নির্বাচনে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নারীকে হত্যা

নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঠ থেকে সরাতে একটি লাশ ফেলার পরিকল্পনা করেছিলেন হালিম হাওলাদার (৫২)। এজন্য এক হিন্দু নারীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। সেটা সফল না হলে অন্য কোনো নারীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ইউপি নির্বাচনে ইউনিয়নে প্রতিপক্ষ মেম্বারপ্রার্থী বিল্লাল সরদারকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঠ থেকে সরাতে তার এ পরিকল্পনা। ঘটনাটি বাগেরহাটের মোংলা থানার চিলা ইউনিয়নের।

সোমবার দুপুরে ধানমন্ডির পিবিআই সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার এ তথ্য জানান।

তিনি আরো জানান, পরিকল্পনা মোতাবেক ভাড়াটে খুনি জামালকে দিয়ে মাত্র পাঁচ হাজার টাকায় ঢাকার সাভারের বক্তারপুরে ক্ষুদ্র বস্ত্রব্যবসায়ী পারুল বেগমকে (৪৫) হত্যা করান হালিম হাওলাদার। খুনের আগে পারুলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন খুনি জামাল।

শুধু তাই নয়, ক্লুলেস ওই হত্যাকাণ্ডে ভাড়াটে খুনিও জানতেন না কাকে খুন করতে হবে। খুনের শিকার নারীও জানেননি কেন খুন করা হলো তাকে। নিছক নির্বাচনী মাঠের কালো গুটির একটি মাত্র চালে প্রাণ হারান নিরপরাধ পারুল বেগম।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডে সহযোগীসহ জড়িত তিনজন আসামিকে গ্রেফতারের পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সর্বশেষ সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হালিম হাওলাদারকে (৫২) বাগেরহাট জেলার মোংলা থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গে বনজ কুমার মজুমদার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামি হালিম হাওলাদারের বাড়ি বাগেরহাট মোংলার পশ্চিম মচিলা। বাবার নাম হামিদ হাওলাদার। তিনি মোংলা থানার ৬ নং চিলা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী বিল্লাল সরদারকে একটি হত্যাকাণ্ডে ঘটিয়ে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করেন।

এক প্রশ্নের জবাবে বনজ কুমার মজুমদার বলেন, খুনি জানতেন না কাকে খুন করতে হবে। খুনের শিকার নারী জানতেন না কেন তাকে খুন করা হলো। শুধুমাত্র প্রভাব বিস্তার, ইউপি নির্বাচনে জেতার জন্য পারুলকে খুনের শিকার হতে হলো।

তিনি বলেন, এখানে একটা বিষয় খুবই স্পষ্ট। খুনির পরিকল্পনা ছিল এমন একজনকে খুন করা হবে যে হবে নিম্ন আয়ের মানুষ। তাতে খুনের তদন্ত হলে বিল্লাল ফেঁসে যেতে পারে, তবে নিহত নারীর পরিবারের পক্ষ থেকে ‘ঝামেলা’ থাকবে না।

তিনি আরো বলেন, খুনের এ ধরনের মোটিভ খুবই দুঃখজনক। তবে এটা পিবিআই নিশ্চিত করতে চায় যে এ ধরনের খুনের ঘটনায় খুনিদের কোনো পরিকল্পনাই সফল হবে না। যেকোনো উপায়েই হোক না কেন অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।