ভারত : ডেঙ্গুতে ৪৫ শিশুর মৃত্যু উত্তরপ্রদেশে, বন্ধ স্কুল

ভারত : ডেঙ্গুতে ৪৫ শিশুর মৃত্যু উত্তরপ্রদেশে, বন্ধ স্কুল

ভারত : ডেঙ্গুতে ৪৫ শিশুর মৃত্যু উত্তরপ্রদেশে, বন্ধ স্কুল

করোনার পর এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ। উত্তরপ্রদেশে একের পর এক শিশুর মৃত্যু। স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রশাসনের।বুধবার থেকে উত্তরপ্রদেশে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু শেষমুহূর্তে তা বাতিল করে দেওয়া হয়। কারণ, রাজ্যজুড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়েছে। গত ১০ দিনে শুধুমাত্র ফিরোজাবাদে ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গুতে। তার মধ্যে ৪৫ জন শিশু। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাসপাতাল ভরে গেছে ডেঙ্গু রোগীতে। বহু রোগীকে পার্শ্ববর্তী এলাকার হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হচ্ছে।

ছয় বছরের লাকিকে নিয়ে ফিরোজাবাদের হাসপাতালে গিয়েছিলেন তার বাবা-মা। তিন ধরে জ্বরে ভুগছিল লাকি। কিন্তু ফিরোজাবাদের হাসপাতাল জানিয়ে দেয়, শয্যা নেই। তাদের আগ্রার হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। রাস্তাতেই মৃত্যু হয় লাকির। একই অভিজ্ঞতা হয়েছে আরো অনেক পরিবারের।

মাত্র কয়েকমাস আগে ভয়াবহ করোনা কাটিয়ে উঠেছে উত্তরপ্রদেশ। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় তখন বেড এবং অক্সিজেনের অভাব দেখা গেছিল। প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। বহু মানুষের বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে। গঙ্গা দিয়ে ভেসে গেছে শয়ে শয়ে লাশ। গত কয়েকমাসে পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। টিকা দেওয়া হচ্ছে সকলকে। তারই মধ্যে ডেঙ্গু নতুন সমস্যা তৈরি করেছে। ফের আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকার পর উত্তরপ্রদেশের প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ১ সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে স্কুল কলেজ খোলার প্রক্রিয়া শুরু হবে। কিন্তু ডেঙ্গুর কারণে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এবারে ডেঙ্গুতে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এল কে গুপ্তা সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, ডেঙ্গুর পাশাপাশি ভাইরাল জ্বরও হচ্ছে। ফলে অনেকেই প্রথমে চিকিৎসা করাতে আসছে না। যখন আনা হচ্ছে, তখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে।

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ জানিয়েছেন, একটি বিশেষজ্ঞ দল তৈরি করা হবে। যারা গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। তবে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, ৪৫টি শিশুর মৃত্যুর পরে কেন বিশেষজ্ঞ দল তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। ডেঙ্গুর প্রকোপ তো আগেই শুরু হয়েছিল!যোগী আদিত্যনাথ যখন আগে গোরক্ষপুরের সাংসদ ছিলেন, তখন প্রতিবছর ডেঙ্গু ও তাতে মৃত্যুর প্রসঙ্গ তুলে হইচই করতেন। বারবার ব্যবস্থা নেয়ার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে বলতেন। অর্থাৎ, সমস্যা তার পুরোপুরি জানা। তা সত্ত্বেও তিনি কেন এতদিনেও ব্যবস্থা নিতে পারলেন না, সেই প্রশ্ন উঠছে।

সূত্র : ডয়েচে ভেলে