বিয়ে বিষয়ক যে আইনের প্রস্তাব করায় এমপিকে নিয়ে সংসদে হাস্যরস

বিয়ে বিষয়ক যে আইনের প্রস্তাব করায় এমপিকে নিয়ে সংসদে হাস্যরস

বিয়ে বিষয়ক যে আইনের প্রস্তাব করায় এমপিকে নিয়ে সংসদে হাস্যরস

চাকরিজীবী নারী ও পুরুষের মধ্যে বিবাহ বন্ধ করার জন্য একটি আইন প্রনয়ণের দাবি জানিয়ে শনিবার সংসদে হাস্যরসের সৃষ্টি করেছেন একজন এমপি।

বগুড়া-৭ আসনে স্বতন্ত্র এমপি রেজাউল করিম বাবলু সংসদের অধিবেশনে বলেন, "দেশে প্রচলিত একটা রেওয়াজ আছে যে চাকরিজীবী পুরুষ, চাকরিজীবী নারীকে বিয়ে করতে চায়। আবার চাকরিজীবী নারীও চাকরিজীবী পুরুষকে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু এভাবে বেকার সমস্যার সমাধান হয় না।"আইনমন্ত্রী আনিসুল হক অবশ্য তার এই প্রস্তাবকে তৎক্ষণাৎ নাকচ করে দেন এবং এটাকে 'অসাংবিধানিক' বলে মন্তব্য করেন।

রেজাউল করিম বাবলু যা বলেন:

শনিবার সংসদের অধিবেশনে রেজাউল করিম বাবলু বলেন, "মাননীয় মন্ত্রীকে আমি নিবেদন করবো এই আইনটি সুবিধাজনকভাবে প্রণয়ন করতে, যে কোনে চাকরিজীবী পুরুষ কোনো চাকরিজীবী নারীকে এবং কোনো চাকরিজীবী নারী কোনো চাকরিজীবী পুরুষকে বিয়ে করতে পারবে না।"

"এই আইন প্রণয়ন করলে বেকার সমস্যা কিছুটা হলেও লাঘব হবে", বলেন মি. করিম।এই আইনের প্রস্তাব দেয়ার পিছে আরেকটি কারণ হিসেবে মি. বাবলু বলেন, "যেই দম্পতির দুজনই চাকরি করে, সেই পরিবারের শিশু গৃহকর্মীদের দ্বারা নির্যাতিত হয়।"

সংসদে প্রতিক্রিয়া:

তার এই বক্তব্য পেশের সাথে সাথেই সংসদে উপস্থিত এমপিদের মধ্যে ব্যাপক হাস্যরসের সৃষ্টি হয়।সংসদ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত সংসদের অধিবেশনে অনেক এমপিকেই দেখা যায় সশব্দে হেসে উঠতে।আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এই প্রস্তাবের বিপরীতে বলেন, "এই রকম প্রস্তাব নিয়ে আমি এখান থেকে দুই কদমও হাঁটতে পারবে না।""এটা অসাংবিধানিক প্রস্তাব। উনি এটা এখানে কীভাবে বললেন, আমি বুঝতে পারলাম না।"

এরপর আইনমন্ত্রী মন্তব্য করেন, "আমাদের যেহেতু বাক স্বাধীনতা আছে, সেহেতু তিনি যা খুশি তাই বলতে পারেন। নিশ্চয়ই উনি যা খুশি তাইয়ের মধ্যে আছেন।""কিন্তু আমি যা খুশি তাই গ্রহণ করতে পারবো না, কারণ আমি জনপ্রতিনিধি।"

আগেও তার বক্তব্য নিয়ে সমালোচনা হয়েছে:

সংসদ টিভিতে প্রচারিত রেজাউল করিম বাবলুর প্রস্তাব এবং তার জবাবে আইনমন্ত্রীর বক্তব্য সম্বলিত ভিডিওটি এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মি. করিমের বক্তব্যের সমালোচনা করছেন।রেজাউল করিম বাবলু ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মত অংশ নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন।তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন।এর আগেও সংসদে মি. করিমের দেয়া বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

২০২০ সালের নভেম্বর মাসে মি. করিম সংসদে একটি বিলের ওপর আলোচনার সময়, ক্রমবর্ধমান ধর্ষণের ঘটনার জন্য নারীবাদীদের দায়ী করে বক্তব্য দেন।এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন মি. করিম।ওই বছরই অক্টোবর মাসে সদ্য কেনা একটি লাইসেন্সকৃত পিস্তল হাতে নিয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করার কারণেও তাকে নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়।

সূত্র : বিবিসি