প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় আরো ৩ জন গ্রেফতার

প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় আরো ৩ জন গ্রেফতার

প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় আরো ৩ জন গ্রেফতার

বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুষ্ঠিত পাঁচটি ব্যাংকের এক হাজার ৫১১টি অফিসার (ক্যাশ) শূন্যপদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় নতুন করে আরো ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- খোকন, সোহেল, জাহিদ। খোকন জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার, সোহেল ইতোমধ্যে জনতা ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুত। জাহিদ পরীক্ষার্থী সংগ্রহে এজেন্টের কাজ করতো। এদের সবাইকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। তদন্ত অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে ডিবি। বৃহস্পতিবার ডিবি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

গতকাল ডিবি সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। জড়িত সরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ পরীক্ষা আয়োজনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আহসানউল্লাহ ইউনির্ভাসিটি অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনলোজির আইসিটি বিভাগ থেকে প্রশ্নফাঁস হয়েছে। এ পর্যন্ত চক্রটি প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র ফাঁসের মাধ্যমে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে ৬০ কোটি টাকা।

বুধবার বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ডিবিপ্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য জানান।

এর আগে গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগের তেজগাঁও জোনাল টিম গত ৬ নভেম্বর থেকে বুধবার (১০ নভেম্বর) পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় জড়িত পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করে। এ বিশেষ অভিযানে গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ওয়াহিদুল ইসলামের নির্দেশনায় তেজগাঁও জোনাল টিমের টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. শাহদাত হোসেনের নেতৃতে অভিযানটি পরিচালিত হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- প্রশ্ন ও উত্তর ফাঁসের মূলহোতা আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যায়ের আইসিটি টেকনিশিয়ান মোক্তারুজ্জামান রয়েল (২৬), জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখার কর্মকর্তা শামসুল হক শ্যামল (৩৪), রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে আলম মিলন (৩০), পূবালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান মিলন (৩৮) ও পরীক্ষার্থী স্বপন।

সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুষ্ঠিত পাঁচটি ব্যাংকের এক হাজার ৫১১টি অফিসার (ক্যাশ) শূন্যপদের নিয়োগ পরীক্ষা গত ৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকে ১৮৩টি, জনতা ব্যাংকে ৫১৬টি, অগ্রণী ব্যাংকে ৫০০টি, রূপালী ব্যাংকে ৫টি এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে ৭টি পদ রয়েছে। বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন কেন্দ্রে এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে প্রশ্নপত্র তৈরি ও পুরো পরীক্ষা সম্পাদনের দায়িত্বে ছিল আহসানউল্লাহ ইউনির্ভার্সিটি অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনলোজি।

দীর্ঘদিন ধরে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসরোধে কাজ করতে থাকা ডিবির তেজগাঁও বিভাগের তেজগাঁও জোনাল টিমের কাছে গত ৫ নভেম্বর রাতে এই পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হবে- এমন তথ্য আসে। এরপর ডিবির টিম ছদ্মবেশে পরীক্ষার্থী সেজে পরীক্ষার দিন (৬ নভেম্বর) সকাল ৭টায় প্রশ্নপত্রসহ উত্তর পাওয়ার জন্য চক্রের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করে। চক্রটিকে অগ্রিম টাকা দেয়া হলে ওই চক্রের অন্যতম হোতা রাইসুল ইসলাম স্বপন (৩৬) পরীক্ষার্থীকে সাথে নিয়ে যান। এরপর পরীক্ষার উত্তরপত্রসহ স্বপনকে হাতেনাতে আটক করা হয়।