সুজানগর উপজেলার ১০ ইউনিয়নের ভোট গ্রহণ শেষ

সুজানগর উপজেলার ১০ ইউনিয়নের ভোট গ্রহণ শেষ

সুজানগর উপজেলার ১০ ইউনিয়নের ভোট গ্রহণ শেষ

ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, গোলাগুলি ও জাল ভোট প্রদান, আটক, কেন্দ্র দখলের মধ্য দিয়ে পাবনার সুজানগর উপজেলার ১০ ইউনিয়নের ভোট গ্রহণ শেষ হয়।এ প্রতিনিধি কয়েকটি ইউনিয়নের ভোট কেন্দ্র পরিদর্শণকালে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা দেখেন এবং স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানতে পারেন।বৃহস্পতিবার  দুপুর ২ টার দিকে সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের কাচুরিয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ককটেল নিক্ষেপের ঘটনায় চরম আতংক ছড়িয়ে পড়ে।  সংঘর্ষে অন্তত: ১০/১২ জন আহত হয়।  এসময় কিছু সময়ের জন্য কেন্দ্র ফাঁকা হয়ে যায় এবয় ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে।

এই কেন্দ্রে উৎসবমুখর পরিবেশে দুপুর ২টার দিকে  নৌকার সমর্থকরা দলবল নিয়ে কেন্দ্র দখল নেয়ার চেষ্টা বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা বাধা দিলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এসময় ভোট কেন্দ্রের বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে পর পর দু’টি ককটেল বোমা নিক্ষেপ করলে লোকজন দিগি¦দিক ছুঁটাছুটি করে। প্রত্যক্ষ দর্শীরা জানান, ককটেল বিস্ফোরণের সাথে সাথে হঠাৎ করে বহিরাগতরা লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে  কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করলে সংঘর্ষে বেধে যায়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত: ১০/১২ জন আহত হয়।আহতদের মধ্যে সাতজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কম্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনার পর কিছু সময় ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকার পর পুনরায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। 

কাচুরি সরকারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আতাউল হক বলেন, সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হচ্ছিল। দুপুরের দিকে ভোটকেন্দ্র দখলের চেষ্টা করলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ পৌঁছুলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

 বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নির্বাচনে দায়িতপ্রাপ্ত নির্বাহী মেজিষ্ট্রেট সবুর আলী ও সুজানগর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই)  ফিরোজ আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,‘কাচুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে সামান্য ঝামেলা হয়েছিল। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বোমা হামলার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’এদিকে  দুপুর ১ টার দিকে উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের হেমরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেচেয়ারম্যান প্রার্থীর নৌকার পক্ষে জালভোট দেয়ার অভিযোগে ফজলুর রহমান( ২৮) ও রাকিবুল ইসলাম নামে দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ।

ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ইসানুর রহমান জানান,‘জালভোট দেয়ার অভিযোগে দু’জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।এছাড়া এ প্রতিনিধি বিভিন্ন ইউনিয়নের নিচিন্তপুর, তারাবাড়ীযা,কুড়িপাড়া, সাতবাড়ীয়া, চরপাড়া, চলনা, গোপালপুর কেন্দ্রসমূহে শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ দেখতে পান।

সাতবাড়ীয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ২,৭৭৮ ভোটারের মধ্যে ১,৮০৮  ভোট অর্থাৎ ৬৫% কাস্ট হয় বলে ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ইডএম শফিউদ্দিন জানান। ১৩ নং তারাবাড়ীয়া কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, দুপুর ২টার দিকে ১,৮১১ ভোটারের মধ্যে ১,২০০ ভোট কাস্ট হয়। এ কেন্দ্রে মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৮৯৬। এখানে ভোট গ্রহণকারীদের অদক্ষতার অভিযোগ পাওয়া যায়। এমনটি সাংবাদিকদের কাছেও মনে হয়েছে। ভোট গ্রহণে ধীর গতি দেখা যায়। আমারা এসময় মহিলা ভোটারদের দীর্ঘ তিন লাইনে মহিলা ভোটারের প্রায় অর্ধেক দেখতৈ পাই। প্রশ্ন করা হয় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব ভোট কাষ্ট না হলে কী করবেন; সেখানে দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসার জাফরুƒল ইসলাম বলেন, যত রাতই হোক গন্ডির মধ্যে প্রবেশকারীদের ভোট গ্রহণ করা হবে।’   

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, সুজানগর উপজেলার ১০ ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্নের লক্ষ্যে ৪ প্লাটুন বিজিবি, ৯০০ পুলিশ ফোস, র‌্যাব, আনসার সদস্য ও সাদাপোশাকে সদস্য মোতায়েন থাকে।পাবনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইষলাম খান জানান, সুজানগর উপজেলার ১০ ইউনিয়নে  মোটমুটি শান্তিপূর্ণ  ভোট গ্রহণ হয়েছে। ফলাফল পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থাকবেন।