দুই বছর অন্তর বিশ্বকাপ আয়োজনের পরিকল্পনায় এখনো অটল ফিফা

দুই বছর অন্তর বিশ্বকাপ আয়োজনের পরিকল্পনায় এখনো অটল ফিফা

ফাইল ছবি

চার বছরের পরিবর্তে প্রতি দুই বছর অন্তর বিশ্বকাপ আয়োজনের বিতর্কিত পরিকল্পনায় এখনো অটল রয়েছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রন সংস্থা ফিফা। সোমবার ফিফা সদস্যভুক্ত ২১১টি ফেডারেশনের সাথে ভার্চুয়ালি আয়োজিত বৈশ্বিক সম্মেলনে ফিফা এই পরিকল্পনার ব্যপারে নিজেদের অবস্থানের পক্ষে মত দিয়েছে। 

এই সম্মেলনে কোন ভোটাভুটি না হলেও ফিফা সভাপতি গিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেছেন ফেডারেশনগুলো নিয়মিত বিশ্বকাপে আগ্রহী নাকি আর্সেন ওয়েঙ্গারের নতুন পরিকল্পনায় আগ্রহী সে ব্যপারে সকলের মতামত চাওয়া হবে। 

উল্লেখ্য আর্সেনালের সাবেক বস আর্সেন ওয়েঙ্গার বর্তমানে ফিফার ডেভেলপমেন্ট কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতি দুই বছর অন্তর বিশ্বকাপের মত সর্বোচ্চ আসর আয়োজনের পরিকল্পনা তারই মস্তিষ্ক প্রসূত। 

সেপ্টেম্বরে ফরাসী পত্রিকা এল’ইকুইপকে ওয়েঙ্গার বলেছিলেন, ‘এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে আগের চেয়ে অনেক বেশী ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে দেশগুলো। এর মাধ্যমে ফুটবলের মান ও প্রতিযোগিতা অনেকাংশেই বৃদ্ধি পাবে। এখানে অর্থের বিষয়টি মোটেই মূখ্য নয়।’

১৯৩০ সাল থেকে বিশ্বকাপ প্রতি চার বছর অন্তর আয়োজিত হয়ে আসছে। ১৯৯১ সাল থেকে নারীদের বিশ্বকাপও এভাবেই আয়োজিত হচ্ছে। 
ইউরোপীয়ান ও দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা উয়েফা ও কনমেবল ইতোমধ্যেই এই পরিকল্পনার বিরোধীতা করেছে। সম্প্রতি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো এক হয়ে এই পরিকল্পনা বাতিলের বিষয়ে মত দিয়েছে। বিশ্বব্যপী খেলোয়াড়দের ইউনিয়ন ফিফপ্রো এই ধরনের পরিকল্পনাকে মোটেই আমলে নেয়নি। 

তবে গত মাসে ৫৪ সদস্যের আফ্রিকান  ফুটবল কনফেডারেশন এই পরিকল্পনার পক্ষে মত দিয়ে জানিয়েছে বিষয়টি আরো পর্যালোচনার প্রয়োজন রয়েছে।

এদিকে আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডারগুলো ২০২৪ সালে নবায়ন করা হবে। আর সেটাকে সামনে রেখে অনেকেই বিভিন্নভাবে ভবিষ্যতের পরিকল্পনাগুলোতে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রতি দুই বছর অন্তর বিশ্বকাপ আয়োজিত হলে তা খেলোয়াড়দের শারিরীক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রচন্ড একটি চাপ পড়বে বলেও অনেকেই মত দিয়েছেন। ফিফপ্রো ইতোমধ্যেই বর্তমানে ব্যস্ত সূচী নিয়ে বারবার শঙ্কা প্রকাশ করে যাচ্ছে। একইসাথে আর্থিক বিষয়টিও এখানে জড়িত। প্রতি বছর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টগুলোতে যদি ক্লাব তাদের খেলোয়াড়দের না ছাড়ে সেক্ষেত্রে বিষয়গুলো আরো জটিল আকার ধারন করবে। 

ওয়েঙ্গারের পরিকল্পনা অনুযায়ী বাছাইপর্বগুলো প্রতি বছর দুটি উইন্ডোতে ভাগ হয়ে অক্টোবর ও মার্চে অনুষ্ঠিত হবে। এর মাধ্যমে ক্লাবগুলো কার্যত লাভবান হবে। এতে করে প্রতি মৌসুমে চার থেকে পাঁচবার খেলোয়াড়দের জাতীয় দলের জন্য ছাড়ার কোন সুযোগ থাকবে না। 

ফিফা অবশ্য দাবী জানিয়েছে এই পরিকল্পনা মূলত ভক্তদের দীর্ঘদিনের দাবী থেকেই আনা হয়েছে। নিজেদের ফেবারিট ক্রীড়া হিসেবে ফুটবলকে মনোনীত করা ৩০ হাজার সমর্থকের উপর পরিচালিত একটি জরিপের ফল সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে ৬৩.৭ শতাং সমর্থক দুই বছর অন্তর বিশ্বকাপ আয়োজনের পক্ষে নিজেদের মত দিয়েছেন। 
আগামী বছর ৩১ মার্চ দোহায় অনুষ্ঠিতব্য ফিফা কংগ্রেসে ২১১ সদস্যের ভোটের উপর এই পরিকল্পনার ভবিষ্যত নির্ভর করছে। 

সূত্র: বাসস