চুলের আগা ফাটা রোধে করনীয়

চুলের আগা ফাটা রোধে করনীয়

চুলের আগা ফাটা রোধে করনীয়

চুলের প্রধান সমস্যাগুলোর একটি আগা ফেটে যাওয়া। অনেকেরই অভিযোগ,যেভাবেই যত্ন নেওয়া হোক না কেন,কিছুদিন পর ঠিক ফিরে আসে এই সমস্যা। পাশাপাশি এ সময় চুল দেখতে শুষ্ক,নির্জীব ও রুক্ষ লাগে এবং চুলের বৃদ্ধিও থেমে যায়। অনেকে প্রাথমিক সমাধান হিসেবে চুল ট্রিম করে নেওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু কিছুদিন পরই আবার তা ফিরে আসে। যাঁদের সমস্যা প্রকট,তাঁদের ক্ষেত্রে কন্ডিশনার,হেয়ার সিরাম ব্যবহার করেও লাভ হয় না। ঠিকভাবে যত্ন নিলে চুলের আগা ফাটা সমস্যা আর ফিরে আসবে না। এই সমস্যার মূল কারণ অপুষ্টি এবং অযত্ন। প্রথমে এই দুটি বিষয়ে সচেতন হলে চুলরে আগা ফাটা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে এবং প্রাকৃতিক অনেক উপাদানই চুলের আগা ফাটা সমাধানে কার্যকরী। নিয়মিত যত্ন এবং সঠিক খাওয়াদাওয়া সহজেই এই সমস্যাকে কাবু করতে পারে। কিছু সাধারন যত্ন ও ঘরে তৈরি হেয়ার মাস্কও হতে পারে সমাধান।

হট অয়েল ট্রিটমেন্ট

চুলের যেকোনো সমস্য প্রতিরোধের প্রাথমিক এবং সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে হট অয়েল ট্রিটমেন্ট। অতীতেও চুলে তেলের ব্যবহার ছিল অপরিহার্য। চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে অলিভ অয়েল অথবা নারকেল তেল গরম করে স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করতে হবে। পাশাপশি চুলের ডগাতেও তেল লাগাতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, চুলের গোড়া থেকে আগার দিকে তেল মালিশ করবে। খুব জোরে ঘষলে চুলের কিউটিকল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অন্তত এক ঘণ্টা চুলে তেল লাগিয়ে রাখা উচিত। এরপর মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করে হালকা গরম পানিতে ধুয়ে নিতে হবে।

কলা

চুলের যেকোনো সমস্যায় কলা দারুণ কার্যকর। আবার কলাকে বলা হয় প্রাকৃতিক কন্ডিশনার। পাশাপাশি এটি চুলের ইলাস্টিসিটি বাড়ায় এবং চুল পড়া রোধ করে। কলা চটকে সরাসরি চুলে লাগানো যেতে পারে। আবার কলা,মধু ও টক দইয়ের পেস্টও ব্যবহার করা যায়।

মরোক্কান অয়েল

চুল নরম ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করতে এই তেল দারুণ কার্যকর। এটি চুলের ড্যামেজ কমাতে সাহায্য করে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬-ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা চুলের জন্য প্রয়োজনীয়। যা চুলের গোড়া মজবুত করে। শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহারের পর চুলে তোয়ালে জড়িয়ে রাখুন, যাতে অতিরিক্ত জল শুষে নেয়। অল্প মরোক্কান অয়েল হাতে নিয়ে ভিজে চুলের মাঝামাঝি থেকে ডগা অবধি ম্যাসাজ করুন। প্রতিবার শ্যাম্পু করার পর এভাবে মরোক্কান অয়েল ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

মধু

প্রাকৃতিক গুণে সমৃদ্ধ মধু চুলের আগা ফাটা রোধ করে। টক দই ও মধু মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করে, মিশ্রণটি চুলের ডগায় লাগিয়ে আধা ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে হবে।

আর্গান অয়েল

এটি ‘লিক্যুইড গোল্ড’ নামেও পরিচিত। আর্গান বীজ থেকে এই তেল তৈরি করা হয়। ভিটামিন ই, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ আর্গান অয়েলও চুলের আগা ফাটা রোধ করে। শ্যাম্পু করার পর ভিজে চুলে আর্গান অয়েল লাগালে তা বেশি কার্যকর। যাঁরা ঘন ঘন চুলে হিটিং টুলস বা স্টাইলিং পণ্য যেমন মুজ, জেল বা স্প্রে ব্যবহার করেন, তাঁরা যদি এসব পণ্য ব্যবহার করার আগে বা পরে আর্গান অয়েল ব্যবহার করেন, তাহলে চুলের কম ক্ষতি হয়।

কোকোনাট মিল্ক মাস্ক

কিছু পরিমাণ টাটকা নারকেলের দুধ নিয়ে পুরো মাথার তালুতে এবং চুলের ডগায় ভালোভাবে ম্যাসাজ করে শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে মাথা ঢেকে রাখতে হবে। এক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুয়ে নিন।

অ্যাভোকাডো প্রোটিন মাস্ক

একটা অ্যাভোকাডো দিয়ে পেস্ট তৈরি করে,এর সঙ্গে একটা ডিম ফেটিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর এতে এমনভাবে অলিভ অয়েল মেশাতে হবে, যাতে এটি কন্ডিশনারের মতো ঘন হয়। মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে ১০-২০ মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে হবে।