিউবার কমিউনিস্ট পার্টিকে কোনোদিনই ভালো চোখে দেখেনি যুক্তরাষ্ট্র। বরাবরই দ্বীপরাষ্ট্রটির ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে মার্কিন প্রশাসন। বস্তুত, ইরান, কিউবা এবং উত্তর কোরিয়ার ওপর ওয়াশিংটন সবচেয়ে বেশি নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে।

তবে বারাক ওবামার সময় এই পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছিল। ওবামা নিজে কিউবা সফরে গিয়েছিলেন। বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিলেন। অবশ্য ডোনাল্ড ট্রাম্প এসে ফের পুরনো ব্যবস্থায় ফিরে যান।

নির্বাচনী প্রচারের সময় বাইডেন জানিয়েছিলেন, কিউবা প্রসঙ্গে তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে একমত। ক্ষমতায় এলে তিনি ওবামার পথে হাঁটবেন। কিন্তু বাইডেনের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ দেখে মনে হচ্ছে, কিউবার প্রতি আরও কঠোর মনোভাবই নেবে মার্কিন প্রশাসন। -ডয়চে ভেলে