সুদানে অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে বিক্ষোভে নিহত ৩

সুদানে অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে বিক্ষোভে নিহত ৩

সুদানে অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে বিক্ষোভে নিহত ৩

সুদানে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভে সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর আক্রমণে তিনজন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে।

শনিবার রাজধানী খার্তুমের পশ্চিমে নীলনদের অপর তীরে উম্ম দুরমান শহরে বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হামলায় তিন বিক্ষোভকারী নিহত হন।সুদানের সেন্ট্রাল কমিটি ফর সুদানিজ ডক্টরস জানিয়েছে, গণতন্ত্রপন্থীদের বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করলে ওই তিন ব্যক্তি নিহত হন।

গত ২৫ অক্টোবর সুদানের প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ হামদুক ও তার মন্ত্রিসভাবে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে আসছেন সুদানিরা। শনিবার তারা চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে '১০ লাখের বিক্ষোভের' ডাক দেয়।তবে বিক্ষোভে গুলি চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছে সুদানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীরা বলছে, সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর আক্রমণে তিন ব্যক্তি নিহত হওয়া ছাড়াও আরো শতাধিক লোক আহত হয়েছেন।

এদিকে রাজধানী খার্তুমে কয়েক লাখ বিক্ষোভকারী বিভিন্ন ব্যানার ও সুদানি পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এই সময় তারা 'সামরিক শাসন মানি না' ও 'এই দেশ আমাদের ও আমাদের সরকার বেসামরিক' স্লোগান দেয়।অন্যদিকে বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে খার্তুমের প্রধান প্রধান সব সড়ক ও সেতু বন্ধ করে দেয় নিরাপত্তা বাহিনী।

একইভাবে সুদানের বিভিন্ন শহরেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।হাইসাম মোহাম্মদ নামের এক বিক্ষোভকারী বলেছেন, 'জনগণ তাদের বার্তা পৌঁছে দিয়েছে। এ থেকে ফিরে আসা অসম্ভব এবং ক্ষমতা জনগণের।'

এর আগে সুদানের সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্বের অংশীদারমূলক অন্তর্বর্তীকালী সরকার সভরেইন কাউন্সিলের উভয়পক্ষের মতবিরোধের জেরে প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ হামদুকসহ বিপুল বেসামরিক নেতৃত্বকে ২৫ অক্টোবর সামরিক বাহিনী গ্রেফতার করে এবং সামরিক প্রধান জেনারেল আবদুল ফাত্তাহ আল-বুরহান ক্ষমতা দখল করেন।সামরিক বাহিনীর এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সুদানজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভে সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ১৪ জন নিহত ও দুই শ'র বেশি লোক আহত হয়।

অপরদিকে বিশ্বজুড়ে সুদানে সামরিক বাহিনীর নিন্দা জানানো হচ্ছে। অভ্যুত্থানের জেরে যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বব্যাংক দেশটিতে প্রদত্ত সহায়তা স্থগিত করেছে। এছাড়া আফ্রিকান ইউনিয়ন সুদানের সংস্থাটিতে সদস্য পদ স্থগিত করে।এর আগে গত মাসে সুদানে এক সামরিক অভ্যুত্থানের ব্যর্থ চেষ্টা করা হয়।

২০১৯ সালে সুদানের সাধারণ জনতার বিক্ষোভের জের ধরে সামরিক বাহিনী দেশটির দীর্ঘকালীন শাসক ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করে।তখন থেকে সামরিক ও বেসামরিক যৌথ নেতৃত্বের অন্তর্বর্তীকালীন সভরেইন কাউন্সিল সুদানের শাসন পরিচালনা করে আসছিলো। ২০২৩ সালে দেশটির সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে।

সূত্র : আলজাজিরা ও বিবিসি