পাবনায় গ্রাহকদের ৮০ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা আজিজ কো-অপারেটিভ সোসাইটি

পাবনায় গ্রাহকদের ৮০ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা আজিজ কো-অপারেটিভ সোসাইটি

প্রতীকী ছবি

পাবনা প্রতিনিধি: পাবনায় জনগণের কাছ থেকে সুকৌশলে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে পালালো আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড নামে একটি প্রতারক চক্র। চক্রটি  গ্রাহকের প্রায় কোটি টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে গ্রহকরা। কো-অপারেটিভ সোসাইটি আইনে সমবায় অধিদফতর থেকে নিবন্ধন নিয়ে অবৈধভাবে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। এখন কষ্টার্জিত আমানতের টাকা ফেরত না পেয়ে গ্রাহকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি পাবনার চাটমোহর পৌরসভার নতুন বাজার খেয়াঘাট এলাকায় মাসিক ছয় হাজার টাকা ভাড়ায় অফিস নিয়ে জাকজমকভাবে কার্যক্রম শুরু করে । প্রতিষ্ঠানটির চাটমোহর শাখার ব্যবস্থাপক, পাবনা সদর উপজেলার দ্বীপচর গ্রামের মিজানুর রহমান ও অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারী অল্প বিনিয়োগে অধিক মুনাফা প্রদানের লোভ দেখিয়ে শত শত গ্রাহকের নিকট থেকে প্রায় ৮০ লাখ টাকা স্থায়ী আমানত সংগ্রহ করেন।

আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড চাটমোহর শাখার গ্রাহক চাটমোহর নতুন বাজার খেয়াঘাট এলাকার বাসিন্দা মজিদা বেগমের নিকট থেকে ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারী পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে ৬ লাখ ১০ হাজার টাকা মাসিক মুনাফা ডিপোজিটে জমা রাখেন। এভাবে মধ্য শালিখা গ্রামের আতাউর রহমানের আট লাখ টাকা, বালুচর মহল্লার দুলাল সরকারের নিকট থেকে চার লাখ টাকা, নতুন বাজার এলাকার মাজেদা খাতুনের পাঁচ লাখ টাকা, মধ্য শালিখা মহল্লার রোকেয়া খাতুনের নিকট থেকে পাঁচ লাখ টাকা, শাহী মসজিদ এলাকার ইসরাইল হোসেনের এক লাখ টাকা, জগন্নাথপুর গ্রামের সুমাইলের নিকট থেকে পাঁচ লাখ টাকা, বগুড়ার নজিবুর রহমানের নিকট থেকে দুই লাখ টাকাসহ শত শত গ্রাহকের নিকট থেকে প্রায় ৮০ লাখ টাকা আমানত সংগ্রহ করে। এরই এক পর্যায় ২৬ টি শাখার অনুমোদন নিয়ে ১৬০টি শাখার মাধ্যমে বেআইনিভাবে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করার কারণে সমবায় নিবন্ধন অধিদফতর আজিজ কো-অপারেটিভের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এর পরও চাটমোহর শাখার কর্মকর্তা কর্মচারীরা গ্রাহকের আমানত সংগ্রহ অব্যাহত রাখে। আমানতকারীরা বিষয়টি জানতে পেরে আমানতের টাকা ফেরত চাইলে ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান তালবাহানা শুরু করেন এবং পরে তিনি পালিয়ে যান। শত শত আমানতকারী তাদের সঞ্চিত প্রায় ৮০ লাখ টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমানের পাবনার বাড়িতে গিয়ে ধর্ণা দিয়েও কোন সুফল পাচ্ছেন না। এসব গ্রাহকেরা তাদের সঞ্চিত টাকা ফেরত পেতে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি করেছেন। প্রতিষ্ঠানটির চাটমোহর শাখার ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমানের নিকট বিষয়টি জানার জন্য একাধিকবার যোগাযোগের জন্য চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

এ ব্যাপারে পাবনার চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈকত ইসলাম জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। কোন ভূক্তভোগী আমার কাছে আসেননি। ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।