কাবুলে রয়েছেন ৯ জন বাংলাদেশী

কাবুলে রয়েছেন ৯ জন বাংলাদেশী

কাবুলে রয়েছেন ৯ জন বাংলাদেশী

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে এখন পর্যন্ত ৯ বাংলাদেশী রয়েছেন বলে তথ্য আছে বাংলাদেশ দূতাবাসে। তাদের মধ্যে ছয়জন ব্র্যাকের কর্মী, বাকি তিনজন কাবুল কারাগারে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

আফগানিস্তানে বাংলাদেশ দূতাবাসের দায়িত্বে থাকা জাহাঙ্গীর আলম গণমাধ্যমকে জানান, দেশটিতে থাকা ব্র্যাকের ছয় কর্মী সংস্থাটির আবাসিক পরিচালকের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন। বাকি তিনজন কারাগারে বন্দি ছিলেন। তালেবান যোদ্ধারা কারাগারে ঢুকে পড়ায় এক বাংলাদেশী বন্দি পালিয়ে দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন।

আফগানিস্তানে বাংলাদেশের দূতাবাস না থাকায় জাহাঙ্গীর আলম উজবেকিস্তান থেকে একইসাথে আফগানিস্তান, কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন।

ব্র্যাককর্মীদের ব্যাপারে তিনি বলেন, ঢাকার করিম শিকদার তাদের সিনিয়র কর্মী। তার সাথে কথা হয়েছে। তারা ১৮ তারিখের ফ্লাইটে দেশে ফেরার চেষ্টা করছেন।বাকি পাঁচজন হলেন- রংপুরের আসাদুজ্জামান, ঢাকার মোহাম্মদ সরফরাজ, যশোরের কামাল হোসেন, ফরিদপুর রফিকুল হক মৃধা ও নোয়াখালীর ইউসুফ হোসেন।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘কাবুলে পুল এ চরকি নামে একটি বড় জেলখানায় তিনজন বাংলাদেশী ছিলেন। তাদের একজন খুলনা জেলার মঈন আল মেসবাহ। তালেবান প্রবেশ করায় সব বন্দি পালিয়ে গেছেন, তাদের মধ্যে আমাদের মঈন আল মেসবাহও আছেন।’অন্য দুজন বন্দি ঢাকার ভাসানটেকের কাউছার সুলতানা ও নোয়াখালীর ওবায়দুল্লাহ।

তিনি আরো বলেন, তারা দুজন ভেতর থেকে বের হতে পেরেছে কি-না, আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। জানার চেষ্টা চালাচ্ছি। যিনি বের হতে সক্ষম হয়েছেন তাকে পরবর্তী ‘অ্যাভেইলেভল’ ফ্লাইটে দেশে ফিরে আসার পরামর্শ দেয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য প্রত্যাহারের পর আবারো ইসলামী সংগঠন তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ প্রায় নিয়ে ফেলেছে। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি পালিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।আফগানিস্তানের পরিস্থিতি সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর বলেন, ‘সম্ভবত শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের চেষ্টা চলছে। প্রেসিডেন্ট হয়তো রিজাইন করতে পারেন। তালেবান লিডার আব্দুল গনি বারাদারের নেতা হিসেবে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে অসমর্থিত খবরে জানা যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘নিউজ সংগ্রহ করা দুরূহ হচ্ছে। মানবাধিকার কর্মীর মাধ্যমে তথ্য নেয়ার চেষ্টা করছি। সেখানে বিদ্যুৎ না থাকায় যোগাযোগ সম্ভব হয়ে উঠছে না। কাবুলের বাইরে অন্য এলাকায় বাংলাদেশী আছে কি-না সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন রাষ্ট্রদূত। তবে +৯৯৮-৯৯৯১১৯১০২ এবং +৯৯৮-৯৭৪৪০২২০১ এই দুটি হটলাইন নম্বর চালু করে দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল জানায়, আফগানিস্তানের কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় এনজিওটির পক্ষ থেকে শামেরান আবেদ বলেন, ‘আফগানিস্তানে কর্মরত কর্মীদের ঝুঁকি নিরসন করে তাদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল।’আফগানিস্তানের ১০টি প্রদেশে প্রায় তিন হাজার ব্র্যাককর্মী রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১২ জন বাংলাদেশীসহ প্রবাসী ১৪ জনকে নিজ নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

প্রবাসী কর্মীদের মধ্যে তিনজন বাংলাদেশীসহ ৫ জন ছুটিতে দেশটির বাইরে ছিলেন, তাদের আফগানিস্তান ফিরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।বাকি ৯ জন বাংলাদেশীর মধ্যে তিনজন বিমানযোগে রওনা দিয়েছেন এবং বাকি ৬ জনের আগামী ২২ তারিখের মধ্যে রওনা দেয়ার কথা বলে জানায় ব্র্যাক।

সূত্র :  ডয়েচে ভেলে