কাবুলে বাণিজ্যিক বিমান ব্যবহার করবে যুক্তরাষ্ট্র

কাবুলে বাণিজ্যিক বিমান ব্যবহার করবে যুক্তরাষ্ট্র

কাবুলে বাণিজ্যিক বিমান ব্যবহার করবে যুক্তরাষ্ট্র

আফগানিস্তান ছাড়ার জন্য মরিয়া লোকজনকে সরিয়ে নিতে বেসরকারি বাণিজ্যিক বিমান ব্যাবহার করা হবে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দফতর পেন্টাগন জানিয়েছে, ১৮টি বিমান এসব মানুষকে আফগানিস্তানের বাইরে নিরাপদ তৃতীয় কোন দেশে পৌঁছে দেবে। খবর বিবিসির।

মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রোববার জানিয়েছে, তারা ‘সিভিল রিজার্ভ এয়ার ফ্লিট’ নামের বিশেষ ব্যবস্থা চালু করার ঘোষণা দিয়েছে। এর আওতায় আপৎকালীন সময়ের জন্য বেসরকারি বাণিজ্যিক এয়ারলাইন্স কোম্পানির বিমান ব্যবহার করতে পারে মার্কিন সরকার।

যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ এ ব্যবস্থা আরোপ করেছিল ১৯৯০-৯১ এবং ২০০৩ সালে ইরাক ও কুয়েত থেকে মানুষজনকে উদ্ধারে। ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স, আমেরিকান এয়ারলাইন্স, ডেল্টা এয়ারলাইন্স, অমনি এয়ারলাইন্স এবং হাওয়াইয়ান এয়ারলাইন্স থেকে ১৮টি বিমান নেয়া হবে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বেসরকারি বিমান ব্যাবহারের ফলে সামরিক বিমানগুলোকে কাবুল ও তার আশপাশে কাজে লাগানো সম্ভব হবে।

আগস্টের ১৫ তারিখ তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়ার পর থেকে বিমানবন্দরের হাজার হাজার আফগান দেশ ছাড়ার চেষ্টায় ভিড় করতে থাকে। একই সাথে নিজ নিজ দেশের নাগরিকদের এবং আফগান সহকর্মীদের মধ্যে যারা যোগ্য তাদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশের সরকার।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রোববার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহে ২৮ হাজারের মতো মানুষকে কাবুল থেকে সরিয়ে নিয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘কষ্ট এবং হৃদয়বিদারক দৃশ্য ছাড়া এত মানুষকে একসাথে সরিয়ে নেয়ার কোন উপায় নেই। আমাদের আরও বহুদূর যেতে হবে এবং এখনো অনেক ভুলভ্রান্তির আশঙ্কা রয়েছে।’

প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়া মানুষজনের কাগজপত্র যাচাইয়ের প্রক্রিয়া দ্রুত করার জন্য দুই ডজন দেশে বিশেষ কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘যেসব আফগান যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করেছে আমরা তাদের নতুন আবাসভূমিতে স্বাগত জানাবো।’

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভান জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে এখনো এক হাজারের মতো মার্কিন নাগরিক রয়ে গেছেন। পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট নেটো জানিয়েছে, বিমানবন্দর ও তার আশপাশে কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছে যাদের একটি অংশ ভিড়ে পিষ্ট হয়ে মারা গেছে। রোববার বিমানবন্দরের বাইরে হট্টগোলে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। বিমানবন্দরের ভিড়ে জঙ্গি বাহিনী ইসলামিক স্টেট হামলা চালাতে পারে - এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জেক সালিভান। তবে রোববার আগের কয়েকদিনের তুলনায় পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল।

যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী জেমস হিপে বলেছেন, তালেবান মানুষজনকে এখন সারি বেধে দাঁড়ানোর ব্যাপারে কাজ করছে যাতে করে কাবুল ত্যাগের প্রক্রিয়া দ্রুত হয়।

যুক্তরাজ্য ১৩ অগাস্ট থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ হাজারের কিছু বেশি মানুষকে কাবুল থেকে সরিয়ে নিয়েছে। দেশটির এক হাজারের মতো সেনা কাবুলে অবস্থান করছে। বিমানবন্দরে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে মার্কিনীদের নাটক বলে আখ্যা দিয়েছেন তালেবান বাহিনীর কর্মকর্তা আমির খান মুতাকি।

৩১শে অগাস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে তাদের লোক সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে, সেই সময়সীমা বাড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের উপর ক্রমশ চাপ বাড়ছে।